রাজ্যের প্রকল্প নকল করে কেন্দ্র, নাড্ডা সাহেবের হোমওয়ার্ক প্রয়োজন : দোলা সেন
``এবার থেকে প্রতি বছর দুবার করে দুয়ারে সরকার শিবির আয়োজন করা হবে।``
নিজস্ব প্রতিবেদন- মালদা সফরে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। বাংলার কৃষকরা দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। রাজ্যের মানুষ বিজেপিকে ক্ষমতায় আনলে কৃষকদের হাল ফিরবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন নাড্ডা। আর এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির এই কথার পাল্টা দিলেন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেন। তিনি এদিন বলেন, ''রাজ্যের কৃষক যদি বঞ্চিতই থাকে তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার কেন পরপর ছ বার বাংলাকে কৃষি কর্মন পুরস্কার দিল? নাড্ডা সাহেবের হোমওয়ার্কের প্রয়োজন আছে। কৃষকদের ক্ষেত্রে যে সব সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার সেগুলো নকল করেছে।''
ইউনিসেফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্ক রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার প্রকল্পের প্রশংসা করেছে। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে এসে এমনই দাবি করলেন দোলা সেন (Dola Sen)। এদিন তিনি বললেন, ''ভোটের সঙ্গে দুয়ারে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। বিরোধীরা বলছে, ভোট আসছে বলেই নাকি রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের জন্য দুয়ারে সরকার প্রকল্প ঘোষণা করেছে। কিন্তু তাদের উদ্দেশে বলে রাখি, এবার থেকে প্রতি বছর দুবার করে দুয়ারে সরকার শিবির আয়োজন করা হবে। অর্থাত্ দুবার করে মানুষ নিজেদের সমস্যার কথা সরকারকে জানাতে পারবেন এবং সহায়তা পাবেন। দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প হবে দুটি ধাপে। অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম ধাপ। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় ধাপ। মার্চ, এপ্রিল নাগাদ মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা থাকে। আবার বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সব দুর্গা পুজো, কালি পুজো থাকে অক্টোবর, নভেম্বরে। তাই প্রথম ধাপ অগাস্টে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। দ্বিতীয় ধাপ হবে ডিসেম্বরে। ভোটের সঙ্গে দুয়ারে সরকারকে জড়াবেন না।''
স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে। এদিন এমনই দাবি করলেন দোলা সেন। তিনি বলেন, ''রাজ্যের দুই-আড়াই কোটি নাম নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতি তিন বছরে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড রিনিউ করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। এখানেও বিরোধীরা প্রশ্ন করছে, এত লোকের পরিষেবা হবে কী করে! টাকা আসবে কোথা থেকে! আমরা জানাচ্ছি, মুখ্যমন্ত্রী যে বাজেট ঘোষণা করেছেন তাতে আগামী অর্থবর্ষে দেড় হাজার কোটি টাকা আমাদের সরকার স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ করেছে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের পরিষেবা রাজ্যের মানুষ রাজ্যের বাইরে চিকিত্সা করতে গেলেও পাবেন।''
আরও পড়ুন- Soumitra-র বাইক মিছিলে কালো পতাকা; মুখোমুখি TMC-BJP, চরম উত্তেজনা কোন্নগরে
এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের তুলোধনা করেন দোলা সেন। তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৯-এ এসে মোদী সরকার দেশ বিক্রির জন্য নাম কিনেছে। রেল, সেল থেকে বিএসএনএল বেচে দিচ্ছে এই সরকার। অস্ত্র কারখানায় ৭৪ শতাংশ বেসরকারিকরণ হয়েছে। অস্ত্র দেশের কি সেক্টর। দেশের সুরক্ষার প্রসঙ্গ জড়িয়ে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ছাড়া কারও জানার কথা নয় অস্ত্র কারখানা সম্পর্কে। সেখানে এই সরকার দেশের সুরক্ষা তুলে দিচ্ছেন বেসরকারি সংস্থার হাতে। ইতিমধ্যে ২৩টি রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থাকে বিক্রি করার পরিকল্পনা চলছে । মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন রুগ্ন বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, ব্রেথওয়েট, ডানলপকে বাঁচানোর জন্য তিনি রেল দফতর থেকে বরাত দিয়েছিলেন। তত্কালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রণব মুখার্জিকে অনুরোধ করেছিলেনন। ডানলপ টায়ারের অর্ডার পেয়েছিল। আর এই সরকার রুগ্ন সংস্থাকে বাঁচানো তো দূরে থাক, লাভজনক সংস্থাকেও বিক্রির জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।