দাম্পত্য

 


তুষার সেনগুপ্ত

 

মোড়লদের পুকুরে পায়ের চেটো ডোবানো জলে দাঁড়িয়ে দয়াল জেলে খুব সন্তর্পণে জাল টানছে। বাঁ হাতে ছড়ানো জাল চেপে ধরে ডান হাতের চেটো থেকে কনুইয়ে জাল গোটাচ্ছে। জালে আটকানো মাছের ছটফটানি জলের ভেতরেই টের পাওয়া যায়। জালটাকে গুটিয়ে পুকুর পাড়ে টেনে তুলল। বড় মেজো রুই কাতলা কালবাউশের সঙ্গে কিছু কই মাগুর শোল ল্যাটা চুনোপুঁটিও। ডাঙায় টেনে তুলতেই বড় মেজো কয়েক মুহূর্ত দাপাদাপি করেই নিথর। চুনোপুঁটিগুলো আরও কিছুক্ষণ ছটফটিয়ে থেমে গেল। জাল ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে খালুইয়ে বড় মেজো সেজো সব ঢুকিয়ে চুনোপুঁটিগুলো থলেতে পুরে মোড়ল বাড়ির পথে হাঁটা দিল দয়াল। মোড়ল বাড়ির মেজো জামাই এসেছে। শাঁসাল জামাই তাই ভারি খাতির। বড় কাতলাটা আর সঙ্গে রুই কালবাউশ মাগুর কই যা উঠেছে সব মোড়ল বাড়িতে দিয়ে দয়াল ঠিক করল অবশিষ্ট শোল ল্যাটা আর থলের চুনোপুঁটি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথেই রোজকার খদ্দেরদের বাড়ি বাড়ি একটু হেঁকে যাবে। শুধু চুনো মাছে তো আর পেট ভরে না। চালটা তেলটাও তো নিয়ে যেতে হবে। ছোট বেটার তিনদিন ধরে ঘুসঘুসে জ্বর। মুখে রুচি নেই মোটেও। জাল গুটিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ই লক্ষ্মী বলে দিয়েছিল আজ যদি অন্তত কিছু চুনো মাছও আনতে পারে। ছেলেটা অনেকদিন ধরেই চুনোমাছের ঝালচচ্চড়ি খাবে বলে ঘ্যানঘ্যান করছে।