ওয়েব ডেস্ক: বাংলার মসনদে কে? ৫ বছরের জন্য রাজ্যপাঠ চালাবে কোন দল, আর নেতাদের নেতা হবেন কে? ফল ১৯ মে।  এটা কোনও তত্ত্ব নয় বরং ধ্রুব সত্য, যার জন্য প্রয়োজন হয় না কোনও যুক্তিরও, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে বাংলার রায় গেলে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে রাজ্যের পালাবদলের পর বিধানসভা ভোটে না লড়েই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে ভাবানীপুর কেন্দ্র থেকে উপ-নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়ে বিধানসভার সদস্য হন তিনি। এবারও ভবানীপুরের প্রার্থী তিনিই। লোকসভা ভোটে বিজেপির কাছে পিছিয়ে থাকলেও ভবানীপুরে জয়ী হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই, এমনটা মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিরোধীদের দাবি, কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের মিলিত প্রচেষ্টায় মমতাগড়েই তরী ডুবতে পারে তৃণমূলের। বিজেপির ভোট কাটাকুটিতে জয়ী হতে পারেন কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাসমুন্সি, মত একাংশের। তবে বাস্তবে এমনটা হওয়াটা 'নেক্সট টু ইমপসিবল', নজর থাকবে এই কেন্দ্রে। ১৯ মে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল জিতলে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


এবার আসা যাক, কিছু 'আনকমন ফ্যাক্টর'গুলোতে। তৃণমূলের পক্ষে রায় না গেলে কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী? এক্ষেত্রে রাজনৈতিক হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে তিনটি নাম।


প্রথম জন সূর্যকান্ত মিশ্র। পেশায় রাজনীতিবিদ হলেও তিনি আসলে নারায়ণগড়ের ডাক্তারবাবু। বামফ্রন্ট আমলে একসময় স্বাস্থ্য দফতরের মন্ত্রীত্ব সামলেছেন তিনিই। অভিজ্ঞতা আছে, পঞ্চায়েতেও। বামফ্রন্ট সরকারের পঞ্চায়েত মন্ত্রকের দায়িত্বও ছিল তাঁর কাঁধেই। এখন দলের পলিটবুরো। সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। জোটের অন্যতম মুখ তিনিই। গোটা রাজ্য চষে ঘুরেছেন 'লাট্টুর' মত। হাতের তালুর মত চেনেন গোটা রাজ্যকে। বিপদের সময়ে দলকে সংগঠিত করতেও অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। এই সব পয়েন্টেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরের নামটা অবশ্যই সূর্যকান্ত মিশ্র। তবে তিনি কি নিজের বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতবেন? প্রশ্ন রয়েছে বামফ্রন্টের অন্দরেই। সেক্ষেত্রে কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী?



দ্বিতীয় জন, অধ্যাপক। তবে তাঁর আপাত পরিচয় তিনি পশিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কেন্দ্র থেকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। ঠিক ধরেছেন, সিপিআইএমের অন্যতম মুখ সাদা চুলের সুজন চক্রবর্তী। দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলা সম্পাদকের দায়িত্বে, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। ভোটে হারার রেকর্ডে এই নেতার নাম সামনের সারিতে থাকলেও দলে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এবং বাম-কংগ্রেস যৌথ আন্দোলনে আব্দুল মান্নানের হাত ধরে সারদা ইস্যু থেকে টেট লড়াইয়ে সামনের সারিতে ছিলেন সুজন বাবু। রাজনৈতিক মহলে যাদবপুর বিধানসভাকেন্দ্র থেকে সুজন বাবুর জয় নিয়ে নিশ্চিত অনেকেই। তৃণমূল ওই কেন্দ্রে ব্যকফুটে। সূর্য মিশ্র হারলে এবং জোট জিতলে, মুখ্যমন্ত্রীর দাবিদারদের তালিকায় দু'নম্বর সুজন চক্রবর্তী।   



এই দুই বাম নেতার কেউই মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে না বসলে, সম্ভাব্য তৃতীয় নামটি কংগ্রেসের ঘর থেকে উঠে আসবে। প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। সবং কেন্দ্রে তাঁর জয় নিশ্চিত। শাসক বিরোধীদের কাছে সবং কংগ্রেসগড় বলেই পরিচিত। সেখানকার দীর্ঘদিনের বিধায়ক তিনিই। কংগ্রেসের প্রবীন ও অভিজ্ঞদের মধ্যে অন্যতমও তিনিই। প্রথমে 'একলা চলো' বললেও হাই কমান্ডের আদেশের পর, জোট নিয়ে সবথেকে জড়াজড়ি করেছেন তিনিই। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বক্তৃতা করছেন, আর মাইক ঠিক করে দিচ্ছেন 'কমরেড' মানস এই ছবিও দেখেছে রাজ্যের মানুষ। বন্দেমাতরমের থেকেও 'লাল সেলাম'ও বেশি শোনা গেছে তাঁর গলায়। যার ফলে বাম মনষ্কদের মধ্যেও তাঁর গ্রহণযোগ্যতা তরতর করে বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার 'ইঁদুর দৌড়ে' তিনে আছেন তিনি। 




আর বিশেষ কোনও মুখ মুখ্যমন্ত্রীর দাবিদারদের তালিকায় না রাখলেও, বিজেপির দাবি একেবারেই ফেলে দেওয়া যায় না! 'ভাগ মুকুল ভাগ, ভাগ মদন ভাগ, ভাগ মমতা ভাগ'- একেবারেই প্রভাব ফেলবে না বাংলায়, অন্তত বাংলার রাজনীতিতে খোলা চোখেই তা দেখা যাচ্ছে। তবে পদ্ম ফুল ফুটলে বিজেপির একাংশের দাবি রাহুল সিনহা হবেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, রাজনৈতিক সমীকরণে জোড়াসাঁকো কেন্দ্র থেকে কলকাতায় পদ্ম ফোটাবেন রাহুলই, আশা বিজেপির।