রুবি সাহা রয়


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বাঁধাধরা নিয়মের জীবন থেকে বেরিয়ে এসে আজ একটু অন্যরকম হওয়ার চেষ্টায় মৌ ঠিকই করে নিল আজ অফিস যাবে মেট্রোয়। তাই যেমন ভাবনা তেমন কাজ। ঋষিকে জানিয়ে দিল আজ তোমার আমাকে অফিসে ড্রপ করতে হবে না। আমি ব্যাঙ্কের কাজ সেরে ওলা নিয়ে অফিস চলে যাব। একটু মিথ্যের আশ্রয় নিলে মাঝেমাঝে জীবনটা আরও সুন্দর, আরও রঙিন হয়ে ওঠে।
      
আজ সাজটাও নজর কাড়ল মৌয়ের নিজেরই। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করল, "কি ব্যাপার মৌ আজ কারোর সাথে দেখা করার ব্যাপার নাকি?" হাসি এল মনে মনে, ক্লাস টেনে পড়া মেয়ের মা আর প্রেম! তাড়াতাড়ি বেরিয়ে শোভাবাজার মেট্রোর উদ্দেশে রওনা দিল, ঋষিও কোনো আপত্তি করল না আজ।


মেট্রোয় অফিস টাইমের ভিড় ছিল ঠিকই, কিন্তু মিনিট খানিক পরে একটা সিট জুটে গেল কপালে। আর ভিড়টাও চাঁদনি আসতে আসতে একটু কমতে লাগল।


রুমাল দিয়ে মুখটা মুছতে মুছতে অজান্তে বিপরীত দিকে সিটে বসে থাকা গোল্ডেন ফ্রেমের দিকে চোখটা পরতেই বুকটা কেমন ঢিপঢিপ করে উঠল মৌয়ের। এ কাকে দেখছে মৌ? সেই ছাব্বিশ বছর আগের কৃষ্ণেন্দুকে! তাঁরও তো দৃষ্টি স্থির বিপরীত দিকে চেয়ে।


কিছুটা সাহস জড়ো করে কৃষ্ণেন্দু ইশারায় প্রশ্ন করল কেমন আছ? ইশারায় উত্তর, "ভালো"। তারপর হাজার কথার ঝড় উঠল চারটে চোখ আর দুটো মন জুড়ে, ততক্ষণে পার্কস্ট্রিট এসে গেছে, নামতেও হবে দুজনকেই। অনভ্যাস... তাই ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে হোঁচট খেল মৌ। ভাগ্যিস কৃষ্ণেন্দু হাতটা ধরে ফেলেছিল।
   
কখন যে স্টেশন থেকে বেরিয়ে এসেছিল দুজনেই খেয়াল নেই। হঠাৎ মৌ বলে উঠল, "ফুটপাতটা এবার পেরোতে হবে। এবার হাতটা ছাড়ো কৃষ্ণেন্দু। আমায় যে যেতে হবে।" হাসিটা আজও একই আছে কৃষ্ণেন্দুর। হাতটা অনিচ্ছাসত্বেও ছেড়ে দিতে দিতে  বলে উঠল, " সাবধানে পারবে তো যেতে?"


মৌ কোনও সাড়া না দিয়ে ফুটপাতটা পেরিয়ে চলে গেল ঠিকই, ভিড়ে মিশে গেল কৃষ্ণেন্দুর চোখ থেকে... শুধু মন দুটো একে অপরকে বলে উঠল " তুমি ভালো থেকো, আমি ভালো নেই।"