জ্যোতিষ বলয়
অমৃতা ভট্টাচার্য্য
“আমি কিন্তু মাঙ্গলিক।”- প্রমিতার গলার স্বরে সামান্য উত্তেজনার সুর।
ধীর স্বরে বলে উঠল পার্থ –“আমি এসব বিশ্বাস করি না।”
“বিশ্বাস আমিও করি না। কিন্তু এই কারণেই আমার আগের সম্বন্ধটা ভেঙ্গে গেছে। ধনঞ্জয় নামে এক জ্যোতিষী বলেছে আমার সাথে বিয়ে হলে নাকি প্রচুর অঘটন ঘটবে।”
“আপনি তাই রিগ্রেট করেন নাকি?”
“মাথা খারাপ! এরকম সম্বন্ধ ভেঙেছে বাঁচা গেছে। এন্ড দ্যাট ব্লাডি ধনঞ্জয়-”
“আহা ওনাকে গালি দিচ্ছেন কেন? ওনার তো ওটা প্রফেশন!”
“যতসব বুজরুকি। কিসব ভুলভাল শ্লোক-টোক শুনিয়ে-”
“শ্লোক ভুল একথা আপনাকে কে বলল?”
“আপনি তখন দিয়ে জ্যোতিষীর হয়ে কথা বলছেন কেন বলুন তো? এদিকে তো বলছেন এসবে বিশ্বাস করেন না”- প্রমিতার ভুরুতে সন্দেহের ভাঁজ দেখা দিল।
খুব শান্তভাবে প্রমিতার চোখে চোখ রাখল পার্থ- “পার্থই তো ধনঞ্জয়।”
“মানে?”- প্রায় চিৎকার করে উঠল প্রমিতা।
“দেখুন চাকরির যা মার্কেট তাই এই প্রফেশনটাই বেছে নিলাম।”
“কি জালি আপনি! ফলস চুল-দাঁড়ি লাগিয়ে- ইস!”
“আমার কিন্তু প্রথম দেখাতেই আপনাকে ভালো লেগে গেছে।”
“শাট আপ!”
“আপনার মত কুসংস্কারমুক্ত আধুনিকমনস্কা-”
“থামুন”- প্রমিতার ভুরুতে তীব্র ভাঁজ। অথচ কোন মহাজাগতিক রহস্যে কে জানে তার ঠোঁটের কোণে হাল্কা হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। জ্যোতিষী ধনঞ্জয় তাই বলতে শুরু করল- “অজ নিত্য শাশ্বত-”
“শ্লোক শোনাবেন না প্লিজ”- প্রমিতার অনুরোধের ভঙ্গিমায় হেসে উঠল পার্থ। হাসল প্রমিতাও... ‘ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে’!