ওয়েব ডেস্ক: জাতীয় ও রাজ্য সড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে মদের দোকান, বার বা পাব নিষিদ্ধ করার সুপ্রিম নির্দেশ নিয়ে সারা দেশে হৈচৈ। এক দিকে রাজ্যগুলি রাজস্ব হারানোর 'শোকে ও শঙ্কায়' বিকল্প পথের সন্ধান করছে (রাজ্য সড়কগুলিকে জেলা সড়কের স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা), আর অন্যদিকে মদ ব্যবসায়ীরা কিংকর্তব্যবিমূঢ়। পাশাপাশি পয়লা এপ্রিল থেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এইসব দোকানে বা বারে কাজ করা প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। এরই মধ্যে, ৫০০ মিটার থেকে দূরত্ব খানিকটা কমানোর আর্জি নিয়ে রাজ্যগুলি সুপ্রিমকোর্টে গেলেও 'জনস্বাস্থ্য' এবং বৃহত্তর মঙ্গলের কথা মাথায় রেখে শীর্ষ আদালত সেই আর্জিতে আমল দেয়নি। কিন্তু এতদিন তো এভাবেই চলছিল তাহলে হঠাত্‍ এমন একটা রায় কেন দিল মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট?


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 


এই কেন-র উত্তর পেতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে আজ থেকে ২১টা বছর। সাল ১৯৯৬, মাসটা অক্টোবর, চন্ডীগড়ের বছর পঁয়ত্রিশের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হরমন সিধু বেড়াতে যান হিমাচলপ্রদেশ। ঘুরতে ঘুরতে পাহাড়ি পথে হঠাত্‍ করেই পথ দুর্ঘনার কবলে পড়েন সিধু। পড়ে যান গিরিখাদে। আর উঠে দাঁড়াতে পারেননি, ডাক্তার বলেন প্যারালাইসিস। তারপর থেকে তাঁর চিরসঙ্গী হুইলচেয়ার। তবে চিড় ধরেনি উইল পাওয়ার-এ। সেই থেকেই তিনি আর পথ নিরাপত্তা হয়ে ওঠে সমার্থক। শুরু হয় 'ক্রুসেড'।



অবিবাহিত হরমন সিধু সুস্থ হয়ে উঠেই গড়ে তোলেন তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন "অ্যারাইভ সেভ"। নিজের রাজ্যে পথ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সেই সংগঠনই রাজ্য ও জাতীয় সড়কের ধারে মদের দোকান ও বার ইত্যাদির বিলোপ চেয়ে মামলা করে পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে। হাইকোর্টের রায় যায় সিধুর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষেই। কিন্তু রায়ে অখুশি হয় পঞ্জাব-হরিয়ানা রাজ্য সরকার, তারা বিচার চাইতে ছোটে সুপ্রিমকোর্টে। আর তারপরই এই সংক্রান্ত আরও কিছু আবেদন একত্রিত করে রায় দেয় সুপ্রিমকোর্ট, দেশ জুড়ে রাজ্য ও জাতীয় সড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে নিষিদ্ধ হয়ে যায় মদের দোকান এবং বার।



সুপ্রিমকোর্টের এই রায়ে যার পর নাই খুশি হরমন। কিন্তু তিনি এও জানিয়ে দিচ্ছেন, তাঁর উদ্দেশ্য মোটেই মদের বিরোধিতা করা নয়। বরং স্বীকার করছেন, তিনি নিজে মদ্যপানে অভ্যস্ত এবং বার-পাবেও নিয়মিত যান। কিন্তু মদ্যপান যখন পথ দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন তিনি তার বিরুদ্ধে। আর তার কথায় রাস্তার ধারের মদের দোকান ও বারগুলি বহু ক্ষেত্রেই গাড়ির চালককে নেশার হাতছানি দেয়। আর তা থেকেই ঘটে একেকটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তবে এই জয়ে খুশি হলেও এখানে থামবেন না হরমন সিধু। তিনি নিশ্চিত, পথই পথ দেখাবে। (আরও পড়ুন- ফের নতুন নোট আনতে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক!)