আশা করি যাদবপুরের উপাচার্য, পড়ুয়াদের প্রতি সুবিচার করবেন রাজ্যপাল: তৃণমূল
উপাচার্য, অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের রাজ্যপাল সুবিচার পাইয়ে দেবেন বলে প্রত্যাশা করি, বিবৃতি দিয়ে জানাল তৃণমূল।
নিজস্ব প্রতিবেদন: নিজেদের অবস্থানেই অনড় রয়েছে তৃণমূল। রাজভবনের বিবৃতির পর আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে,''যাদবপুর নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান বদল হয়নি। উপাচার্য, অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের রাজ্যপাল সুবিচার পাইয়ে দেবেন বলে প্রত্যাশা করি।''
বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আটক বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করেন রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপালের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ ভালো চোখে দেখেনি তৃণমূল। তারা জানায়, তাঁকে ক্যাম্পাসে না যাওয়ার অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারকে একটু সময় দিতে আর্জি জানান। কিন্তু, রাজ্যপাল কোনও কথা না শুনে বিজেপি নেতাকে সাহায্য করতে পৌঁছে যান।
তৃণমূলের বক্তব্য খণ্ডন করে শুক্রবার সকালে রাজভবন থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, তিনি যেমন একদিকে রাজ্যপাল, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান, তেমনই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যও। আর আচার্য হওয়ার সুবাদে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক। অভিভাবক হিসেবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেছিলেন আচার্য ধনখড়। ক্যাম্পাসে যাওয়ার আগে মুখ্যসচিব, ডিজিপিকে ফোন করেন রাজ্যপাল। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরেও সমস্যা মেটেনি। মুখ্যমন্ত্রীকেও ফোন করেন আচার্য ধনখড়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। এদিকে সেইসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য কেউই উপস্থিত ছিলেন না। অসুস্থ হয়ে তাঁরা তখন হাসপাতালে। তাই পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের বাইরে না চলে যায়, ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক হিসেবে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয় রাজ্যপালকে।
তৃণমূলের গতকালের অবস্থানেই অনড়। তারা জানিয়েছে, ''আমাদের অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। রাজ্যপালের সাংবিধানিক পদকে আমরা সম্মান করে এসেছি। আমরা আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপক, পড়ুয়াদের সুবিচারের ব্যবস্থা করা উচিত রাজ্যপালের। শিক্ষক ও ছাত্রদের পাশে রয়েছি আমরা।''
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। তৃণমূলের জবাব, সমস্যার সমাধানে প্রশাসন সদর্থক ভূমিকা নিয়েছে। ছাত্রদের যারা মেরেছে ও ভাঙচুর করেছে, তাদের শাস্তি হবে। উপাচার্যের সুস্থতা কামনা করি। যাদবপুর একটি স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্যের অনুমতি ছাড়া পুলিস ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারে না।
বলে রাখি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার এবিভিপির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। তিনি ক্যাম্পাসে ঢুকতেই চড়াও হয় ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। কোনওক্রমে অনুষ্ঠান করেন বাবুল। এরপর বাইরে আসার সময় তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পড়ুয়ারা। বাবুলের অভিযোগ, তাঁর চুল ধরে টানা হয়েছে। মারা হয়েছে কিল। বাবুলের নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে পাল্টা মারধরের অভিযোগ করেন ছাত্রছাত্রীরা। দীর্ঘক্ষণ আটক বাবুলকে হাত ধরে বের করে আনেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীপ ধনখড়। তবে আচার্যের গাড়িও পড়েছিল বিক্ষোভের মুখে। পুলিসের তত্পরতায় ঘণ্টাখানেক আটক থাকার বেরিয়ে আসে কনভয়।
আরও পড়ুন- বাংলায় এনআরসি হবে না, তবে ভোটার তালিকায় নামটা তুলে রাখুন: মমতা