ভোটের ফল সাতদিন আগে বের হয়েছে। নির্বাচনে বড় জয় তুলে নিয়ে আগামিকালই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের জন্য শপথ নিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন দেখে নেওয়া যাক রাজ্যে ভোটের ফল নিয়ে জেনে রাখার মত দশটা জিনিস--


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


১) আসনসংখ্যার হিসেব--মোট ২৯৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতল ২১১টিতে, কংগ্রেস জিতল ৪৪টিতে, সিপিএম জিতল ২৬টিতে, বিজেপি জিতল ৩টি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ৩টি, আরএসপি ৩টি,ফরওয়ার্ড ব্লক ২টি, সিপিআই ১টি আসনে। তৃণমূল পেল ৪৫ শতাংশ, সিপিএম ১৯.৭, কংগ্রেস ১২.৩, বিজেপি ১০.২ শতাংশ ভোট। তৃণমূল পেল ২ কোটি ৪৫ লক্ষ ৬৪ হাজার ভোট। সেখানে সিপিএম পেল ১ কোটি ৮ লক্ষ ভোট। কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ৬৭ লক্ষ ও বিজেপি সাড়ে ৫৫ লক্ষ ভোট। এর আগে কেউ কখনও একা লড়ে ২১১টি আসন পাননি পশ্চিমবঙ্গে। বামফ্রন্ট ১১টি দল মিলে ২৩৩টি পেয়েছিল, একা নয়। বিধান চন্দ্র রায় পেয়েছিলেন ২০৪টি আসন।


২) আট মন্ত্রীর হার--হেরে গেলেন রাজ্যের আট মন্ত্রী। রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২১১ টিতে জিতলেও মন্ত্রীদের হারে হতাশ তৃণমূল। উত্তরবঙ্গের চার এবং দক্ষিণবঙ্গের চার বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যকে হারের মুখ দেখতে হয়েছে। হারলেন আব্দুল করিম চৌধুরী, মণীশ গুপ্ত, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সাবিত্রী মিত্র, কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী,শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, উপেন বিশ্বাস।


৩) জেলাভিত্তিক হিসেব--মুর্শিদাবাদ বাদে দক্ষিণ বঙ্গের সব জেলাতেই তৃণমূলের নিরঙ্কুশ প্রাধান্য। উত্তরবঙ্গেও শাসদক দলের ভাল ফল। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে ২১টি আসনের মধ্যে ১৮টিতেই জিতেছে তৃণমূল। তবে এত ভাল ফলের মাঝেও মালদা, দার্জিলিংয়ে কোনও আসন জিততে পারেনি তৃণমূল। জোটের বিপর্যয় প্রায় সর্বত্র। বামফ্রন্ট ৬টি ও কংগ্রেস ৫টি জেলাতে পুরো খালি হাতে ফিরেছে।


৪) তারকারা কেউ জিতলেন, কেউ হারলেন-- ইন্দ্রনীল সেন জিতলেন, কিন্তু বড়জোড়া থেকে হারলেন সোহম। আবার বিজেপির লকেট চ্যাটার্জি, জয় ব্যানার্জিরা বীরভূম থেকে হারলেন, কিন্তু তৃণমূলের চিরঞ্জিত্‍ চক্রবর্তী জিতলেন বারাসত থেকে। খেলার জগতের লক্ষ্মী ছেলে জিতলেন হাওড়া থেকে, তবে পান্ডুয়া থেকে হারলেন ফুটবল তারকা রহিম নবি।


৫) বিজেপি-র শক্তিবৃদ্ধি--২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে খালি হাত ছিল। উপনির্বাচনে জিতে হয়েছিল ১। সেখান থেকে বিজেপি গেল ৩। বিজেপি জিতল খড়গপুর সদর, মাদারিহাট,মালদার বৈষ্ণবনগর কেন্দ্রে।


৬) শুধু সিপিএম নয় বামেদের হালও খারাপ--শুধু সিপিএম নয় বামফ্রন্টের অন্যান্য দলগুলির অবস্থাও খুব খারাপ। আরএসপি জিতল মাত্র ৩টিতে, ফব ২টি,আর সিপিআই ১টিতে।


৭) কট্টর তৃণমূল বিরোধীদের অবস্থা--অরুনাভ ঘোষ, আব্দুল মান্নান, শঙ্কর সিং, সোমেন মিত্র। কংগ্রেসের এই চার প্রার্থী ছিলেন তৃণমূল বিরোধিতার প্রধান মুখ। শেষ অবধি চাঁপদানি থেকে জিতলেন আব্দুল মান্নান। রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম থেকে জয়ী শঙ্কর সিং। তবে হারতে হল সোমেন মিত্র, অরুনাভ ঘোষকে।


৮) সবচেয়ে বেশী ভোটে জয়--সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় ডোমজুড় থেকে রাজীব ব্যানার্জি। ডোমজুড়ের তৃণমূল প্রার্থী রাজীব ব্যানার্জি এবার ১০৭৬৬৬ ভোটে জয়ী হয়েছেন। রাজীবের প্রাপ্ত ভোট ১৪৮৫৭৯। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট সমর্থিত ‘‌আক্রান্ত আমরা’‌র প্রতিমা দত্ত পেয়েছেন ৪০৯১৩ ভোট।


৯) অবাক হার যাদের--কিছুটা অপ্রত্যাশিত বলা চলে এদের হারকে। এই যেমন শান্তিপুরের তৃণমূল প্রার্থী অজয় দে। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে এসে উপনির্বাচনে বড় জয় পেয়েছিলেন অজয়। ওনাকে হারানো যায় না এমন একটা কথাও এলাকায় চালু হয়ে গিয়েছিল। শেষ অবধি অজয়কে হারালেন জোটের কংগ্রেস প্রার্থী অরিন্দম ভট্টাচার্য। অনেকে বলছেন, রায়দিঘিতে কান্তি গাঙ্গুলির হারটাও কিছুটা নাকি অপ্রত্যাশিত। খড়গপুরে চাচার হারটাও নাকি চমক । অবশ্য ভোটের ফলে হারের পর অপ্রত্যাশিত কথাটা খাটে কি না সেটাও বিতর্কের।


১০) বেশ কয়েকটি আসনেই পোস্টাল ব্যালটে হার শাসকের--গোটা রাজ্যে দারুণ জয় পেলেও একের পর এক আসনে পোস্টাল ব্যালটে হারতে হয়েছে তৃণমূলকে।