জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাত পোহালেই শিবরাত্রি। প্রতি বছর ফাল্গুনেই পড়ে এই মহাতিথি। সারা বছরই শিবপুজোর রীতি আছে। তবে ফাল্গুনে শিবপুজোর ক্ষেত্রে একটু বিশেষ ব্যাপার থাকে। ফাল্গুন মাসটিকে শিবের বিবাহমাস বলে ধরা হয়। শিবরাত্রি দিনটি তো শিবপুজোরই দিন। এদিন শিবের জন্যই সব আয়োজন। তবে, এমন একটি জিনিস আছে, যা দিয়ে এদিন শিবপুজো করে তুষ্ট হন স্বয়ং শনিদেবতাও।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Mahashivratri 2024: শিবরাত্রিতে মহাদেবকে ভোগে এই ক'টি জিনিস নিবেদন করলে খুলে যাবে আপনার ভাগ্য...


জিনিসটি একটি পাতা। শমী পাতা। বিল্বপত্রেই শিব সবচেয়ে বেশি তুষ্ট হন। তবে শিবকে শমী পাতা দিয়ে পুজো করলেও তিনি খুব খুশি হন। সাধারণত জলাভিষেক করার পর শিবকে বিল্বপত্র, উপবীত,চালের সঙ্গে শমী পাতাও অর্পণ করতে হয়। এ সময়ে একটি মন্ত্রও উচ্চারণ করা বিধি। মন্ত্রটি হল-- 'অমঙ্গলানাং চ শমনীং শমনীং দুষ্কৃতস্য চ।/ দুঃস্বপ্রনাশিনীং ধন্যাং প্রপদ্যেহং শমীং শুভাম্।।' 


আবার ঘটনাচক্রে এই পাতায় খুব খুশি হন শনিদেবও। এই পাতা নিবেদন করে শনিকে পুজো করলে ভক্তের শনিদোষ কেটে যায়।


শনির মতো চন্দ্রের সঙ্গেও শিবপুজোর একটা যোগ রয়েছে। তবে সেজন্য একটা বড় গল্প জানতে হবে। সোমবারকে কেন শিবপুজোর বিশেষ দিন ধার হয়ে থাকে? এ নিয়ে অনেকেরই কৌতূহল আছে। এর পিছনে রয়েছে এক গল্প।


চন্দ্রদেবতা রাজা দক্ষের ২৭ পালিত কন্যাকেই বিয়ে করেছিলেন। এই ২৭ কন্যা আকাশে ২৭ নক্ষত্রের প্রতিনিধিস্বরূপা ছিলেন। যাই হোক, এই ২৭ জনকে বিয়ে করলেও চন্দ্র কিন্তু তাঁদের মধ্যে রোহিণীর প্রতিই বেশি আকৃষ্ট এবং আসক্ত ছিলেন। বাকি বোনেরা তাই এ নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁরা এমনকী বিষয়টি নিয়ে তাঁদের পিতা দক্ষের কাছে অনুযোগও জানিয়েছিলেন। দক্ষও সুযোগ বুঝে একদিন তাঁর জামাই চন্দ্রকে অনেক বোঝালেন যে, চন্দ্র যেন তাঁর (দক্ষের) বাকি কন্যাদের প্রতি অবিচার না করেন, যেন সবাইকেই সমান ভালোবাসেন! কিন্তু কে শোনে কার কথা! সেই রোহিণীর প্রতিই বেশি আসক্ত থেকে তিনি অন্য দক্ষকন্যাদের বিরক্তি ও ক্ষোভ উৎপাদন করতে থাকলেন। ফলে, তাঁরাও বাবার কাছে তাঁদের দুঃখের কথা জানাতে থাকলেন। তখন দক্ষ গেলেন দারুণ রেগে। ক্রুদ্ধ দক্ষ চন্দ্রকে অভিশাপ দিলেন। সেই অভিশাপের জেরে দিন-দিন চন্দ্রের জ্য়োতি কমতে লাগল, ক্ষয় হতে লাগল তাঁর। তখন চন্দ্র ভয় পেয়ে ব্রহ্মার কাছে গেলেন। ব্রহ্মা তাঁকে শিবের কাছে পাঠালেন। ব্রহ্মার পরামর্শে চন্দ্র শিবের কাছে গেলেন। তবে শিব দক্ষের অভিশাপ রোধ করতে পারলেন না, কিন্তু তিনি চন্দ্রকে একটা রাস্তা বাতলে দিলেন। শিব চন্দ্রকে আশীর্বাদ করে বললেন, ক্ষয়ের পরেও চন্দ্র তাঁর হৃত শরীর পুনরায় ফিরে পাবেন। আর সেই থেকেই ক্ষয়ে-যাওয়া চাঁদ শোভা পাচ্ছেন শিবের মাথায়।


সে না হয় হল! কিন্তু এর সঙ্গে সোমবারে শিবপুজোর কী যোগ? 


আরও পড়ুন: Maha Shivratri 2024: নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারেও শিবরাত্রি ? উঠল 'হর হর মহাদেব' ধ্বনি‌!


আছে। তবে সরাসরি নয়, একটু পরোক্ষ যোগ। সোমবার আসলে চন্দ্রের বার। আর, এই চন্দ্রের বারে শিবপুজো করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্মকুণ্ডলীতে যদি চন্দ্র-দোষ কিছু থেকে থাকে, তবে শিবের কৃপায় তা দূরীভূত হয়। তাই প্রতি সোমবার শিবের পুজোর রীতি। আর তা যদি ফাল্গুন মাসে হয়, তবে তার চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে! 


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)