নিজস্ব প্রতিবেদন: জেটগতির যুগ। ফোর জি স্মার্টফোনে হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকে খোলা আকাশ। কিন্তু কি যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়েছে ভারতীয় সমাজ? আদ্যিকালের ধ্যানধারণা থেকে কতটা মুক্ত হতে পেরেছি আমরা? যুক্তি-তর্কের মাঝেই অনলাইন পণ্য বিপণী সংস্থা আমাজনের  একটি 'প্রোডাক্ট'ই যেন বেআব্রু করে দিল যাবতীয় আধুনিকতার মোড়ক। আই-ভার্জিন নামে একটি ট্যাবলেটের বিক্রি শুরু হয়েছে আমাজনে। তার কার্যকারিতা শুনেই অনেকেই থ। ওই ট্যাবলেটটি খেলে বিয়ের প্রথম রাতে নিজের 'সতীত্ব'-এর প্রমাণ দিতে পারবেন মহিলারা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ভারতীয় জনমানসে প্রবল বিশ্বাস, বিয়ের প্রথম রাতের মিলনে মহিলার যোনি থেকে রক্তপাত হলে তিনি 'দুশ্চরিত্র' নন। অক্ষত রয়েছে তাঁর সতীচ্ছদ। প্রথম রাতে তাই বহু নারীকেই সাদা বিছানার চাদর রক্তাক্ত করে প্রমাণ দিতে হয় তাঁর 'চরিত্র' একেবারে ঠিক। 'সতীত্ব' অক্ষত রয়েছে। আর রক্তপাত না হলে স্ত্রীকে সন্দেহের নজরে দেখেন বহু পুরুষ। 'দুশ্চরিত্র', 'কুলটা' তকমা দিয়ে ফেলেন। বলে রাখি, হাইমেন অক্ষত রাখার ধারণাটির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি একেবারেই নেই। যৌনমিলন ছাড়াও সাইকেলিং, কসরত, সাঁতার ইত্যাদির জন্য সতীচ্ছদ অক্ষত নাও থাকতে পারে। অথচ সমাজ!  


আর সেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বস্তপচা মানসিকতার সঙ্গে বাণিজ্যের মেলবন্ধন ঘটিয়েছে আই-ভার্জিন। পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে আমাজনে। দাম ৩,৬০০ টাকা। ৫০০ টাকা ছাড় দিয়ে তা পড়ছে ৩,১০০ টাকায়। কার্যকারিতা শুনলে মনে হবে সেই আদিম যুগে ফিরে গিয়েছি! তাদের দাবি, সতীচ্ছদ অক্ষত না থাকলেও এটি ব্যবহার করলে প্রথম রাতে রক্তপাত নিশ্চিত। কোনওরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। শল্য চিকিত্সা না করিয়ে সহজেই কার্যসিদ্ধি। 



ট্যাবলেটটির গুণাগুন দেখে আঁতকে উঠেছে অনেকেই। নারী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতরা মনে করছেন, মহিলাদের ক্ষমতায়নে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। তখন এই ধরনের পণ্য মহিলাদের আরও একধাপ পিছিয়ে দিচ্ছে। 



অনেকেই হয়তো ভাবছেন শিক্ষার অভাব! না, সেটা নয়। বরং শহরেই গজিয়ে উঠেছে একাধিক নার্সিংহোম। যেখানে হাইমেন আবার তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। মোটা টাকা দিয়ে সেই পরিষেবা নিচ্ছেনও বহু মহিলা। সামাজিক চাপের মুখে নতজানু হচ্ছে শিক্ষিতরাও। আরও অবাক হবেন! মহারাষ্ট্রের কনজারভাট সম্প্রদায়ের মহিলাদের বিয়ের আগে সতীত্বের প্রমাণ দিতে হয়। কয়েক শতক ধরে চলে আসছে প্রথা। বিয়ের আগে সাদা চাদরে নারীর সতীত্বের পরীক্ষা নেন স্বামী। প্রমাণ দিতে না পারলে বিয়ে ভঙ্গ। ওই সম্প্রদায়ের নতুন প্রজন্মের মধ্যে উঠেছে বিদ্রোহের আগুন। 


আরও পড়ুন- Exclusive: একুশে তৃণমূলের পোক্ত ডিফেন্স ভাঙতে বিজেপির ছক ৪-২-৪