নিজস্ব প্রতিবেদন: পুনে, মুম্বই, দিল্লি, ফরিদাবাদ, হায়দরাবাদ ও রাঁচি- দেশের এই শহরগুলি থেকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মীদের। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র, মাওবাদী যোগ এবং ভীমা কোরেগাঁও হিংসায় ইন্ধন জোগানো। বিশিষ্ট কবি ভারাভারা রাও, আইনজীবী সুধা ভরদ্বাজ, সমাজকর্মী অরুণ ফেরেরা, গৌতম নওলাখা এবং ভার্নন গঞ্জালভেসের বিরুদ্ধে 'আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট (ইউএপিএ)' –এ অভিযুক্ত করেছে পুনে পুলিস। এরপরই বিতর্ক আরও চরমে ওঠে। সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, তাঁদের কেন ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত করা হল? দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাঁরা কী এমন ব্যাঘাত ঘটালেন, যে এই মারত্মক আইনে জড়ানো হল মানবাধিকার কর্মীদের, এমনও প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কী এই ইউএপিএ?


১৯৬৭ সালে সংবিধান সংশোধন করে এই আইন নিয়ে আসা হয়। দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা অক্ষুন্ন রাখতে এই আইনের মাধ্যমে নাগরিকের বাক স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণভাবে এক জায়গায় জড়ো হওয়ায় এবং সংগঠন তৈরি করার মতো অধিকার নিষিদ্ধ করা হয়। ‘আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস’ অর্থাত্ আইনবিরুদ্ধ কার্যকলাপ (জঙ্গি কার্যকলাপে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত) লক্ষ্য করা গেলে এই আইনের আওতায় গ্রেফতার করা যায়। জঙ্গি কার্যকলাপে আর্থিক সাহায্য, পরোক্ষভাবে সমর্থন বা ওই সংগঠনের সদস্য হলে এই আইনে অভিযুক্ত করার সংস্থান রয়েছে। ইউএপিএ মামলায় সাধারণত আগাম জামিন পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। এই অভিযোগের প্রাথমিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রমাণ হলে ইউএপিএ-র ৪৩ডি(৫) ধারায় আদালত জামিন সম্পূর্ণভাবে খারিজ করে দিতে পারে। এমনকি অভিযুক্তকে পুলিস হেফাজতে ৩০ দিন পর্যন্ত এবং জেল হেফাজত ৯০ দিন পর্যন্ত রাখার নির্দেশ দিতে পারে আদালত।


সমাজকর্মী অরুণ ফেরেরা, আইনজীবী সুধা ভরদ্বাজ, কবি ভারভারা রাও, সমাজকর্মী গৌতম নওলাখা, লেখক ভার্নন গঞ্জালভেস (বাঁদিক থেকে)

উল্লেখ্য, ওই পাঁচ বিশিষ্টজনকে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে তোলা হবে। জানা যাচ্ছে, বিকেল ৩.৪৫ নাগাদ এই মামলার শুনানি শুরু হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেফতার হওয়া মোট ১০ জনের মধ্যে ওই পাঁচজন বিশিষ্ট জনকে ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মাও যোগ এবং ভীমা কোরেগাঁও ঘটনায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করার জন্য গত জুনে গ্রেফতার করা হয় সুধীর ধবলে, সুরেন্দ্র গদলিং, মহেশ রাউত, রোনা উইলসন এবং সোমা সেনকে। উল্লেখ্য, ৮ জুন উইলসনের বাড়ি থেকে প্রধানমন্ত্রীকে হ্ত্যার ছক কষা একটি চিঠি উদ্ধার করে বলে দাবি করে পুলিস। পুলিসের জানিয়েছে, রাজীব গান্ধীকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল, ঠিক তেমনই ছক কষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও হত্যার কথা লেখা রয়েছে চিঠিতে।  যদিও এই অভিযোগ খারিজ করে কবি ভারাভারা বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার ক্ষমতা মাওবাদীদের নেই।”