পঞ্চাশে নকশালবাড়ি
ভারতের আকাশে বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ। নকশালবাড়ির উত্থানের মন্ত্র। ঐতিহাসিক নকশালবাড়ি আন্দোলন, পা রাখল পঞ্চাশ বছরে। কিন্তু বঞ্চনা-অবজ্ঞা-শোষণের ইতিহাস, বদলেছে কি? নামেই শুধু রয়ে গিয়েছে নকশালবাড়ি। আন্দোলন সব শিকেয়।
ওয়েব ডেস্ক: ভারতের আকাশে বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ। নকশালবাড়ির উত্থানের মন্ত্র। ঐতিহাসিক নকশালবাড়ি আন্দোলন, পা রাখল পঞ্চাশ বছরে। কিন্তু বঞ্চনা-অবজ্ঞা-শোষণের ইতিহাস, বদলেছে কি? নামেই শুধু রয়ে গিয়েছে নকশালবাড়ি। আন্দোলন সব শিকেয়।
'....তারপর একদিন সমুদ্রের তপ্ত স্রোতে বাষ্পের নিয়মে
আকাশের পূর্বকোণে লাল মেঘ জমে...কৌরবেরা হতবাক, দালালেরা বিস্ফারিত নেত্র গোগৃহের রণক্ষেত্র...বিরাট কালের অজ্ঞাতবাসের বৃহন্নলা বেশ ছাড়ি গাণ্ডীবে টঙ্কার দিল নকশালবাড়ি।।'
সত্তরের দশক ছিল প্রতিবাদের, আর সে প্রতিবাদের ভাষা ছিল হিংসা। এ বাংলার নকশালবাড়িতে যা হয়েছিল, তাও এককথায় তুলনাহীন।
১৯৬৭ সালের ২৫ মে নকশালবাড়িতে কৃষকরা সংগঠিত হয়ে ভূস্বামী ও তাদের ভাড়াটে গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
এই আন্দোলনকে সংগঠিত করতে ওইদিন প্রথম শহিদ হন ১১ জন।
চিনের মাও সে তুংয়ের নীতি-আদর্শকে অনুসরণ করে সশস্ত্র আন্দোলনের ডাক দেন কানু সান্যাল, চারু মজুমদাররা।
বারুদে আগুন পড়ে, দিকে দিকে ছড়িয়ে যায় এই কমিউনিস্ট আন্দোলনের আগুন।
দিনক্ষণের হিসেবে সেই নকশাল আন্দোলন এবার পঞ্চাশে পা দিল। সেইসময় আন্দোলন দমানোর ইতিহাস আজও গা শিউরে দেয়। তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা, জেলের মধ্যেই খুন বা গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে পিটিয়ে খুন, কী দেখেনি এই আন্দোলন?
আজ আর নেই জমিদার বা জোতদার প্রথা। কিন্তু বঞ্চনা-গঞ্জনা, তার শেষ কোথায়? আজও উন্নয়ন স্তব্ধ এখানে। এক সময়ে কানু সান্যালের ছায়াসঙ্গী হিসেবে কাজ করা শান্তু মুন্ডার আক্ষেপ, সেদিনের আন্দোলনের ছবি এখন ধূসর। ভেঙেচুরে সব শেষ। তৈরি হয়েছে নতুন নতুন মতাদর্শ।
কৃষক রাজ প্রতিষ্ঠা করাই ছিল এই আন্দোলনের একমাত্র উদ্দেশ্য। এখন হাজারটা দল, হাজার গোষ্ঠীর ভিড়ে তা দিশা হারিয়েছে। উন্নয়নের ছিটেফোঁটা নেই। পঞ্চাশ বছর পরও চলছে খুঁড়িয়ে চলা। (আরও পড়ুন-ইতিহাসের সরণি বেয়ে ৫০-এ পা নকশালবাড়ি আন্দোলনের)