উলুবেড়িয়ার শুভ্রনীলের নেশায় ভাসলেন করোনা আক্রান্ত নিঃসঙ্গ বিগ বি! লিখলেন... ‘অদ্ভূত, অদ্ভূত, অদ্ভূত’
খ্যাতি, নাম, যশ আর সব থেকে বড় কথা ভালোবাসা, নিজের স্বত্ত্বাকে শিল্পের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখা- প্রত্যেক শিল্পীরই স্বাদ এটা। স্বাদ স্বপ্নকে ছোঁয়ার। কিন্তু উলুবেড়িয়ার সতেরো বছরের শুভ্রনীল সরকারের স্বপ্নটা হঠাত্ করে যেন কোনও জিয়ন কাঠির ছোঁয়ার সত্যি হয়ে বাস্তবের মুখোমুখি!শুভ্রনীলের স্বপ্ন একটা বাদ্যযন্ত্রকে নিয়ে, তাকে নিয়েই দিনরাত কাটিয়ে দিতে পারে সে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: খ্যাতি, নাম, যশ আর সব থেকে বড় কথা ভালোবাসা, নিজের স্বত্ত্বাকে শিল্পের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখা- প্রত্যেক শিল্পীরই স্বাদ এটা। স্বাদ স্বপ্নকে ছোঁয়ার। কিন্তু উলুবেড়িয়ার সতেরো বছরের শুভ্রনীল সরকারের স্বপ্নটা হঠাত্ করে যেন কোনও জিয়ন কাঠির ছোঁয়ার সত্যি হয়ে বাস্তবের মুখোমুখি!শুভ্রনীলের স্বপ্ন একটা বাদ্যযন্ত্রকে নিয়ে, তাকে নিয়েই দিনরাত কাটিয়ে দিতে পারে সে।
আর তার একাগ্রতা বারবারই ফুটে উঠেছে কাজে! তবে এইভাবে যে করোনা আক্রান্ত হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা ‘নিঃসঙ্গ’ বিগ বি-র এক্কেবারে মনের কোণায় পৌঁছবে, তা কখনই ভাবেনি শুভ্রনীল। ভাববেও বা কী করে! তা যেন কুটিরে থেকে চাঁদ ছোঁয়ার স্বপ্ন! কিন্তু এটাই সত্যি হয়েছে শুভ্রনীলের জীবনে।
গল্পের মতো করে বিষয়টা খোলসা করা যাক। উলুবেড়িয়া নতিবপুরের বাসিন্দা সুবীর সরকারের এক মাত্র ছেলে সতেরো বছরের শুভ্রনীলের মাউথ অর্গানের হাতেখড়ি হয়েছিল বছর পাঁচেক বয়স থেকেই। ভালোবাসা তার অন্তর থেকেই ছিল। আসক্তি বাড়তে থাকে অধ্যাবসায়ের সঙ্গে। ধীরে ধীরে মাউথ অর্গান হয়ে ওঠে শুভ্রনীলের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বেড়ে উঠতে থাকে শুভ্রনীল, আর মনের মধ্যে সযত্নে বাড়িয়ে তোলে নিজের নেশাকেও।
ছোটোবেলায় বিভিন্ন স্টেজ শো, পাড়ার অনুষ্ঠান- মন জয়, প্রশংসা, হাততালির ঝড় শুভ্রনীলের নেশাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে যায় ছোট্ট এই বাদ্যযন্ত্রের প্রতি ভালোবাসা। অফার পায় সিনেমায়। মালয়ালম একটি সিনেমায় ব্যাকগ্রাউন্ডে মাউথ অর্গান বাজায় সে।
তবে এইভাবে যে তার স্বপ্ন সত্যি হবে, ভাবেনি কখনই। বছর খানেক আগে ইউটিউবে পোস্ট করা একটি ক্লাসিক্যাল রাগ কীভাবে এতদিন পর বিগ বি-র মন ছুঁয়ে যাবে, তা ভাবেওনি কখনও। হঠাত্ তাই হল। করোনা আক্রান্ত বিগ বি এখন সময় কাটাচ্ছেন নিজের সঙ্গে। আর কীভাবে তা বোঝাই গেল টুইটারে একটি পোস্ট দেখে।
উলুবেড়িয়ার এই ছেলের বাজানো রাগ বারবার শুনেছেন তিনি। মুগ্ধ হয়েছেন আর শেয়ার করেছেন নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে। লিখেছেন একই শব্দ তিনবার... “অদ্ভূত, অদ্ভূত, অদ্ভূত...”
কতটা মুগ্ধ, আপ্লুত তিনি- তা বলে বোঝানোর দরকার নেই। সোমবার রাত সাড়ে নটায় বিগ বি এই টুইটটি করেছিলেন আর মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই তা দেখতে পায় শুভ্রনীল। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বাস হয়নি প্রথমে, চোখ কচলে নিয়ে ভালো করে বিষয়টি দেখার পর ছুটে যায় বাবা-মার কাছে। প্রশংসা এর আগেও পেয়েছে সে, তবে এবার.... শুভ্রনীলের মুখ থেকে এক্কেবারে বেরিয়েই গেল মনের কথা, “ভালো লাগছে, সত্যি বলতে গর্ব হচ্ছে। এত বড় একজন ব্যক্তিত্বের মন জয় করেছি।” ছেলে আরও বড় হোক, এটা চান বাবা-মা।