Haridevpur Incident: `আমার স্বামীই মেয়েকে দিয়ে এই চক্রান্ত করিয়েছেন`, হরিদেবপুরকাণ্ডে বয়ান অভিযুক্ত মায়ের
কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস মা ও তাঁর বন্ধুকে গ্রেফতার করলেও, কিছু জায়গায় ধোঁয়াশা ছিল। তাই দীর্ঘক্ষণ তার সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। তারপরই সামনে আসে এই নয়া তথ্য। ইতিমধ্যে নয়া এই তথ্য আদালতে জানাচ্ছে পুলিস। মিথ্যে মামলা দায়ের করায় কিশোরীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হতে পারে।
অয়ন ঘোষাল: হরিদেবপুর কাণ্ডে বড় বয়ান মায়ের। প্রিজন ভ্যান থেকে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি আর আমার স্বামী বিগত ছয় বছর ধরে বিচ্ছিন্ন। স্বামী কুদঘাটে তার মা বাবার সঙ্গে থাকে। মেয়ে মাঝে মাঝে তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে যায়। আমার স্বামীই মেয়েকে দিয়ে এই চক্রান্ত করিয়েছেন। নিজের মেয়ে এরকম করেছে। খারাপ লাগে। বেশি কথা বলার মতো মানসিক অবস্থা আমার নেই। মেয়ে আগেও এই জিনিস করেছে। ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। বুঝিয়েছিলাম। লাভ হয়নি। আমি উকিলের সঙ্গে কথা বলেছি। আর জামিনের আবেদন করব। আমার সঙ্গে অন্য একাধিক পুরুষের সম্পর্কের যে কথা বলা হচ্ছে, তা সর্বৈব মিথ্যা’।
মা নয়, ঘরে আগুন লাগিয়েছিল ১৬ বছরের মেয়েই। মায়ের সঙ্গে বনিবনা ছিল না। ফলে মাকে ফাঁসাতেই ছক কষে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী। প্রথমে মায়ের সিম কার্ড ক্লোন করে। তার মায়ের সঙ্গে কার কথাবার্তা হয় সেই সব বিষয়ে নজর রাখতে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী। এরপরই মায়ের সঙ্গে তার পুলিস বন্ধুর ভুয়ো চ্যাটের টেমপ্লেট তৈরি করে ফেলে সে। প্রেমিক তার মাকে ঘরে আগুন লাগিয়ে মেয়েকে খুন করতে বলছে, এমন ভুয়ো চ্যাট তৈরি করে সেই মেয়ে।
তারপরে সোমবার ভোরবেলায় যখন মা ও দিদা ঘুমাচ্ছিল, সেই সময় মোমবাতি দিয়ে ঘরে আগুন দেয়। তারপর থানায় এসে মাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করে। এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করে যে, তার মা তাকে খুনের জন্য ঘরে আগুন দিয়েছিল।
কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস মা ও তাঁর বন্ধুকে গ্রেফতার করলেও, কিছু জায়গায় ধোঁয়াশা ছিল। তাই দীর্ঘক্ষণ তার সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। তারপরই সামনে আসে এই নয়া তথ্য। ইতিমধ্যে নয়া এই তথ্য আদালতে জানাচ্ছে পুলিস। মিথ্যে মামলা দায়ের করায় কিশোরীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হতে পারে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে তার বাবাকেও। এমনকি এর আগেও একবার পুলিসের কাছে মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল ওই কিশোরী।
আরও পড়ুন: Primary TET: শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউতে 'ভুয়ো সার্টিফিকেট'! কী বললেন পর্ষদ সভাপতি?
প্রসঙ্গত, সোমবার ভোর ৪ টো নাগাদ হরিদেবপুরের ওই ফ্ল্যাটে আগুন লাগে। পুলিস-দমকল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। পুলিসের কাছে এরপরই কিশোরী মেয়ে দাবি করে যে, মায়ের সঙ্গে প্রেমিকের কথোপকথনে শুনতে পেয়েছে সে! বাথরুম থেকে কাউকে ফোন করছিলেন তার মা! মাকে সে ফোনে বলতে শোনে, “ঘরে আগুন লাগলেও মেয়ে বেঁচে গিয়েছে”! এ থেকেই সন্দেহ হয় তার! পরে মায়ের মোবাইল ঘেঁটে দেখে সে! তা দেখেই ওই সে জানতে পারে যে, মা প্রেমিকের কথা মতো তাকে আগুনে পুড়িয়ে খুনের চেষ্টা করছে!