রত্না-শোভনের বিবাহ বিচ্ছেদ কেন? ডিভোর্স পিটিশন দেখে মুখ খুললেন বৈশাখী
`প্রমাণ করতে পারব। আমি ডিভোর্স পিটিশন দেখেছি। এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি দেখেছি। আরও অনেক কিছু ঘটেছে ওঁদের দুজনের মধ্যে, পারিবারিক বন্ধু হিসাবে সেসব কথা প্রকাশ্যে বলব না।`
নিজস্ব প্রতিবেদন: দিনটা ছিল ২০১৭-র ১৬ নভেম্বর। সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে একটাই খবর, স্ত্রী রত্নার বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করলেন শোভন! এই ঘটনায় যতটা চমকেছিল আমজনতা, নোটিস হাতে পাওয়ার পর না কি ঠিক ততটাই অবাক হয়েছিলেন স্বয়ং রত্না চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: আমৃত্যু শোভনদা'র বন্ধু থাকব, বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন বৈশাখী
স্ত্রী রত্নাদেবীর বিরুদ্ধে পারিবারিক হিংসা এবং নিষ্ঠুরতার একাধিক অভিযোগ এনেছেন শোভন। এরপরই শুরু হয় কাদা ছোড়াছুড়ি। বিতর্কের ঝড় ওঠে। আর এই ঘটনার সঙ্গেই উঠে আসে শোভন ঘনিষ্ঠ অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও। ইতিউতি শোনা যায়, বৈশাখীর সঙ্গে বন্ধুত্বের জন্যই নাকি স্ত্রীয়ের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে কলকাতার মেয়রের। গুরুতর এই অভিযোগে কিছুটা হলেও সবুজ সঙ্কেত দেন রত্না চট্টোপাধ্যায়ও। কিন্তু আদৌ রত্নার বিরুদ্ধে কেন ডিভোর্সের মামলা করেছেন শোভন, এবার সে জল্পনারই অবসান ঘটালেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাত্কারে বুধবার বৈশাখী জানালেন, শোভন-রত্নার দাম্পত্য জীবনের খুঁটিনাটি।
আরও পড়ুন, বৈশাখীর উপর আঘাত আসার আগে, সে আঘাত যেন আমার উপর আসে: শোভন
শোভন-রত্না প্রসঙ্গ বলতে গিয়েই বৈশাখীর কথায় এদিন উঠে এল চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথা। বৈশাখী জানান, আগে বিভিন্ন ছোটোখাটো বিষয়েই দুজনের মধ্যে অশান্তি হত। তবে একান্তই ব্যক্তিগত বিষয় বলে, কখনই তাঁদের সে ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেননি তিনি। বরং হেলায় উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে তিনি জানান, সাম্প্রতিক অতীতে বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে শোভন-রত্নার ঝগড়া হত। বৈশাখীর দাবি, তাঁর সামনেও একাধিকবার চরম ঝগড়া হয় তাঁদের। বিষয়টি পারিবারিক বিষয় ভেবে, তিনি প্রথমে তাতে হস্তক্ষেপ করতেন না।
কিন্তু নারদাকাণ্ডে নাম জড়ানোয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়তে থাকে। বৈশাখীর দাবি, সেসময় তিনি রত্নাকে একাধিকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। বৈশাখী বলেন, ‘আমি ওঁকে বোঝাতাম, একজন জনপ্রতিনিধির স্ত্রীকে মেপে চলতে হয়।’ কিন্তু তাঁর বোঝানতেও যে পরিস্থিতির খুব একটা বদল হয়নি, তাও এদিন স্বীকার করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈশাখীর কথায়, শোভন অত্যন্ত চাপা স্বভাবের মানুষ। রাজনীতি নিয়েই বেশি আলোচনা করতে ভালোবাসেন তিনি। তবে যখনই নারদাকাণ্ডে ইডির জেরার জন্য ফাইল গোছাতে বসতেন, তখনই তিনি রেগে যেতেন। বৈশাখী জানাচ্ছেন, এ সময় "শোভনদা চেঁচিয়ে বলতেন, রত্না তুমি আমার এ কী ক্ষতি করে দিলে!"
আরও পড়ুন:
শোভন ইস্যুতে হাতাহাতির উপক্রম পুরসভার বাজেট অধিবেশনে
এরপরই ২৪ ঘণ্টার সামনে বৈশাখী সরাসরি রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। "রত্না চ্যাটার্জির লালসার জন্যই শোভন'দা আজ সমস্যায়", দাবি বৈশাখীর।
২৪ঘণ্টার সাংবাদিক যখন বৈশাখীকে প্রশ্ন করেন, রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ তিনি আদৌ প্রমাণ করতে পারবেন কি না, তখন তিনি জানান তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ রয়েছে। বৈশাখী বলেন, "প্রমাণ করতে পারব। আমি ডিভোর্স পিটিশন দেখেছি। এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি দেখেছি। আরও অনেক কিছু ঘটেছে ওঁদের দুজনের মধ্যে, পারিবারিক বন্ধু হিসাবে সেসব কথা প্রকাশ্যে বলব না।" তবে এখানেই উঠছে আরও কিছু প্রশ্ন, 'আরও অনেক কিছু' বলতে আদতে বৈশাখী কী বোঝাতে চাইলেন, যে কারণে ২৪ বছরের দাম্পত্যে ইতি টানতে চাইছেন শোভন?