ডিয়ার জিন্দেগি: আত্মহত্যায় কিছু বদলায় না!
একটা সময়ে সহজেই হাতে চলে যেত হাঁটুর গাঁটে, এখন হৃদয় বিদারক `যন্ত্রণা` হলেই খেয়াল পড়ে।
দয়াশঙ্কর মিশ্র (লেখক জি নিউজ ডিজিটালের এডিটর)
'ডিয়ার জিন্দেগি' যেখান থেকে লিখছি, সেখান থেকে সমুদ্রকে খুব সুন্দর, মিষ্টি ও আপন মনে হচ্ছে। কাছ থেকে এতটা লাগেনি! কাছাকাছি আসলে উন্মোচিত হয় দ্রষ্টব্যের আসল সৌন্দর্য। দূর থেকে 'নোনতা'ভাব বোঝা যায় না। জীবনের স্বাদও খানিকটা এমনই।
কারও সঙ্গ পাওয়ার জন্য কত কাঠখড় পোড়াই। কারও অপেক্ষায় চেয়ে চেয়ে থাকি পথ, স্বপ্ন বুনতে থাকা মন হয়ে ওঠে দিশেহারা। কিন্তু, কাছের মানুষের সঙ্গ পাওয়ার পর আবার একঘেয়েমি লাগতে শুরু করে। পরস্পরের প্রতি তৈরি হয় ক্ষোভ। যে হৃদয়ে বাসা বেঁধেছিল চাওয়া-পাওয়া, সেখানে জন্মায় কাঁটা গাছ।
একটা সময়ে সহজেই হাতে চলে যেত হাঁটুর গাঁটে, এখন হৃদয় বিদারক 'যন্ত্রণা' হলেই খেয়াল পড়ে। জীবন অবসাদের দিকে মোড় নেওয়ার আগেই বসাতে হবে চেকপোস্ট।
ডিয়ার জিন্দেগি: 'বড়' হওয়ার পথে...
চিন্তা, গভীর বিষণ্নতা একদিনে আমাদের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে না। আস্তে আস্তে ঢুকে পড়ে মনোজগতে। দুঃখ, কষ্টে যে পড়েছি, তা বুঝতে ব্যর্থ হই। 'বন্যার জল' ঢোকার পর সম্বিত্ ফেরে। তখন একটাই শব্দ মনে আসে, যদি এমন হত! মনুষত্ব ও মানবিকতা-দুটোই বাঁচানোর জন্য সময়ের আগেই 'যদি এমন হতো'কে পাকড়াও করা জরুরি।
মুম্বইয়ের একটি সংবাদপত্রে ঠাঁই করে নিয়েছে এমনই একটি খবর। কল্যাণের 'মহাবীর হাইটসে' স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন চিকিত্সক প্রাজক্তা কুলকর্ণী। সকালেই বহুতলের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গোটা ঘটনাটি রেকর্ড হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়।
ডিয়ার জিন্দেগি: আপনাকে আটকানোর 'রশ্মি'!
ঘটনাটি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অভিজাত এলাকায় আত্মহত্যার ঘটনা সংবাদমাধ্যমকে বেশি টানে। আর একটি কারণ, প্রাজক্তা চিকিত্সক। তাঁর আর্থিক, সামাজিক অবস্থান অত্যন্ত ভাল। পড়শিরা জানাচ্ছেন, কুলকর্ণী দম্পতি সুখে থাকতেন। অশান্তি হতই না।
দারিদ্র ও সম্পদের অভাবই আত্মহত্যার কারণ বলে জনশ্রুতি। আত্মহত্যা থেকে বাঁচাতে পারে অর্থ, প্রতিষ্ঠা ও সুখ। কিন্তু এটা একেবারে মিথ্যা ও অসত্য ধারণা।
ডিয়ার জিন্দেগি: আমার কাছেও যা আছে, তাতেও 'কিছু রসদ আছে'!
আত্মহত্যা থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র আত্মশক্তিই। প্রতিকূল থেকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নিজের উপরে ভরসা অটুট রাখতে হবে। কারও উপরে ভরসা ভেঙে গেলেই কোনও ব্যক্তি বেছে নেন আত্মহত্যার পথ। অন্যদের উপরে ভরসা রাখায় কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু নিজের থেকেও বেশি, এতটাই বেশি যে ভরসা ভেঙে গেলে মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে, এমন বিশ্বাস থাকা কখনই উচিত নয়।
আরও একটা কথা, অবসাদ ও আত্মহত্যার ঘটনা কাছ থেকে দেখা, অধ্যয়নের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, কাউকে 'শিক্ষা' দেওয়ার জন্য আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন বহু মানুষ। আমাকে ছাড়া বাঁচো, তখন বুঝতে পারে, কত ধানে কত চাল! আমি না থাকলে জীবনের মজা টের পাবে!
ডিয়ার জিন্দেগি: ভাঙা সম্পর্কে 'আবদ্ধ'
আরে! এটা কেমন পাগলামি। যাঁকে আপনি এত বোঝানোর চেষ্টা করেও পারলেন না, তাঁর মান ভাঙল না। অথচ ভাবছেন, আপনার মৃত্যুর পর তিনি বুঝতে পারবেন। বদলও ঘটবে। তিনি বদলে যাবেন, তাঁর মান ভাঙবে। হিন্দি ছবির কাল্পনিক জগত্ থেকে বাইরে বেরিয়ে আসুন।
জীবনের রাস্তায় বেরিয়ে পড়ুন। জীবন একা চলতে পারছে না। সে সফরসঙ্গী খুঁজছে আর আপনি পালাচ্ছেন। আপনি মরলে কোনও বদল হবে না। বেঁচে থাকতে দুনিয়ার পরিবর্তন করতে পারলেন না, মরার পরও পারবেন না। সে কারণে বাঁচার কারণ খুঁজে বের করুক। বাঁচার একশোটা কারণ রয়েছে, কিন্তু মরার একটাই। সে কারণে জীবন একেবারেই মুশকিল নয়।
প্রতিবেদনটি হিন্দিতে পড়ার জন্য ক্লিক করুন - डियर जिंदगी: आत्महत्या से कुछ नहीं बदलता!
প্রতিবেদনটি গুজরাটিতে পড়ার জন্য ক্লিক করুন- ડિયર જિંદગી: આત્મહત્યાથી કઈ બદલાશે નહીં!
প্রতিবেদনটি মরাঠিতে পড়ার জন্য ক্লিক করুন- डिअर जिंदगी : आत्महत्येने काहीच बदलत नाही!
ইমেল- http://dayashankar.mishra@zeemedia.esselgroup.com
ঠিকানা- ডিয়ার জিন্দেগি (দয়াশঙ্কর মিশ্র)
Zee Media
ওয়াসমে হাউস, প্লট নম্বর ৪
সেক্টর 16 A, ফিল্ম সিটি, নয়ডা (উত্তরপ্রদেশ)
(লেখক জি নিউজ ডিজিটালের এডিটর)
http://https://twitter.com/dayashankarmi
(আপনাদের প্রশ্ন ও পরামর্শ ইনবক্স করুন)
https://www.facebook.com/dayashankar.mishra.54