ওয়েব ডেস্ক : পানশালার আড়ালে দেহ ব্যবসা। পুলিসের জালে নামী বিল্ডার আজমল সিদ্দিকি। অভিযোগ, নিজের পানশালায় কাজ দেওয়ার টোপ দিয়ে মেয়েদের নিয়ে আসে সে। তারপর তাদের নামিয়ে দেয় দেহ ব্যবসায়। আবছা আলোয় মোহিনী মাদকতা। সন্ধ্যা নামার পর পানশালায় মায়া কাটানো কঠিন। সেই সুরাপানের সঙ্গেই দেহব্যবসা। কানাঘুষো অনেকদিন চলছিল। এবার তা প্রকাশ্যে উঠে এল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সামনে পানশালা, আড়ালে দেহব্যবসা!


আজমল সিদ্দিকি। নামী বিল্ডার। বাগুইআটিতে বেওয়াচ নামে পানশালার মালিক। আজমলের পানশালায় পানের অতিরিক্তও কিছু মেলে। বাগুইআটির রসিকদের কাছে এই খবর ছিল। কি আশ্চর্য! তাদের কাছে খবর থাকলেও জানত না পুলিস।


আরও পড়ুন- বাগুইআটি এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাটে মধুচক্রের আসর!


২০১৫-য় কলকাতাজুড়ে বেআইনি পানশালা বিরোধী অভিযানে নামে পুলিস। সেই বছরই আজমল সিদ্দিকির বেওয়াচ পানশালায় অভিযান চালানো হয়। আজমলের পানশালায় অভিযানের খবরে তখনই শোরগোল পরে যায়। তারপর একাধিক পানশালায় অভিযান হলেও, আজমলের নাগাল পাওয়া যায়নি। আজমলের পানশালায় সঙ্গে বহু প্রভাবশালীর যাতায়াতেরও অভিযোগ ওঠে। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় কেষ্টপুরে ভিনরাজ্যের পাঁচ তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিস। তরুণীরা জানায় চাকরির টোপ দিয়ে এনে তাঁদের দেহ ব্যবসায় নামানো হয়। ওই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়, সরাসরি নাম জড়ায় আজমলের। এরপরেই গতকাল রাতে আজমলকে গ্রেফতার করে বাগুইআটি থানার পুলিস। তাকে সাতদিনের পুলিস হেফাজতে পাঠিয়েছে বারাসত আদালত।


পুলিস সূত্রে খবর আজমলের উত্থান অন্ধকার জগত থেকেই। হাওড়ার কুখ্যাত দুষ্কৃতী ছিল সে। পরে নির্মাণ ব্যবসায় নামলে হাওড়া থেকে সরে যায় বাগুইআটিতে। কিন্তু, অন্ধকারের সংসর্গ ছাড়তে পারেনি। পেশার পোশাক, ডান্সিং বারে গান গাওয়া। আসলে যৌন শ্রমিক। ভিআইপি রোড বরাবর পানশালাগুলিতে চুটিয়ে চলছে এই ব্যবসা। এক একজন তরুণীকে ব্যবহার করে মাসে রোজগার প্রায় দেড়লক্ষ টাকা। বাগুইআটি থেকে কৈখালি। ভিআইপি রোড বরাবর এই দৈর্ঘ্যের দু'পাশে ৭০টি পানশালা। যার মধ্যে ৫০টিই ডান্স বার। রেজিস্ট্রেশন অবশ্য সিঙ্গিং বার হিসেবেই। অভিযোগ ছিল। প্রমাণ ছিল না।


২০১৫-য় প্রথম অভিযোগ করেন মুম্বইয়ের এক তরুণী। কাজের নাম করে এনে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। প্রথম অভিযোগ পেয়েই অসাধু ব্যবসা উপড়ে ফেলতে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিধাননগর পুলিস। ২০১৫ সালে কমপক্ষে একশোটি মামলা রুজু করে একের পর এক নারীপাচার চক্র ফাঁস হয়। তবে ডান্সবারের আড়ালে দেহব্যবসা যে শিকড়শুদ্ধ উপড়ে ফেলা যায়নি, তা আজমলের ধরা পড়াতেই দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। কারণ, এই দুষ্টচক্র চলে রীতিমতো শৃঙ্খলার সঙ্গে। দেহ ব্যবসার আড়কাঠির নেটওয়ার্ক ছড়ানো দেশজুড়ে। কাজের টোপ দিয়ে গরিব বাড়ির মেয়েদের ভুলিয়ে আনে আড়কাঠিরা। ডান্সবারে কাজের নাম করে তাদের নামিয়ে দেওয়া হয় দেহ ব্যবসায়। এক একজন তরুণীকে ব্যবহার করে মাসে নব্বই হাজার থেকে দেড়লক্ষ টাকা পর্যন্ত রোজগার। রাজি না হলে জোর পর্যন্ত করা হয়।


কিন্তু, এই বিশাল টাকার যোগান আসছে কোথা থেকে? এখানেই রাজনীতি, অপরাধ জগতের অশুভ আঁতাত।একরাতে নিমেষে উড়ে যায় লক্ষ লক্ষ টাকা। পুলিস বলছে সেই টাকা আসেও অন্ধকার থেকে। যায়ও অন্ধকারেই।