১৯১ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণের সময় দু`টুকরো হয়ে গেল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান, মৃত বেড়ে ১৬
অবিরাম বৃষ্টির ফলে বিমানের দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে পৌঁছে গিয়েছিল। বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামাতেও যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছিল।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ভয়াবহ দুর্ঘটনা কবলে পড়ল দুবাই ফেরত এয়ার ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেস বিমান। শুক্রবার ১৮৪ জন যাত্রী ৫ জন কেবিন ক্রু-এবং ২জন পাইলট সহ মোট ১৯১ জন যাত্রী নিয়ে কেরলের কোঝিকোড়ের কারিপুর বিমানবন্দরের অবতরণের সময় রানওয়েতে পিছলে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া বিভীষিকাময় সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে বিমানটি দু' টুকরো হয়ে রানওয়ে ও তার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন পাইলট। দুর্ঘটনার জেরে মোট ১৬ জনের এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর খবর মিলেছে। গুরুতর আহত আরও বহু যাত্রী। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কয়েকদিন ধরেই অবিরাম বৃষ্টির ফলে বিমানের দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে পৌঁছে গিয়েছিল। বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামাতেও যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছিল। এরমধ্যেই শুক্রবার সন্ধ্যে ৭.৪০ নাগাদ বিমানটি রানওয়েতে অবতরণ করার সময় পিছলে যায়। লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইট Rader ২৪ অনুসারে, বিমানটি বিমানবন্দরে বেশ কয়েকবার চক্কর কেটেছিল এবং অবতরণের জন্য দু'বার চেষ্টাও করেছিল। তারপরই সন্ধ্যা ৭:৪০ নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে বিমানটিতে আগুন না লাগায় যাত্রীদের সকলকে উদ্ধার করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই শারজা, দুবাই ও UAE-তে হেল্প সেন্টার খোলা হয়েছে। দুর্ঘটনার কবলে পড়া প্রিয়জনদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে এয়ালপোর্ট কন্ট্রোল নাম্বার ও হেল্পলাইন নাম্বার জানানো হয়েছে। এয়ারপোর্ট কন্ট্রোল নাম্বার: 0483 271 9493, হেল্পলাইন নাম্বার: 056 546 3903, 0543090572, 0543090572, 0543090575। এই মুহূর্তে আহত যাত্রীদের সুস্থ করে তোলার জন্য প্রচুর রক্তের প্রয়োজন। তাই Blood Donors India-র তরফ থেকে সবাইকে রক্ত দেওয়ার জন্য কাছে অনুরোধ করা হয়েছে । সরাসরি যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে Kundotti Mercy Relief Hospital এবং Kozhikode Medical College Hospital-এ।
বিমান দুর্ঘটনার খবর পেতেই কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে ফোন করে খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুর্ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেন। মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইট করেছেন, "কেরলের কোঝিকোড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেস বিমানের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে দুঃখিত। এনডিআরএফকে (ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স) দ্রুত জায়গায় পৌঁছতে এবং উদ্ধারকাজে সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছি।" টুইট করে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোকপ্রকাশ করেন রাহুল গান্ধীও।
ওদিকে দুর্ঘটনার পর পরই তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী তারুর জানান, "২ জন পাইলটেরই মৃত্যু হয়েছে। তবে ১৭৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ৪০ জন যাত্রী গুরুতর আহত।" পরে অবশ্য মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ে। উল্লেখ্য, বিমানচালক ক্যাপ্টেন দীপক শেঠ এয়ার ফোর্সের পাইলট ছিলেন। এর আগে তিনি এয়ারবাস ৩১০ এর পাইলট ছিলেন তারপর তিনি এয়ারবাস ৭৩৭ এর পাইলট হন। AFA এর ' সোর্ড অফ অনার' বিজেতা এই পাইলট দক্ষতার সাথে ফাইটার প্লেন চালিয়েছেন। তিনি হিন্দুস্থান আ্যরোনটিক্স লিমিটেড বা হ্যাল-এর টেস্ট পাইলটও ছিলেন।
আরও পড়ুন, ১২ বছরের 'নির্ভয়া'র অবস্থা সঙ্কটজনক, ফের ক্ষোভে ফুঁসছে দিল্লি