নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারতে অসম শ্রম বিভাজন অত্যন্ত পরিচিত একটি বিষয়। কর্মক্ষেত্র থেকে ঘরের টার দেওয়ালের মধ্যে নানা কাজের ক্ষেত্রে একটু নজর দিলেই এই অসম শ্রম বিভাজনের বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়ে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

চাকরি-বাকরি, অফিস-কাছাড়ি, দোকান-পাঠ, বাজার-হাট— এই সব বাইরের কাজই পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে রয়েছে। পাশাপাশি রান্না করা, বাসন ধোয়া, কাপড় কাচা, ঘর পরিষ্কার করা ইত্যাদি যাবতীয় ঘরোয়া কাজ অলিখিত ভাবেই বাড়ির মেয়েদের দায়িত্ব।


বর্তমানে চাকরি-বাকরি, দোকান-পাঠ, বাজার-হাটের মতো সমস্ত বাইরের কাজে বাড়ির মহিলারা পুরুষের সঙ্গে সমান ভাবে অংশগ্রহণ করলেও ঘরের কোনও কাজে এখনও হাত লাগান না অধিকাংশ পুরুষ।


সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে ভারতের ১০ শতাংশেরও কম পুরুষ রান্না করা, বাসন ধোয়া, কাপড় কাচার মতো ঘরোয়া কাজে হাত লাগান বা মহিলাদের সাহায্য করেন!


সম্প্রতি ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা এই সমীক্ষার ফলাফল সামনে এসেছে। এই সমীক্ষায় ৬ বছরের বেশি বয়সী ৪৫ লক্ষেরও বেশি পুরুষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তাঁদের সারা দিনের কাজ-কর্মের খুঁটিনাটি বিষয় জিজ্ঞাসা করে তার উত্তরের ভিত্তিতে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।


এই সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের ৮৪ শতাংশ মহিলা সারাদিনে এমন কিছু পরিশ্রমসাধ্য কাজ করেন, যার জন্য তাঁরা কোনও বেতন পান না।


দেশের পুরুষদের ক্ষেত্রে আবার এ বিষয়টি সম্পূর্ণ উল্টো! এই সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের ৮০ শতাংশ পুরুষ সারাদিনে যা কাজ করেন তার জন্য তাঁরা বেতন বা পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ, দেশের ৮০ শতাংশ পুরুষের দৈনিক পরিশ্রম বেতন ভিত্তিক। উল্টো দিকে দেশের ৮৪ শতাংশ মহিলা বিনা পারিশ্রমিকে সারাদিন নানা পরিশ্রমসাধ্য কাজে নিযুক্ত থাকেন।


এই সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের মাত্র ৬.১ শতাংশ পুরুষ দিনের কিছু সময় রান্নার জন্য ব্যয় করেন। মাত্র ৪ শতাংশ পুরুষ ঘর পরিস্কারে এবং ৩ শতাংশ পুরুষ কাপড় কাচার ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করেন।


এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, দেশে কাজের ক্ষেত্রে এই বৈষম্য শুরু হয় একেবারে শৈশব থেকেই। রিপোর্ট অনুযায়ী, ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী ছেলেরা দিনের অধিকাংশ সময় হয় পড়াশোনা নয় তো খেলাধূলা করে কাটায়। সেখানে সমবয়সী মেয়েদের অনেক বেশি সময় দিতে হয় ঘরোয়া কাজে।


এই সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের ৮৭ শতাংশ পুরুষ অবসরের বা বিশ্রামের জন্যে যথেষ্ট সময় পান। এ ক্ষেত্রে দেশের ১৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী অধিকাংশ মহিলা ঠিক মতো স্নান, খাওয়া-দাওয়ার সময়ও পান না।