পূষন


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

লনে পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে অবিনাশ প্রশ্ন করলেন নলিনীকে, “আচ্ছা, তুমি কখনও ভেবেছিলে, পঁয়ত্রিশ বছর পরে আমাদের এভাবে আবার দেখা হবে?”


নলিনী বললেন, "এভাবে হবে জানতাম না। বৃদ্ধাশ্রমে এসে তোমার সাথে ফের দেখা হয়ে যাবে--এতটা ভাবতে পারিনি।………তুমি ভেবেছিলে?”


--”না। সেদিন তোমায় এখানে দেখে তো আমি অবাক! ভগবানের খেলা আর কী!”


হালকা হাসলেন নলিনী,"ভগবান তাহলে আছেন?”


হাসলেন অবিনাশও, "আছেন। না হলে এভাবে দেখা হয়?”


চোখ না সরিয়েও অবিনাশ বুঝলেন, নলিনীর সপ্রশ্ন দৃষ্টি এখন তাঁর মুখের উপর। তিনি বলে চললেন," আসলে আগের অনেক অবাস্তব জিনিসকেই এখন বাস্তবিক মনে হয়। যেমন, অদৃষ্ট, ভগবান ...”


--”আর প্রেম? এখনও ‘ভুল’ বলবে?”


--”উহু, ভ্রম। কিন্তু আজকে ভাবি, জীবনের ওই ভ্রমটাই জীবনসত্যের সবচে’ কাছাকাছি কাউকে পৌঁছে দিতে পারে... দেয়ও।”


সন্ধ্যা সমাগতা। দু’জনে বসলেন লোহার বেঞ্চটায়।


--”নলিনী,আমাদের বিয়েটা না হওয়ায় তোমার কি এখনও দুঃখ হয়?”


--”না। তা’লে আজ খুব একা লাগত। …… আমি না হয় বিধবা হয়েছি, তুমি জীবনভর একা থাকলে; আফসোস হয় না?”


--”হ’ত। আজ আর নেই …... আমরা যে-যার-মত আলাদা-আলাদাভাবে এতকাল তো বাঁচলাম, কিন্তু দ্যাখো, শেষবেলায় জীবন আমাদের ফের মিলিয়ে গেল...”


--”হ্যাঁ...”


পূর্বের মৃদু অন্ধকারে চাঁদ উঠ’ল নিঃশব্দে। সেই মুহূর্তে বেঞ্চে বসা দু’জনের কয়েকটি আঙুল পরস্পরকে অবলম্বন করতেই চৈত্রের উত্তাল হাওয়ায় কথা বলে উঠল অনেকগুলো বিগতবসন্ত।


বসন্তরা বোধহয় এ’রকমই ...…  ‘ফুরায় শুধু চোখে’।