নিজস্ব প্রতিবেদন: পুরীর রথযাত্রার ইতিহাসে এই প্রথম হয়তো কোনও রকম ভক্ত সমাগম ছাড়াই পালিত হচ্ছে এই অনুষ্ঠান। তবে একটা সময় সব মিলিয়ে প্রায় ৩২ বছর বন্ধ রাখতে হয়েছিল পুরীর ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ইতিহাস বলছে, ১৫৬৮ সাল থেকে ১৭৩৫ সালের মধ্যে মোট ৩২ বছর বন্ধ হয়ে গিয়েছে পুরীর রথযাত্রা। কারণ, হিসাবে সামনে এসেছে সে সময়ের ভারতের ইসলামিক শাসকদের হামলা।


১৫৬৮ সালে বাংলার সুলতান সুলেইমান কিররানির জেনারেল কালা পাহাড় হামলা চালান পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। সেই সময় হামলার হাত থেকে দেব-বিগ্রহ রক্ষা করতে ১৫৬৮ থেকে ১৫৭৭ সাল পর্যন্ত— টানা ৯ বছর বন্ধ রাখতে হয়েছিল পুরীর রথযাত্রা।


১৬০১ সালে তত্‍কালীন বাংলার নবাবের সেনাপতি মির্জা খুররাম পুরীর মন্দিরে হামলা চালায়। দেব-বিগ্রহগুলিকে রক্ষা করতে পুরী থেকে ১৩-১৪ কিলোমিটার দূরে কপিলেশ্বরের পঞ্চমুখী গোসানি মন্দিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার বিগ্রহ। ফলে সে বছরও রথযাত্রা বন্ধ ছিল।


১৬০৭ সালে ওড়িশার মুঘল সুবেদার কোয়াসিম খানের হামলার হাত থেকে রক্ষা করতে জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার বিগ্রহগুলিকে লুকিয়ে খুড়গার গোপালা জিউ মন্দিরে সরিয়ে নেওয়া হয়। ফলে সে বছরও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রথযাত্রা।


১৬১১ আর ১৬১৭ সালে ওড়িশার মুঘল সুবেদার কল্যান মল হামলা চালান পুরীর মন্দিরে। সে সময় মন্দিরের মূর্তিগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় চিলিকা হৃদের মাহিসানসিতে। ফলে ওই দুই বছরও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রথযাত্রা।


এর পর ১৬২১ এবং ১৬২২— এই দুই বছর সুবেদার আহমেদ বেগের হামলা থেকে বাঁচাতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি সরিয়ে ফেলা হয় বানাপুরের আন্ধারিয়া গড়ে। ফলে ওই দুই বছরও বন্ধ হয়ে যায় পুরীর রথযাত্রা।


আরও পড়ুন: শুধু করোনা নয়, আরও চার মহামারিতে প্রাণ হারিয়েছেন ভারতের লক্ষ লক্ষ মানুষ!


ওড়িশার মুঘল সুবেদার একরম খানের হামলা থেকে পুরীর মন্দিরের মূর্তিগুলিকে বাঁচাতে সেগুলিকে সরিয়ে ফেলা হয়। ফলে ওই সময় ১৬৯২ সাল থেকে টানা ১৩ বছর বন্ধ ছিল পুরীর রথযাত্রা।


১৭৩১ এবং ১৭৩৩ সাল থেকে ১৭৩৫ সাল পর্যন্ত ওড়িশার ডেপুটি গভর্নর মহম্মদ তাকি খান পুরীর মন্দিরে হামলা চালান। ফলে সেই বছরগুলিতেও বন্ধ হয়ে যায় পুরীর রথযাত্রা। তবে ১৭৩৫ সালের পর থেকে আর কখনও বন্ধ হয়নি এই ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা!