নিজস্ব প্রতিবেদন: ক্যান্ডেল লাইট ডিনার। টেবিলে সুস্বাদু খাবার। হাতে ওয়াইনের গ্লাস। অদূর ভবিষ্যতে এই বিলাসিতা ইতিহাসের পাতায় ঢুকে যেতে পারে। আগামী দিনে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে আপনার হাতে ওয়াইনের গ্লাস নাও থাকতে পারে। বা গ্লাস রয়েছে কিন্তু ওয়াইন নেই। এমনটাও হতে পারে। কারণ বিশ্বজুড়ে আকাশ ছোঁয়া আশঙ্কা করা হচ্ছে ওয়াইনের দাম। ‘সৌজন্যে’ গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়ন!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বৈজ্ঞানিদের দাবি বিশ্বজুড়ে যেভাবে উষ্ণায়ন বাড়ছে তাতে আগামী দিনে বেশিরভাগ আঙুরের বাগান নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে সারা বিশ্বে ওয়াইনের ঘাটতি দেখা যেতে পারে। চড়চড়িয়ে বাড়তে পারে রেড এবং হোয়াইট ওয়াইনের দামও। বর্তমানে ১১ ধরনের আঙুরের প্রজাতি দিয়ে বিভিন্ন ওয়াইন তৈরি করা হয়। ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, চিলি এবং নিউ জিল্যান্ডের আঙুর বাগান থেকে আসে বিশ্বের সেরা ওয়াইনগুলি। তাছাড়া ইতালি, স্পেনে এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় তৈরি হয় বাছাই করা কিছু সেরা ওয়াইন।


আরও পড়ুন- ভারতের ৮ লক্ষ মানুষ পরকীয়ায় জড়িত! তালিকার শীর্ষে বেঙ্গালুরু, মুম্বই, কলকাতা!


আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিদের দল আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা আর ২ ডিগ্রি বাড়লেই বিশ্বের ৫৬ শতাংশ আঙুরের বাগান লুপ্ত হয়ে যাবে। তাপমাত্রা বাড়লে সাদা আঙুরের এক প্রজাতি ইউনি ব্লঁয়ে ৬৬ শতাংশের চাষের ক্ষতি হবে। রাইসলিং আঙুর হারাবে ৬৬ শতাংশ চাষের জমি। ঠিক তেমনই লাল আঙুরের প্রজাতি গ্রেনাশের ৩১ শতাংশ বাগান নষ্ট হয়ে যাবে। বৈজ্ঞানিরা আরও দাবি করেছেন পৃথিবীর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি বাড়লে ৮৫ শতাংশ আঙুর চাষের ক্ষতি হবে। আঙুরের চাষে সবেচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে অস্ট্রেলিয়া, ইতালি এবং স্পেনের মতো গরম দেশগুলিতে।



এমনিতেই অস্ট্রেলিয়ায় ভয়াবহ দাবানলের পর ১০ কোটি লক্ষ হেক্টরের থেকেও বেশি জমি আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে। বলাবাহুল্য যে অস্ট্রেলিয়ায় আঙুরের বেশিরভাগ বাগান নষ্ট হয়ে গেছে। বহু বছর লেগে যাবে নতুন করে বাগান তৈরি করে তার থেকে আঙুর পেতে। বৈজ্ঞানিদের দাবি উষ্ণতা বাড়লে আঙুরের বাগান যেমন নষ্ট হয়ে যাবে তেমনই কয়েকটি আঙুরের ফলনেও প্রভাব পড়বে। যেমন অতিরিক্ত গরমে আঙুরের পেকে যাওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত হয়ে যাবে। তেমনই আগের থেকে আঙুরের মধ্যে মিষ্টিভাব আরও বেড়ে যাবে। ফলে সেরা ওয়াইন তৈরি করতে সঠিক আঙুর পাওয়া যাবে না।



এর মধ্যেও আশার আলো দেখিয়েছেন বৈজ্ঞানিরা। তাঁদের দাবি, এমন আঙুরের চাষ করতে হবে যে গরম বাড়লেও নষ্ট হবে না। যেমন ফ্রান্সের বার্গান্ডি প্রান্ত বিখ্যাত পিনো নোয়ার বলে একটি আঙুরে চাষের জন্য। কিন্তু গরম বাড়লে এখানে মৌভেদ অথবা গ্রেনাশ আঙুরের চাষ করা যেতে পারে। কারণ তাপমাত্রা বাড়লেও এই প্রজাতির আঙুরের ক্ষতি হয় না।



উষ্ণায়নের জন্য যে শুধু আঙুর চাষে ক্ষতি হবে তা নয়। পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়লে গোটা মানবজাতিকে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে খরা, প্লাবনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হবে আমাদের। ২০১৫ সালে বিশ্বের প্রায় সব দেশই প্যারিস চুক্তিতে সই করেছিল। চুক্তিবদ্ধ দেশগুলি দূষণ এবং উষ্ণায়ন আটকানোর শপথ নিয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও যে হারে পৃথিবীর ভারসাম্য হারাচ্ছে তাতে আগামী দিনে ওয়াইন কেন, প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও পাওয়া দুর্লভ হয়ে যাবে।