The Great Bengal Cyclone of 1737: ডুবে গিয়েছিল জাহাজ, ধেয়ে এসেছিল বিশাল ঢেউ! কলকাতার প্রথম সাইক্লোন যেন এক বিভীষিকা!
The Great Bengal Cyclone of 1737: তিনশো বছরে অনেকবারই কলকাতা-সহ এই বাংলা ঝড়ের কবলে পড়েছে। কোনও বিপর্যয়ই অবশ্য এই শহরকে পুরোপুরি দমিয়ে দিতে পারেনি। বারবারই ধ্বংসস্তূপ থেকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সে। আমফান তার কিছু করতে পারেনি, সিত্রাংও কি কিছু করতে পারবে?
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এখন সিত্রাং নিয়ে খুব আলোচনা চলছে। ইদানীং ঝড়ের নামকরণ করার বিধি হয়েছে। সেই হিসেবে প্রতিটি ঝড় নিয়েই আগাম চর্চার পরিসর অনেকটা খুলে যায়। সেই চর্চার সূত্রেই কলকাতার প্রথম সাইক্লোন বা উঠে আসছে গ্রেট বেঙ্গল সাইক্লোন ১৭৩৭-এর প্রসঙ্গ। সেই ঝড়ের বিধ্বংসী শক্তি নিয়ে আজও মানুষ কৌতূহলী। এখনও
পর্যন্ত এই ঝড়টিকেই বাংলার নথিভুক্ত প্রথম ভয়াবহ ঝড় বলা যায়!
প্রায় তিনশো বছরের আগের কথা। তখনও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কব্জায় আসেনি ভারত। ১৭৩৭ সালের ১১ অক্টোবর। ভয়ঙ্কর এক সাইক্লোনের পাল্লায় পড়ল বাংলা। বিধ্বস্ত হয়ে গেল কলকাতা। শুধু ঝড় নয়, সেসময়ে ভূমিকম্পেও কেঁপে উঠেছিল বাংলা। 'গ্রেট বেঙ্গল সাইক্লোন' নামে পরিচিত এই ঝড়ের জেরে ভারত মহাসাগরে সুনামিও এসেছিল বলে জানা গিয়েছে। পলাশির যুদ্ধের কুড়ি বছর আগে, সাইক্লোন ও ভূমিকম্পের জোড়া আক্রমণে প্রায় ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল কলকাতা। মারা গিয়েছিলেন অন্ততপক্ষে ৩ লক্ষ মানুষ। জাহাজডুবির ঘটনাও পাওয়া গিয়েছে। ভেঙে পড়েছিল বহু বাড়ি, অট্টালিকা। প্রাকৃতিক বিপর্যের চোটে সেদিন বহু ইটের বাড়িও মাটিতে মিশে গিয়েছিল!
আরও পড়ুন: Sitrang: দীপাবলির আগেই নিম্নচাপ? শেষ পর্যন্ত উপকূলে এসে আছড়ে পড়বে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং!
এই সাইক্লোনের অন্যতম বিবরণ লিখে গিয়েছেন স্যর ফ্রান্সিস রাশেল। ১৭৩৭-এর সেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের রাতে তিনি কলকাতাতেই ছিলেন। তিনি লিখছেন, 'সে রাতে যেন ভয়ানক এক অতিথি এসে উপস্থিত হয়েছিল—ঘনঘন বজ্রপাত, হাওয়ার তাণ্ডব এবং বৃষ্টির তোড়ে মনে হচ্ছিল, যে কোনও মুহূর্তে মাথার উপর ছাদ ভেঙে পড়বে!' পূর্ণেন্দু পত্রীও ওই দিনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বর্ণনা দিয়েছেন তাঁর 'কী করে কলকাতা হল' বইটিতে।
তবে শুধু ১৭৩৭-এর সাইক্লোনই নয়, ১৮৬৪ সালের ক্যালকাটা সাইক্লোনও ভয়ংকর ছিল। ওই বছর অক্টোবরে পূর্ববঙ্গের (অধুনা বাংলাদেশ) দিক থেকে হুগলি নদীর দক্ষিণ অভিমুখে একটি সুপার সাইক্লোন বয়ে গিয়েছিল। এতে এই বঙ্গ (অধুনা পশ্চিমবঙ্গ) তছনছ হয়ে গিয়েছিল। এর জেরে খেজুরি ও হিজলি বন্দরে থাকা জাহাজগুলির বেশিরভাগই বঙ্গোপসাগরে ডুবে গিয়েছিল। খেজুরি সে কালের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হওয়ায় সারা বছর সেখানে জাহাজের আনাগোনা লেগেই থাকত। তথ্য বলছে, খেজুরি থেকে ৮ কিলোমিটার দূরের এক গ্রামে সেসময় একটি লাইট হাউস তৈরি করা হয়েছিল। সে দিন সেখানে প্রায় ১৩ ফুট উঁচু ঢেউ ধেয়ে এসেছিল! প্রায় ৬০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। হাজার হাজার বাড়ি ভেঙে পড়েছিল। হুগলি নদীতে বন্যা-পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।