Shootout at Naraynpur: ১৩ রাউন্ড গুলিতে ঝাঁঝরা প্যারোলে মুক্ত আসামী, তদন্তের শুরুতেই জালে ২ পূর্ব পরিচিত
লেকটাউনের পর রাজারহাটের নারায়ণপুর। পাঁচ দিনের ব্যবধানে শহর কলকাতার বুকে হয়েছিল ফের শুট আউট!একেবারে বলিউডের অন্ধকার জগতের সিনেমার কায়দায় ভরসন্ধেয় নিউটাউনের নারায়ণপুরে ফায়ার ব্রিগেড মোড়ে চলেছিল গুলি।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্যারোলে মুক্তি পাওয়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী দেবজ্যোতি ঘোষকে ১৩ রাউন্ড গুলি করে খুনের ঘটনায়, বড় সাফল্য পেল বিধাননগর পুলিস। শুক্রবার অর্থাৎ ২২ জুলাইয়ের দুপুর পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করেছে নারায়ণপুর থানার পুলিস। ধৃত সুজয় দাস, নারায়ণপুরের বাসিন্দা। অপর ধৃত বিক্রম মাহাতো, ইছাপুরের নোয়াপাড়ার বাসিন্দা। পুলিসের জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা স্বীকার খুনের কথা স্বীকার করেছে। শনিবার অর্থাৎ ২২ জুলাই, ধৃত দুই ব্যক্তিকে ব্যারাকপুর কোর্টে তোলা হবে।
লেকটাউনের পর রাজারহাটের নারায়ণপুর। পাঁচ দিনের ব্যবধানে শহর কলকাতার বুকে হয়েছিল ফের শুট আউট!একেবারে বলিউডের অন্ধকার জগতের সিনেমার কায়দায় ভরসন্ধেয় নিউটাউনের নারায়ণপুরে ফায়ার ব্রিগেড মোড়ে চলেছিল গুলি। ১৩ রাউন্ড গুলিতে একেবারে ঝাঁঝরা হয়ে যায় দেবজ্যোতি। দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত দেবজ্যোতির বাড়িতে স্ত্রী ও একটি চারদিনের বাচ্চা আছে।
তদন্তকারীদের দাবি, ধৃত দু’জনেই নিহতের পূর্বপরিচিত। খুন হওয়া সেই ব্যক্তির সঙ্গে অভিযুক্তদের প্রায় ১০-১২ বছর ধরে আলাপ। ঘটনার পর বাজেয়াপ্ত হওয়া গাড়ি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফরেনসিক আধিকারিকরা। নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। ঘটনার পর রাতেই দেবজ্যোতির গাড়ির চালক শুভ দে-কে আটক করেছিল পুলিস। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে অবশেষে শুক্রবার দুপুরে সুজয় দাস ও বিক্রম মাহাতো দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিসের জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা স্বীকার করে খুনের কথা।
আরও পড়ুন: TMC Shahid Diwas: একুশের সমাবেশের শেষ লগ্নে হাজির মুকুল রায়, কী বললেন পুত্র শুভ্রাংশু
বিধাননগরের ডিসি (নিউটাউন জোন) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, "বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২০ জুলাই, সন্ধে ৭:৩০ মিনিট নাগাদ নারায়ণপুর থানার অদূরে সিআইএসএফ এবং দমকলের ট্রেনিং ক্যাম্পের কাছে শুটআউটের ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নারায়ণপুরের বাসিন্দা দেবজ্যোতি ঘোষকে উদ্ধার করা হয়। তাকে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ততক্ষণে মৃত্যু হয় দেবজ্যোতির।" তিনি ফের যোগ করেছেন, "মৃত দেবজ্যোতি হাওড়া জেলে ছিল। ১৫ দিনের জন্য প্যারোলে বাড়ি ফিরেছিল সে। নিয়মমাফিক বৃহস্পতিবার সন্ধেয় থানাতে হাজিরা দিতে গিয়েছিল। থানা থেকে নিজের চারচাকা গাড়িতে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় দু’টি বাইকে করে চারজন দুষ্কৃতী আসে। তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সেই সময় দেবজ্যোতি ঘোষের গাড়িতে ছিলেন চালক শুভ দে।"
জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পারে এই সুজয় এক সময় দেবজ্যোতির ঘনিষ্ট ছিল। বিভিন্ন অসামাজিক কাজের টাকা নিয়ে ঝামেলার কারণে আলাদা হয়ে যায়। তীব্র ক্ষোভ ছিল দেবজ্যোতির ওপর। দীর্ঘদিন ধরে খুন করার ছক করছিল। নির্জন জায়গা খুঁজছিল। সেই মতো তারা দেবজ্যোতির ওপর নজর রাখতে শুরু করে। তারা জানতে পারে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে বেলায় নারায়ণপুর থানায় হাজিরা দিতে যাবে। এবং থানার কাছেই একটি নির্জন অন্ধকার জায়গা রয়েছে। সেই মত সেখানে গাড়ি পৌঁছতেই গাড়ি আটকায় সুজয়, বিক্রম ও সঙ্গে থাকা আরও দুজন। গাড়ি দাড়াতেই এলোপাথারি ১৩ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। এরপর দেবজ্যোতিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সূত্রের খবর গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস সুজয়ের নাম জানতে পারে। এরপরই নারায়ণপুর থানা এলাকা থেকে সুজয় ও বিক্রমকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি দুজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। দেবজ্যোতির গাড়িচালক শুভ দে আদৌ এই ঘটনায় যুক্ত কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।