সিদ্ধান্ত
পার্থ নিয়োগী
আমি জোনাকি, মাসিমার দেখাশুনা করি। আপনাকে এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে এলাম। উনি আপনার লন্ডনে অধ্যাপনার সিদ্ধান্তে মনমরা হয়ে পড়েছেন। আপনি যে ইন্টারভিউ দিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন কেউ ভাবিনি।
আসলে শিলিগুড়িতে অধ্যাপনার চাকরিটা পাওয়ার পর মেয়ের বাবারা চেপে ধরেছিল। তার সাথে মার সুপারিশ জুনমাসির মেয়ের জন্য। তিতিবিরক্ত জয়ন্ত কলকাতার পাট চুকিয়ে পাকাপাকি ভাবে বিদেশে পারি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তখনি।
ফ্রেশ হয়ে জোনাকির তৈরী চা ফ্লাস্ক থেকে ঢেলে ছাদে উঠে এসে দেখলেন জোনাকি যোগাসন করছে। সকালের নরম আলোয় ওকে সুন্দর দেখাচ্ছিল। চোখাচোখি হতেই তারিফের সুরে বললেন "আমিও তোমার সাথে যোগাসন করব জোনাকি"। জোনাকি এক কথায় রাজি কিন্তু মনে করিয়ে দিতে ভুলল না "এর জন্য কঠিন সংকল্পবোধ চাই।"
দুপুরে জয়ন্তবাবু জোনাকিকে চাইনিজ ডিনারের প্রস্তাব দিলেন। জোনাকির গলায় অভিমান "আমার রান্না এতটাই খারাপ জয়ন্তবাবু"। জয়ন্তবাবু লজ্জা পেলেন। সত্যি বলতে জোনাকির রান্না অপূর্ব। কথা ঘোরাবার জন্য বললেন "তুমি কতদূর লেখাপড়া করেছ জোনাকি?" পাশের ঘর থেকে মা বললেন "প্রথম বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে আর সুযোগ হয়নি রে। জয়ন্তবাবু বললেন "একই অঙ্গে এত রূপ। আমি তোমাকে পড়াব জোনাকি"। উত্তরে জোনাকি বলল "আমি রাজি কিন্তু আপনাকে পাশে থাকতে হবে"। জয়ন্তবাবু সবাইকে অবাক করে দিয়ে বললেন "তোমাকে দেখে আমি বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেলেছি জোনাকি”। শুনে জোনাকি আনন্দে নেচে উঠল। আধশোয়া জয়ন্তবাবুর মায়ের চোখ দিয়ে দু’ফোটা আনন্দাশ্রু নেমে এল।