নিজস্ব প্রতিবেদন: সংসারের চাপে কখনও কোথাও সে ভাবে ঘুরতে যাওয়া হয়নি। বছর চারেক আগে স্বামীকেও হারিয়েছেন সত্তরোর্ধ বৃদ্ধার। এই বয়সে এখন তাঁর সাধ, শুধু ভারতের তীর্থক্ষেত্রগুলি যদি দর্শন করা যায়! বৃদ্ধা মায়ের এই ইচ্ছের কথা জানতে পেরে চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন ছেলে। কারণ, মাকে ভালভাবে তীর্থ দর্শন করাতে যতদিন ছুটির প্রয়োজন,তা তিনি কোনও ভাবেই পেতেন না। চাকরি ছাড়ার পর স্থির করলেন, শুধু তীর্থক্ষেত্রগুলিই নয়, মাকে সারা ভারত ঘুরিয়ে দেখাবেন তিনি। যেমন ভাবা তেমন কাজ! পাবলিক ট্রান্সপোর্টে মা’র কষ্ট হবে। তাই বাবার পুরনো স্কুটারে মাকে বসিয়ে রওনা দিয়েছিলেন তিনি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ঘটনাটি কর্নাটকের মহিশূরের বাসিন্দা দক্ষিণমূর্তি কৃষ্ণ কুমার ও তাঁর মা চূড়ারত্নার। কৃষ্ণ কুমার বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। মায়ের ইচ্ছা পূরণে ১৬ জানুয়ারী, ২০১৮-এ বাবার উপহার দেওয়া ২০ বছর আগের একটি স্কুটার নিয়ে বেরিয়ে পড়েন কৃষ্ণ কুমার। স্কুটারে চড়েই মাকে নিয়ে কেরলা, তামিলনাড়ু, পণ্ডীচেরি, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, গোয়া, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে সিকিম, আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা ঘুরে নিয়েছেন তিনি। দেশের বাইরে নেপাল, ভূটান হয়ে মায়ানমার পর্যন্ত মা-কে ঘুরিয়ে নিয়ে এসেছেন কৃষ্ণ কুমার। মাকে সঙ্গে নিয়ে এখনও পর্যন্ত স্কুটারে ৪৮ হাজার ১৬৫ কিলোমিটার পথ পেরিয়েছেন কৃষ্ণ কুমার।


আরও পড়ুন: এই পরিবারের পাঁচ সদস্য আজও আদিম মানুষের মতোই চার পায়ে চলে! কারণ...


এই দীর্ঘ যাত্রাপথে কৃষ্ণ কুমার মাকে নিয়ে রাত কাটিয়েছেন দেশের বিভিন্ন তীর্থস্থানের মঠে বা মন্দিরে। দেশের উত্তর-পূর্বের মানুষের আন্তরিকতা মুগ্ধ করেছে কৃষ্ণ কুমার ও তাঁর মাকে। মাতৃভক্তির নজিরবিহীন এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নজর করেছে হাজার হাজার মানুষের। কৃষ্ণ কুমার জানিয়েছেন, এর জন্য কারও কাছ থেকে কোনও রকম আর্থিক সাহায্য নিতে চান না তিনি। নিজের সামর্থ অনুযায়ী মায়ের সাধ পূরণ করতে চান তিনি। এ দিকে এই ঘটনা ইতিমধ্যেই কানে পৌঁছেছে মহিন্দ্রা সংস্থার কর্ণধার আনন্দ মহিন্দ্রারও। কৃষ্ণ কুমারের এই কাজে আপ্লুত তিনি। আনন্দ মহিন্দ্রা জানিয়েছেন, নিজের সংস্থার একটি স্কুটার কৃষ্ণ কুমারকে উপহার হিসেবে দিতে চান তিনি।