সাহেবরা শহর ছেড়েছে সেই কবে, তবে শহরের ইতিউতি রয়ে গিয়েছে তাঁদের উদ্ভাবনী শক্তির চিহ্ন। কয়েকশ' বছর পরেও এখনো জ্যান্ত পুরনো কলকাতার নানা স্মৃতি। যেমন ধরুন, বিধানসভার এই ফায়ার অ্যালার্ম। সেই কবে ১৯১০ সালে এই ফায়ার অ্যালার্ম তৈরি করিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন বার্নার্ড অ্যান্সন ওয়েস্টব্রুক। 
তখন টেলিফোন ছিল না ঘরে ঘরে। মোবাইল ফোন তো দূর অস্ত। তাহলে কোথাও আগুন লাগলে দমকলে খবর যাবে কী করে? কেউ ছুটে দমকল অফিসে খবর দিতে দিতে তো আগুন ভয়াল আকার ধারণ করবে। মুসকিল আসান করলেন ওয়েস্টব্রুক সাহেব। লন্ডনের আদলে গোটা কলকাতা শহরে ফায়ার অ্যালার্ম বসান তিনি। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ফায়ার অ্যালার্মের প্রযুক্তি ছিল বেশ সহ। চার ফুট উঁচু একটি পিলারের একদিক ঢাকা থাকত গোলাকার কাচ দিয়ে। তার ভিতরে থাকত একটি হাতল। হাতলের সঙ্গে সংযুক্ত থাকত একটি ডায়নামো। নিকটবর্তী দমকল অফিসে ওই ডায়নামোর সঙ্গে যুক্ত থাকত একটি বাতি। কোথাও আগুন লাগলে কাচ ভেঙে হাতল ঘোরাতে হত। তাহলেই নিকটবর্তী দমকল অফিসে জ্বলে উঠত নির্দিষ্ট বাতি। সঙ্গে সঙ্গে কোথায় আগুন লেগেছে বুঝতে পারতেন দমকল কর্মীরা। ১৯১০ সালে গোটা কলকাতায় ১৫০টি এই ধরণের ফায়ার অ্যালার্ম বসিয়েছিলেন ওয়েস্টব্রুক সাহেব। 


সময়ের নিয়মে একে একে কলকাতা থেকে হারিয়ে গিয়েছে ফায়ার অ্যালার্ম পিলারগুলি। তবে এখনো রয়ে গিয়েছে এমন ২টি স্তম্ভ। একটির দেখা পাওয়া যায় হেদুয়া অঞ্চলে। তবে তার হাল বেশ খারাপ। স্তম্ভটিই শুধু অবশিষ্ট রয়েছে, ভিতরে নেই কোনও যন্ত্রপাতি। অন্যটি সংরক্ষিত রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। বেশ যত্নে রয়েছে সেই ফায়ার অ্যালার্মটি। 


শুনলে চমকে যাবেন, সেই যুগেও মাত্র ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে সুনির্দিষ্ট ভাবে আগুন লাগার জায়গা চিহ্নিত করতে পারতেন দমকল কর্মীরা।