সৌমিত্র সেন


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কলকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে। একদা ব্রিটিশদের শহর এই কলকাতা মায়াময় এক জায়গা। কিছুটা বিষণ্ণ, জবুথবু এই নগর ভগ্নপ্রায় বাড়ি ও মলিন রাস্তাঘাটে ভরা। এই শহরে ঐতিহ্যের গভীর প্রবাহ বহমান। ভারতের নবজাগরণের কেন্দ্র এই কলকাতা। রামমোহন রায় থেকে সত্যজিৎ রায়-- বঙ্গমনীষার সৃষ্টিশীলতার এক বিশ্বস্ত আধার যেন এই মহানগর।


পায়ে পায়ে ঘুরে নেওয়া যায় এই শহর। কিংবা কিছুটা হেঁটে, কিছুটা পরিবহণেও। সব চেয়ে ভালো হয় সম্ভবত ট্রামে ঘুরলে। ট্রাম কলকাতার এক ঐতিহ্যবাহী পরিবহণ। এই শহর-ভ্রমণের অন্যতম অঙ্গও। ফলে ট্রামে শহর ঘুরলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা গেল।   


  


কোথায় কোথায় যাবেন?  


আপনি শহরকে প্রথমে ভাগ করে নিতে পারেন। উত্তর, দক্ষিণ, মধ্য-- এই ভাবে। উত্তর কলকাতা মহাত্মা গান্ধী রোড পর্যন্ত। তার পর মধ্য কলকাতা। উত্তর ও মধ্য একই দিনে ঘুরে নেওয়া সম্ভব। দক্ষিণের জন্য আলাদা দিন রাখতে পারেন। আবার একই দিনে উত্তর-দক্ষিণও ঘুরে নিতে পারেন। তবে যা-ই করুন না কেন, একটু বেছে বেছে ঘোরাই ভাল। যেখানে সচরাচর সকলে ভিড় করে না, কম যান, বা শহর ঘোরার কথা মনে করলে কখনোই ওই জায়গাগুলির কথা ভাবেন না, আপনি বেছে বেছে সেই জায়গাগুলিই যান। 


ধরুন, আপনি উত্তর দিয়েই শুরু করলেন। তা হলে শুরু করুন একেবারে গঙ্গাতীর দিয়ে। আলাদা করে গঙ্গাতীর খুব কম মানুষই ঘোরেন। বাগবাজার থেকে একেবারে হাওড়া ব্রিজ পর্যন্ত স্রেফ হেঁটে ঘুরলে শহরটা অন্য ভাবে ধরা দেবে আপনার চোখে। প্রত্যেকটি প্রাচীন ঘাটের আলাদা আলাদা আমেজ। কুমোরটুলি বা আহিরীটোলা ঘাটে ইতিহাস যেন কথা বলে।


বাগবাজারে মা সারদামণির শেষজীবন কেটেছে। বাগবাজারে দিন কাটিয়েছেন নিবেদিতাও। অনায়াসে এই দুটি তীর্থ ঘুরে নেওয়া যায়। তারপর আপনি ঘুরে নিতে পারেন কুমোরটুলির পোটোপাড়া। চিৎপুরের রাস্তাটি শহরের প্রাচীনতম রাস্তা। এটি ধরে অনায়াসে লালবাজার পর্যন্ত চলে যান। দেখে নিন যাত্রাপাড়া, কলুটোলার মতো ঐতিহ্যবাহী এলাকা। উত্তরেই ঘুরে নিতে পারেন মার্বেল প্যালেস। জোড়াসাঁকোয় ঠাকুরবাড়ি তো সকলেই যান আপনি বরং ১৮৩৫ সালে রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক বাহাদুরের নির্মিত এই বাড়িটিতে যান। এটি এ শহরের এক বিশেষ দ্রষ্টব্য। 


উত্তর ছেড়ে এবার ঘুরে নিতে পারেন মধ্য কলকাতা। এখানে সব চেয়ে আগে দেখে নিন কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়া। এ এক অসাধারণ জায়গা। কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়া ছাড়া রয়েছে কফি হাউস। এ-ও নস্টালজিয়ায় ভরা এক জায়গা। যেতে পারেন মহাবোধি সোসাইটি। এখানেও খুব মানুষই যান। ডালহৌসির লালদিঘি বা এই চত্বরের প্রাচীন স্থাপত্যপূর্ণ ভবনগুলি ঘুরে নিতে পারেন। এখানে সেরে নিতে পারেন সামান্য খাওয়া-দাওয়াও। যেতে পারেন সেন্ট জন্স চার্চ।


আর এভাবে শহর ঘুরে বেরিয়ে আপনি যেখানে যেখানে সম্ভব সেখানে ট্রামে চেপে পড়ুন! ট্রাম তো নিছক পরিবহণ নয়, এটা কলকাতাবাসীর কাছে একটা আবেগ। ফলে সেই আবেগটাকে স্পর্শ করুন।



কোথায় থাকবেন? 


হাওড়া ও শিয়ালদায় প্রচুর হোটেল আছে। নানা রকম গ্রেডের, নানা মূল্যের। শহর ঘোরার দিক থেকে অবশ্য হাওড়ার চেয়ে শিয়ালদায় ঘর নেওয়াই ভালো হবে। ঘর মেলে কলেজ স্ট্রিটেও। এছাড়াও নিউ মার্কেট, মির্জা গালিব স্ট্রিটে নানা ধরনের হোটেল। মোটামুটি ১৪০০ টাকায় থ্রি বেড রুম পর্যন্ত মিলতে পারে এসব জায়গায়।


কী খাবেন?


কলকাতায় খাওয়ার অজস্র 'অপশন'। এখানে রয়্যালের মতো ঐতিহ্যবাহী বিরিয়ানি যেমন মেলে, তেমন আবার তুলনায় ট্রেন্ডি জয়সলমীরের বিরিয়ানিও মেলে। মোগলাই খানা বাদ দিলে চাইনিজের নানা বৈচিত্র এখানে। চায়না টাউনের চিনা খাবার তো আছেই। এ ছাড়াও শহরে ছোট বড় নানা চিনা রেস্তোরাঁ আছে। আর যদি এসব না খেয়ে স্রেফ স্ট্রিট ফুড খেয়ে কাটিয়ে দিতে চান? তা-ও প্রচুর। স্ট্রিট ফুডের রাজ্য হল ডালহৌসি চত্বর, নিজাম প্যালেস চত্বর। শিয়ালদহ অঞ্চলেও খাবারের প্রচুর বৈচিত্র। 


(Zee 24 Ghanta App: দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)


আরও পড়ুন: #ভ্রমণ: কখনও পথ হারিয়েছেন শ্রীরামপুরের মুররাবুরুর শালজঙ্গলে?