এর চেয়ে বেশি চুল ঝরতে দেখলেই ব্যবস্থা নিন! না হলেই বিপদ!

নিজস্ব প্রতিবেদন: চুল ঝরে যাওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক একটি ঘটনা। চুল ঝরে গিয়ে আবার নতুন চুল গজাবে, এটাই তো স্বাভাবিক! কিন্তু অনেকেরই মনে হতে পারে, খুব বেশি চুল ঝরে যাচ্ছে। কারণ, অতিরিক্ত চুল ঝরে গিয়ে টাক পড়ে যাওয়ার একটা ভয় তাদের মধ্যে কাজ করে। আসলে প্রতিদিন ঠিক কতটা পরিমাণে চুল ঝরাটা স্বাভাবিক আর কতটা চুল ঝরলে আমাদের চিন্তিত হবার কারণ রয়েছে— এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই কোনও স্পষ্ট ধারনা নেই। আর সে কারণেই যত দুশ্চিন্তা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক ৫০ থেকে ১০০টি চুল ঝরে যাওয়াটা স্বাভাবিক। এ বিষয়ে চুল এবং চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সেস্কো ফুস্কোর মতে, চুল ঝরে যাওয়া অনেকটাই নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপর। হেমন্তে চুল বেশি ঝরে আর গ্রীষ্মে চুল ঝরে যাওয়ার পরিমাণ কমে যেতে পারে।

চুল ঝরে যাওয়ার বিষয়ে ট্রাইকোলজিস্ট (Trichology, Trichologist) অ্যানাবেল কিংসলে জানান, যাঁদের চুল বেশি লম্বা হয়, তাঁদের চুল ঝরার পরিমাণ অন্যান্যদের চেয়ে বেশি হতে পারে। এতে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কিংসলের মতে, শরীরের যথাযথ যত্ন নিলে চুল আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। তিনি জানান, অনেকের ক্ষেত্রে মাথার সামনের দিকে টাক পড়ার পারিবারিক ইতিহাস থাকতে পারে। বংশগত কারণেও অনেকের চুল একটু বেশি পড়তে পারে।

আবহাওয়ার তারতম্য ছাড়াও আরও কিছু কারণে আমাদের চুল ঝরার পরিমাণ একটু বেড়ে যেতে পারে। সেই কারণগুলো হল:—

• হঠাৎ খাদ্যভ্যাসে পরিবর্তন হলে,

• মাথায় মাত্রাতিরিক্ত খুশকি থাকলে,

• চুলের গোড়ায় অতিরিক্ত ঘাম হলে,

• জলে আয়রনের মাত্রার আধিক্যের ফলে,

• জ্বর বা পেট খারাপের মতো ছোটখাটো অসুস্থতায়,

• গর্ভধারণের পর,

• বার্থ কন্ট্রোল পিল খাওয়া শুরু বা বন্ধ করলে।

উল্লেখিত কারণগুলির জন্য ১০ দিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত চুল ঝরা অব্যহত থাকতে পারে। এ ছাড়াও শীতকালে অনেকে দু’-একদিন পর পর চুল ধুয়ে থাকেন। এ সময়ে মনে হতে পারে চুল বেশি পড়ছে। আসলে এই ক’দিনে চুল জমে যায় বলেই মনে হয়, বেশি চুল পড়ছে।

তবে যদি দেখেন, মাথার কোনও জায়গায় হাতের বুড়ো আঙুলের মাপের অংশে চুল উঠে গিয়েছে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কোনও ডার্মাটোলজিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এটি ‘অ্যালোপেশিয়া অ্যারিয়াটা’ নামের একটি চর্মরোগের লক্ষণ হতে পারে।

এ ছাড়াও যদি মাথার ত্বকে অতিরিক্ত চুলকানি হয়, ত্বক লালচে হয়ে যায় অথবা চামড়া উঠে যেতে থাকে তাহলেও ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ, এগুলি স্ক্যাল্পে (মাথার ত্বকে) সমস্যা বা অ্যালার্জির লক্ষণ হতে পারে। এই সমস্যা দীর্ঘ দিন স্থায়ী হলে চুল পড়ে গিয়ে অকালে টাক পড়ে যেতে পারে।

যদি দেখেন এক মাসের বেশি সময় ধরে অস্বাভাবিক চুল পড়ছে, তাহলেও ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।