সৌমিত্র সেন: রামপ্রসাদ গান গেয়েছেন, 'কে জানে কালী কেমন?' সাধক ছাড়া কেই-বা বলবে এই গুহ্য কথা! কিন্তু সাধারণ মানুষ চেষ্টা করলেই যেটুকু জানতে পারে, সেটা হল, কালীর উৎপত্তি। কোথা থেকে এলেন ভয়ংকরা করালবদনী এই দেবী? তা নিয়ে গবেষকেরা তত্ত্ব-তালাশ করেছেন। তাতে বেশ কিছু সূত্র মিলেছে। যেমন, তন্ত্র অনুসারে কালী দশমহাবিদ্যার প্রথম দেবী। পুরাণ বলছে, কালী দেবী দুর্গারই একটি রূপ। মহিষাসুরের সঙ্গে দুর্গার দ্বৈরথ শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘোরতর যুদ্ধ চলছে। চণ্ড ও মুণ্ড দেবী দুর্গাকে আক্রমণ করেছে। সেই যুদ্ধকালেই ক্রোধান্ধ দুর্গার কপাল থেকে বা তৃতীয় নেত্র থেকে কালীর উৎপত্তি। কালীর চেহারা গাঢ় নীল, কোটর-নিমজ্জিত চোখ এবং পরনে বাঘের চামড়া, গলায় মুণ্ডমালা। তিনিই চণ্ড-মুণ্ডকে বধ করে দুর্গার কাছে এসে তাঁকে দুই অসুরের মাথা উপহার দেন। ওই একই যুদ্ধে অসুর রক্তবীজ অপরাজিত থাকে কারণ তার রক্তের প্রতিটি ফোঁটা মাটিতে পড়া মাত্রই তা থেকে ফের নতুন রক্তবীজ জন্মায়। অগণিত রক্তবীজ হাজির হয় যুদ্ধক্ষেত্রে। কালী তখন দুর্গার অস্ত্রে বধ হওয়া রক্তবীজের রক্তবিন্দু মাটিতে পৌঁছনোর আগেই তা তাঁর জিহ্বা দিয়ে ​​লেহন করেন। পুরাণের এই কালীই পরে ফিরে ফিরে এসেছেন। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Dhanteras: ধনতেরস উৎসবটি আসলে কী? জেনে নিন এর প্রকৃত কাহিনী...


কালীর একটা ইতিহাসও আছে। গবেষকেরা বলছেন, 'কালী' শব্দটি অথর্ববেদের প্রথম দিকে প্রথম পাওয়া যায়। গবেষকেরা বলে থাকেন, সময়ের দিক থেকে ৬০০ খ্রিস্টাব্দেই কালীকে প্রথম পাওয়া যায়। এই সময়-পর্বেই স্বতন্ত্র দেবী হিসেবে কালীর উল্লেখ মেলে। কালীকে শিবের শক্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। ষষ্ঠ শতাব্দীতে রচিত 'দেবীমাহাত্ম্যে' কালীকে পাওয়া যায়। 


যাই হোক, আজ আর কালীর এই সাংঘাতিক চেহারা নেই জনমনে। বহু সাধকের বহু সাধনার ধারা মিশে এই কালী এখন একেবারে যেন ঘরের মেয়ে। তাঁকে নিয়ে গড়ে উঠেছে ভিন্ন সংগীত-ঐতিহ্য-- 'শাক্তসংগীত' বা 'শ্যামাসংগীত'। দীপাবলির আবহে এই শ্যামাপুজো এখন ভারতের বড় উৎসব, বাঙালির বড় প্রাণের পুজো।  


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)