কার্যত লকডাউনে সংসারে চরম আর্থিক অনটন, সরশুনায় আত্মঘাতী গৃহবধূ
ঘর থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: শক্ত মনের মহিলা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এমন কাণ্ড যে ঘটাতে পারেন, তা ভাবতেই পারেননি পরিবারের লোকেরা। কার্যত লকডাউন পরিস্থিতিতে আর্থিক অনটনের কারণে আত্মহত্যা করলেন গৃহবধূ। ঘর থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে বেহালার সরশুনায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতার নাম কৃষ্ণা সেন। ৬ বছর ধরে ভাড়া থাকতেন সরশুনার একটি আবাসনে। স্বামী ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে সংসার। স্বামী নরেন কলকাতা পুরসভায় অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কর্মরত, আর ছেলে ইশান আলিপুর বডিগার্ড লাইনের সিভিক ভলান্টিয়ার। আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না, তবে স্বামী ও ছেলের রোজগারে কোনওরকমে সংসার চলে যেত। কিন্তু তাল কাটল রাজ্যে বিধিনিষেধ জারি হওয়ার পর।
আরও পড়ুন: অক্সিজেনের অভাবে কার্গো বিমানে অসহায় মৃত্যু পোষ্যের; বিমান সংস্থার 'গাফিলতি'তে তাজ্জব পোষ্যের পরিবার
জানা গিয়েছে, কার্যত লকডাউন পরিস্থিতিতে ঠিকমতো বেতন পাচ্ছে না ইশান। সেকারণে পরিবারে অশান্তি চলছিল। স্বামীর চিকিত্সার জন্য তিন-সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল। আর্থিক সংকটের কারণে সে টাকাও শোধ করা করতে পারছিলেন না। গতকাল, অফিসে যাওয়ার জন্য কৃষ্ণার কাছে টাকা চান ইশান। দিতে না পারায় মা-ছেলের মধ্যে ঝগড়া হয়। সরশুনা থেকে হেঁটে মমিনপুরে কাজ গিয়েছিলেন স্বামী নরেনও।
আরও পড়ুন: ডক্টর প্লাস নামে জাল স্যানিটাইজার বাজারে, বাজেয়াপ্ত রাজারহাটের কারখানা
রাতে যখন বাড়ি ফেরেন, তখন ভিতরে থেকে দরজা বন্ধ ছিল। ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া পাননি। শেষপর্যন্ত দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন নরেন। দেখেন, সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছেন কৃষ্ণা! খবর দেওয়া হয় সরশুনা থানায়। পুলিস ওই মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে এই ঘটনায় হতবাক মৃতের পরিবারের লোকেরা। তাঁদের দাবি, 'অত্যন্ত শক্ত মনের মহিলা ছিলেন। কিভাবে যে আত্মহত্যা করলেন, বুঝতে পারছি না'। তদন্তে নেমেছে পুলিস।