জামিনের আবেদন নাকচ, ১৪ দিনের জেল হেফাজত প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতার
`শ্রীকান্ত মোহতার কেস ডায়রির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ্য আদালতে বলা সম্ভব নয়।` দাবি সিবিআই আইনজীবীর।
নিজস্ব প্রতিবেদন : রোজভ্যালিকাণ্ডে ধৃত এসভিএফ কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল ভুবনেশ্বরের আদালত। ধৃত প্রযোজককে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কসবায় এসভিএফ-এর অফিস থেকেই শ্রীকান্ত মোহতাকে সিজিও কমপ্লেক্সে তুলে নিয়ে যায় সিবিআই। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। রাতভর জেরার পর এদিন দুপুরে এসভিএফ কর্ণধারকে নিয়ে ভুবনেশ্বর উড়ে যান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারী অফিসাররা।
এদিন ভুবনেশ্বর আদালতে শুনানির সময় ধৃত শ্রীকান্ত মোহতাকে নিজেদের হেফাজতে চায়নি সিবিআই। বদলে জেল হেফাজতের আবেদন জানানো হয় সিবিআই-এর তরফে। সিবিআই-এর আইনজীবী দাবি করেছেন, স্বাস্থ্যের কারণেই ধৃত শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধারকে সিবিআই হেফাজত চাওয়া হয়নি।
অন্যদিকে, আদালতে তাঁর মক্কেলের জামিনের জন্য আবেদন করেন শ্রীকান্ত মোহতার আইনজীবী। তিনি দাবি করেন, এসভিএফ-এর সব লেনদেন স্বচ্ছ। কোনও তথ্য প্রমাণ নেই সিবিআই-এর হাতে। আদালতে কোনও তথ্য প্রমাণ-ই পেশ করতে পারেনি সিবিআই। যা খারিজ করে দিয়ে পাল্টা যুক্তি দেয় সিবিআই।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে আদালতে পাল্টা দাবি করা হয়, শ্রীকান্ত মোহতার কেস ডায়রিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। মামলার সেইসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ্য আদালতে বলা সম্ভব নয়। ডায়রি খতিয়ে দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে দাবি করেন সিবিআই আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, এসভিএফ কর্তা শ্রীকান্ত মোহতার বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকার প্রতারণা অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও, সারদা সহ অন্যান্য চিটফান্ড কোম্পানিরও ব্যবসা বাড়ানোর ক্ষেত্রে তিনি সদর্থক ভূমিকা নেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, চিটফান্ড ব্যানিং অ্যাক্ট সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
অভিযোগ, রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুর সঙ্গে ২৪ কোটির চুক্তি হয়েছিল শ্রীকান্ত মোহতার। চুক্তি অনুযায়ী,রোজভ্যালির হয়ে বেশ কয়েকটি ফিল্ম তৈরির কথা ছিল মোহতার। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী কোনও ফিল্মই শুটিং ফ্লোরে যায়নি। চিটফান্ড ব্যবসায় গৌতম কুণ্ডুকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন মোহতা। ব্যবসা বাড়াতে প্রভাবশালীদের সঙ্গে রোজভ্যালি কর্তার পরিচয় করানোরও প্রতিশ্রুতি দেন। সিবিআই জেরায় এসবই জানান রোজভ্যালি কর্তা। শ্রীকান্ত মোহতাকে এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সঠিক উত্তর দিতে পারেননি এসভিএফ কর্ণধার।
আরও পড়ুন, "রাজনৈতিক প্রভাব না মানলে, কাজ পাবে না", SVF কর্ণধারের গ্রেফতারিতে বিস্ফোরক অভিনেত্রী
পাশাপাশি, সারদাকাণ্ডেও নাম জড়ায় অত্যন্ত প্রভাবশালী এই প্রযোজকের। সারদার একাধিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রভাবশালীদের হাজির থাকতে দেখা যায়। এমন বহু অনুষ্ঠানের মধ্যস্থতাকারী ছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা। অভিযোগ, শুধু মধ্যস্থতা করার জন্যই সুদীপ্ত সেনের কাছে কোটি কোটি টাকা আদায় করে নেন মোহতা। সারদার থেকে পাওয়া সেই টাকা কোথায় গেল? কার নির্দেশ এসব অনুষ্ঠানে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করেন তিনি? মোহতার কাছে এসব উত্তর জানতে চায় সিবিআই। এক্ষেত্রেও,সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি শ্রী ভেঙ্কটেশ কর্তা। আর তারপরই গ্রেফতারির সিদ্ধান্ত নেয় সিবিআই।