জামাই ষষ্ঠী কী সত্যিই `জামাই`-দের অনুষ্ঠান! নাকি অন্য কিছু?
জামাই ষষ্ঠী মানেই বাবাজীবনদের অনুষ্ঠান, পঞ্চ (বা পঞ্চান্ন) ব্যঞ্জনে ভুঁড়িভোজ। কিন্তু ব্যাপারটা আসলে কিন্তু তা নয়। অন্তত শাস্ত্র যা বলছে তাতে এটা সেই অর্থে জামাইদের অনুষ্ঠানই নয়, বরং বলা যায় জামাইরা এই অনুষ্ঠানকে হাইজ্যাক করেছেন।
নির্ণয় ভট্টাচার্য্য: জামাই ষষ্ঠী মানেই বাবাজীবনদের অনুষ্ঠান, পঞ্চ (বা পঞ্চান্ন) ব্যঞ্জনে ভুঁড়িভোজ। কিন্তু ব্যাপারটা আসলে কিন্তু তা নয়। অন্তত শাস্ত্র যা বলছে তাতে এটা সেই অর্থে জামাইদের অনুষ্ঠানই নয়, বরং বলা যায় জামাইরা এই অনুষ্ঠানকে হাইজ্যাক করেছেন।
শাস্ত্র মতে, 'জামাই ষষ্ঠী' আসলে সন্তান প্রাপ্তির আশায় 'মা বিন্ধ্যবাসিনী স্কন্দ ষষ্ঠী'র কাছে মা'য়েদের নিবেদন এবং প্রার্থনা। স্কন্দ ষষ্ঠী পূজার আনুষ্ঠানে বাবা-মা মেয়েকে আমন্ত্রণ জানান যাতে সেও মা ষষ্ঠীর কাছে সন্তান লাভের প্রার্থনা জানাতে পারেন। কিন্তু সেই অনুষ্ঠান কী ভাবে জামাইরা হাইজ্যাক করে নিতে পারলেন?
এর জন্য ফিরে যেতে হবে সনাতন সমাজের সেঁকেলে আমলে। যেখানে মেয়ে মানেই 'অন্তঃপুরবাসিনী'। একা একা বাড়ি থেকে বাড়ির বউ বেড়িয়ে বাপের বাড়ি যাবে এতো ভাবাই যেতো না। তাই 'মেয়ে'কে শ্বশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি নিয়ে যাবে কে? কে আবার জামাই মানে মেয়ের স্বামীই নিয়ে যাবে।
আর কথায় বলে, ''যম-জামাই-ভাগ্না, তিন নয় আপনা।'' তো সেই জামাই 'যার হাতে কিনা নিজের আদরের মেয়ের সারা জীবনের ভাল-মন্দের ভার তুলে দেওয়া হয়েছে' তাকে তো খাইয়ে-দাইয়ে তৃপ্ত করতেই হবে। তাই জামাই আদরের এই বিপুল আয়োজন। যদিও এ নেহাতই তদানিন্তন সময়ের মানসিকতা, আজকের দিনের আধুনিক সময়ে জামাইকে নেহাত 'স্নেহ' করেই আপ্যায়ন করেন শ্বশুর শাশুড়ি একথাও সত্যি।
যাক তাহলে এটা জানা গেল তো যে, 'জামাই ষষ্ঠী' আসলে জামাইদের হাইজ্যাক করা অনুষ্ঠান, আসল কিন্তু সেই মেয়েই।