সুভাষ ভান্ডারী


দ্বিতীয় সিগারেটটা মুখে নিয়ে সবেমাত্র দেশলাইয়ের কাঠিটা ডান হাতের দু'আঙুলে ধরেছি... এমন সময় ছেলেটা একমুখ হতাশা নিয়ে আমার কাছে এগিয়ে এল।
.........
দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে মাঝে মাঝে পরিবেশ দূষণে সামিল হতে এসে বসি ঝিলের পাড়ের কোনও একটা চাতালে। সবুজ ঘাসে তখন কলেজ পড়ুয়ারা শব্দ আর দৃশ্য দূষণে মত্ত। কিছু ছেলের খেলার চোটে কোথাও কোথাও টাক পড়ে গেছে মাঠের সবুজ উঠে গিয়ে। আমি ওদের ব্যস্ততাকে পিছনে রেখে জলের উপর হাওয়ার খেলা নিয়ে মেতে আছি। দু-একবার চোখ গিয়েছিল ছেলেটার দিকে। পায়চারি করছিল পাথরের টালির ওপর ফুটপাত ধরে।
.........
'দাদা, আগুনটা হবে'
কাঠিটা নেভানোর আগে ওর হাতে দিলাম।
ও ও একটা সিগারেট ধরাল।
এক টান দিয়েছে কি দেয়নি, হঠাত দেখি সেটাকে নেভাতে ব্যস্ত।
পিচ পিচ করে দু'বার থুথু ফেলে পূর্বের অবস্থায় ফিরতে চাইছে বুঝলাম।
এমনিতেই ছেলেটাকে খুব সাধারণ মনে হয়েছিল।
পরনে জিনস, চেক শার্টের গোটানো হাতা আর পায়ে চপ্পল।
ওর দিকে তাকিয়েই বুঝলাম ও যার দিকে তাকিয়ে, সে এগিয়ে আসছে ওর দিকে।
ওঃ এই ব্যাপার!!
এখানেই আমি থেমে গিয়ে দিনের সাথে লড়ে যাওয়া সূর্যের জলছবি দেখায় মন দিলাম, জ্বলন্ত ফিল্টারটা জলে বিসর্জন দিয়ে...
.........
'তুমি জানো কটা বাজে এখন?
কখন থেকে অপেক্ষা করছি এখানে!
এই এখন তোমার আসার সময় হল?'
আমি দ্বিতীয়বার ওদের বিষয়ে কান গলালাম।
নির্লজ্জ মেয়েটি ছেলেটির প্রায় বুকের কাছ ঘেঁসে চোখের দিকে তাকিয়ে জবাবে বলল, 'তোমাকে পাওয়ার জন্য যে এত বছর আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে... তার বেলা?'