বিশ্বনাথ পাকড়াশি


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আজ যেন বড্ড আস্তে ফোঁটা পড়ছে। ষ্ট্যান্ডে ঝোলানো বোতলের দিকে ব্যাকুল চোখ নমিতার। মণিবন্ধের সূচিপথে তরল চারিয়ে যাচ্ছে। হাতে অসহ্য টনটনানি - আর কতক্ষণ?


কেমোথেরাপি ডে-কেয়ার ইউনিট। পর্দাঘেরা খোপে খোপে খন্ডিত শীতল বাতাস। তবু অল্প দোল খায় পর্দা। নমিতার চোখে পড়ল, পাশের বেডে পুরুষ। কাঁচাপাকা কুঞ্চিতকেশ। হঠাৎ করে মনটা বেলাগাম, পঁয়ত্রিশ বছর পিছনে। আচ্ছা, স্প্রিংচুলের বিজুদার সঙ্গে বিয়েটা ঘটলে এইসময় পরিস্থিতি কেমন দাঁড়াত! কল্পনার ডানা ছাঁটল বাড়ির নিষেধাজ্ঞা, 'কোষ্ঠি মেলেনি। বিজন স্বল্পায়ু। সম্পর্কটা ভুলে যাও।'
             
ছোটছেলে বুকাই খুব মিশুকে। হলের অন্য রোগীদের সঙ্গে কথা বলছিল। এতক্ষণে পর্দা ঠেলে ঢুকল। নীচুগলায় বলল, 'মা, পাশের বেডের ভদ্রলোকের বাড়ি তোমাদের পুরোনো পাড়ায়। ওনারও প্রতি বুধবার ডেট।'
      
'রোগটা কোথায়? '
'ওনারও লিভারে।'
'ওহঃ... '
পরের বুধবার হাসপাতালে আসতে বিরক্তি নেই নমিতার। ফ্যাঁকফেকে ফর্সা, এ বিজুদা -ই হবে। শেষপর্যন্ত এখানে দেখা! সহজভাবে কথা বলাই যায় এখন। বিজুদা কি জানে, বাবা-মায়ের দীর্ঘায়ু পাত্র বিয়ের পর টিঁকেছিল ছ'বছর মাত্র। তারপর তো তিন মহাভারত পর্ব। বিজুদা যদি একটু দৃঢ়তা দেখাত তখন...
        
অল্পবয়সী নার্স চ্যানেল করছিল, নমিতা জিজ্ঞেস করেন, 'প্রতি বুধবার বিজনবাবু আসেন, আজ এলেন না?'
মেয়েটি বলল, 'এখানে এরকম হয় জেঠিমা। রেগুলার আসছেন, হঠাৎ ড্রপড। আমরাও খোঁজ করিনা।'
অনেক প্রশ্ন নমিতার গলায়। মেয়েটি নিরুত্তর। ব্যস্ত পায়ে এগোলো অন্য বেডের দিকে। চ্যানেলছাড়া বাঁ-হাত দিয়ে চোখ ঢাকলেন নমিতা। (আরও পড়ুন- সাক্ষী)