নিজস্ব প্রতিবেদন: ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হয়ত এটাই একমাত্র গন্তব্যস্থল। হাতে অফুরন্ত সময় অতীতের স্মৃতি হাতড়ানোর বা দিকশূন্যপুরের যাত্রার দিনগোনা। ষাট পেরলেই অধিকাংশ বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা এভাবেই হয়ত অবশিষ্ট দিন অবহেলায় কাটিয়ে ফেলেন। তবে, কেরলের ষাটোর্ধ্ব ‘নব দম্পতি’ উল্টো পথে হেঁটে বললেন, বালাই ষাট্। বসন্ত এখনও অনেক বাকি!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ত্রিশূরের সরকারি বৃদ্ধাশ্রম রামবর্মাপুরম গভার্নমেন্ট ওল্ড এজ হোম। শনিবার সেখানে ঘটে গেল অভূতপূর্ব ঘটনা। তার সাক্ষী থাকতে কে না ছিলেন! রাজ্যের মন্ত্রী, জেলাশাসক, স্থানীয় মেয়র, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ৬৭ বছর বয়সী কোচিয়ান এবং ৬৫ বছর বয়সী লক্ষ্মী আমল বিয়ে করে বুঝিয়ে দিলেন, বার্ধক্য অবহেলার নয়, প্রতিটি দিন জীবনকে উপভোগ করার। কোচিয়ান ও লক্ষীর এই সিদ্ধান্তে কুর্নিশ জানালেন বিয়েতে উপস্থিতি অতিথিরা।


আরও পড়ুন- খেলো ইন্ডিয়া কর্মসূচি উদ্বোধনে এলে রাজ্যজুড়ে মোদীর বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন, হুমকি আসু-র


একটি মিষ্টি প্রেমের গল্পও রয়েছে কোচিয়ান ও লক্ষ্মীর। এক সময় লক্ষ্মীর স্বামীর সহকারি হিসাবে কাজ করতেন কোচিয়ান। সেই সুবাদেই লক্ষ্মীর সঙ্গে পরিচয়। তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর লক্ষ্মী অবসাদে ডুবে যান। সে সময় কোচিয়ানকে পাশে পায় লক্ষ্মী। তাঁদের মধ্যে গাঢ় হয় বন্ধুত্ব। ২১ বছর ধরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন কোচিয়ান।



তারপর সময় পাকে দূরত্ব বাড়ে দু’জনের মধ্য়ে। ফোন নম্বরও হারিয়ে ফেলেন কোচিয়ান। স্ত্রী মৃত্যুর পর সিদ্ধান্ত নেন বৃদ্ধাশ্রমে থাকার। কিন্তু একদিন কোঝিকোরে রাস্তায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। এক ব্যক্তি সেখান থেকে তুলে ত্রিশূরের বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে যান। যেখানে লক্ষ্মীরও ‘শেষ ঠিকানা’।


ত্রিশূরের হোমে সম্পর্কের জট খুলতেই সতীর্থরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, কোচিয়ান-লক্ষ্মীর সম্পর্ক এ বার পরিণতি পাক। পাশাপাশি, সমাজের কাছেও বার্তা দেওয়া যাবে বার্ধক্য মানেই একাকীত্ব নয়। বন্ধুত্বের আবহেই বাঁচুক জীবন।  বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বিয়ে দেওয়াতে উত্সাহ দিচ্ছে কেরল সরকারের ন্যায় বিচার দফতরও। ২০১৮ সাল থেকে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে একাধিক পদক্ষেপ করছে বিজয়ন সরকার।