স‍ৌরভ পাল


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আপনি এই ভাবনার সঙ্গে সহমত হতে পারেন, আবার নাও হতে পারেন। ভিন্ন মত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে এই ভাবনা যে স্রোতের বিপরীতে, তা আপনাকে মানতেই হবে। দুর্গা পুজোর আগে স্যানিটারি ন্যাপকিনের উপর পদ্ম ফুটিয়ে মহামায়ার আবাহন করেছিলেন ভিজুয়াল আর্টিস্ট তথা চিত্রপরিচালক অনিকেত মিত্র। স্যানেটারি প্যাড, রক্তে রাঙা পদ্ম আর তার পিছনে চালচিত্র, সঙ্গে লেখা সত্যি রূপেণ। এই আগমনী বার্তা নাড়িয়ে দিয়েছে বাঙালি মননকে। শারোদত্সবে নেটিজেনদের দেওয়ালে দেওয়ালে জায়গা করে নিয়েছিল অনিকেতের সেই পোস্ট। তবে তা ভাল চোখে নেয়নি রক্ষণশীলরা। যার ফলে লালবাজারে অনিকেতের ওই শিল্পকর্মের বিরুদ্ধে ভূরিভূরি অভিযোগ জমা পড়ে। এরপর বাধ্য হয়েই সেই আর্ট ওয়ার্ক ডিলিট করতে বাধ্য হন তিনি।


তবে, ভাবনা থেমে থাকেনি। এবার অনিকেতের পথে হেঁটেই স্যানিটারি ন্যাপকিনকে ‘নয়া রূপ’ দিলেন কলকাতার তরুণ কল্যাণ ঘোষ। তারপর অনিকেতের মতো তিনিও ফের চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন। প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজের (সাউথ সিটি সান্ধ্য বিভাগ) প্রাক্তনী স্যানিটারি ন্যাপকিনকে আধার করেই ‘আঁধার মোচনের’ বার্তা দেন।


ছবি তোলা তাঁর পেশা নয়, নেশা। বাণিজ্য বিভাগের এই ছাত্র সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর মস্তিষ্ক প্রসূত ‘শক্তিরূপেণ সংস্থিতা’ ফেসবুকে পোস্ট হতেই ফের নতুন করে শুরু হয় হৈচৈ।কী আছে এই ছবিতে? কল্যাণ জানালেন, “রজস্রাব নিয়ে যে অশুভ চিন্তা-ভাবনা আমাদের মধ্যে রয়েছে, সেই মিথ ভাঙতেই চেষ্টা করেছি। স্যানিটারি ন্যাপকিনে যে পদচিহ্ন আমি দেখিয়েছি, তার মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছি, নারী সমাজের সব অশুভকে শুষে নিচ্ছে। নারীর ক্ষমতা প্রকাশ পাচ্ছে সেই রক্ত রঙের পাদুকা স্পর্শে।”


কল্যাণ সোমবার নিজের ফেসবুকে তাঁর ছবি পোস্ট করার পর থেকেই তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এক দেওয়াল থেকে অন্য দেওয়ালে পোস্ট হতে থাকে কল্যাণের ছবি। ক্যামরিনা অ্যাকেডেমি নামের একটি ফেসবুক পেজেও কল্যাণের এই পোস্ট নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। অনেকেই তাঁর শিল্পকর্মকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে অনেকেই কল্যাণের ছবিকে একেবারেই মেনে নিচ্ছেন না। রক্ষণশীল ব্যাক্তিরা এই ছবির সমালোচনাই করছেন। অভিযোগ, অনিকেতের মতো কল্যাণকেও পড়তে হয়েছে রক্ষণশীলদের রোষে। কল্যাণ অভিযোগ করেছেন, গালিগালাজ করা হচ্ছে তাঁকে। রেহাই পাচ্ছেন না, তাঁর মা-বোনও। এসবের মধ্যেও কল্যাণ তাঁর শিল্পকর্মে অবিচল। নেটিজেনদের একাংশ সাধুবাদ জানিয়ে বলছেন, নিজ ভাবনা নিয়ে ঋজু অস্বীকার রেখেছেন কল্যাণ।