`ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা সেনা আসলে কবে ঢোকে?`, ২০ জওয়ানের মৃত্যুতে মোদীকে প্রশ্ন সোনিয়ার
`সরকার কি ভারতীয় সীমান্তের উপগ্রহ চিত্র আগে পায়নি? LAC-তে চিনা সেনার সন্দেহজনক গতিবিধি নিয়ে কি কোনও গোয়েন্দা রিপোর্ট ছিল না?`
নিজস্ব প্রতিবেদন : লাদাখে চিনের আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে শুরু হয়েছে সর্বদলীয় বৈঠক। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পাওয়ার, নীতিশ কুমার, উদ্ধব ঠাকরে, কেসিআর, মায়াবতী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রমুখ। যদিও এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পাননি অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও আসাদউদ্দিন ওয়াইসিরা।
বৈঠকের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনাবাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হওয়ার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারকেই কার্যত কাঠগড়ায় তোলেন কংগ্রেস সভানেত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর স্পষ্ট প্রশ্ন, "কবে থেকে চিনা সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকতে শুরু করে? আগ্রাসনের কথা কবে জানতে পারে সরকার? সরকার কি ভারতীয় সীমান্তের উপগ্রহ চিত্র আগে পায়নি? LAC-তে চিনা সেনার সন্দেহজনক গতিবিধি নিয়ে কি কোনও গোয়েন্দা রিপোর্ট ছিল না? সরকারকে কি আগাম সতর্ক করা হয়নি? কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এক্ষেত্রে কি আগাম সতর্ক করতে ব্যর্থ?"
এই মুহূর্তে লাদাখের কি পরিস্থিতি তা দেশবাসী জানতে চায় বলে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন সোনিয়া গান্ধী। একইসঙ্গে চিনের সঙ্গে মোকাবিলার জন্য যে মাউন্টেন স্ট্রাইক কর্প গঠন করা হয়েছিল, তা বর্তমানে কী অবস্থায় আছে? তা নিয়েও প্রশ্ন করেন কংগ্রেস সভানেত্রী। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত লাদাখে পর্যায়ক্রমে কী ঘটেছে না ঘটেছে, সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিরোধীদের অবগত করার দাবি জানান তিনি। লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিন বিরোধীদের 'ব্রিফ' করার কথা বলেন সোনিয়া গান্ধী।
সোনিয়া গান্ধী আরও বলেন, "আরও আগেই এই বৈঠক ডাকা উচিত ছিল। ৫ মে যখন বিভিন্ন রিপোর্টে লাদাখে চিনা সেনার সন্দেহভাজন গতিবিধি সামনে আসতে শুরু করে, তখনই এই বৈঠক ডাকা উচিত ছিল। এরপর ৬ জুন সীমান্তে দুই বাহিনীর কম্যান্ডার বৈঠক করে। এর মাঝে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ৬ জুনের পরেও রাজনৈতিক ও কূতনৈতিক স্তরে চিনের নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। লাদাখে ২০ জন জওয়ান শহিদ হয়ে গিয়েছেন। এটা কাম্য ছিল না।"
একইসঙ্গে কংগ্রেস সভানেত্রী স্পষ্ট জানান, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভারতীয় কংগ্রেস ও সব বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধভাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশে আছে। দেশের জন্য যেকোনও রকম আত্মত্যাগে কংগ্রেস প্রস্তুত। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের কাছে এখন দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ ভারতের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা-ই সরকারের প্রথম দায়িত্ব। তাই দেশবাসী ও বিরোধীদের সবকিছু সম্পর্কে অবগত করা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাথমিক কাজ।
আরও পড়ুন, 'লাদাখ দিয়ে সূচনা, চিনের টার্গেট হাতের ৫ আঙুল,' সতর্কবার্তা তিব্বত প্রধানের