রাফালের বরাত প্রতিরক্ষামন্ত্রক নয়, ফরাসী সংস্থাই দিয়েছে, জানাল অনিলের রিলায়্যান্স
চুক্তি মোতাবেক ৩৬টি যুদ্ধবিমান রফতানি করবে ফরাসী সংস্থা ডসাল্ট।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে রাজনৈতিক তরজায় নয়া মাত্রা যোগ করল অনিল অম্বানির রিলায়্যান্স গ্রুপ। তারা জানাল, রাফাল বিমানের যন্ত্রাংশ নির্মাণের বরাত তাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে পাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে তারা বরাত পায়নি বলে স্পষ্ট জানিয়েছে অনিলের সংস্থা। তাদের দাবি, ওই বরাত ফরাসী সংস্থা ডসাল্টের কাছ থেকে পেয়েছে তারা। অনভিজ্ঞতার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালকে বরাত দেওয়া হয়নি। চুক্তিপত্রে রফতানি সংক্রান্ত যে শর্ত রয়েছে, তা পূরণ করতে রিলায়্যান্সকে বেছে নিয়েছে ডসাল্ট। এর পিছনে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের কোনও ভূমিকা নেই।
রিলায়্যান্স ডিফেন্স লিমিটেডের সিইও রাজেশ ঢিংরা বলেন, চুক্তি মোতাবেক ৩৬টি যুদ্ধবিমান রফতানি করবে ফরাসী সংস্থা ডসাল্ট। ভারতের বিমানটি নির্মাণ করা যাবে না। তাই হ্যাল বা অন্য কোনও সংস্থা নির্মাণকারী হতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, ''১২৬ মিডিয়াম মাল্টি-রোল কমব্যাট যুদ্ধবিমান কর্মসূচিতে হ্যালকে বাছা হয়েছে। চুক্তিতে যে শর্ত, তা পূরণ করতে পারেনি ওরা। ৩৬টি রাফাল বিমান সংক্রান্ত কোনও বরাত রিল্যায়ান্স ডিফেন্সকে দেয়নি প্রতিরক্ষামন্ত্রক। সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন''।
যুদ্ধবিমান নির্মাণের অভিজ্ঞতা নেই রিল্যায়ান্সের। তা স্বীকার করে ঢিংরা বলেন, ''হ্যাল ছাড়া যুদ্ধবিমান নির্মাণের অভিজ্ঞতা ভারতের আর কোনও সংস্থার নেই। আমরা নতুন কিছু করার চেষ্টা করছি না। ৭০ শতাংশেরও বেশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম দেশে আমদানির প্রক্রিয়াই চালিয়ে যাব। ডসাল্ট রিলায়্যান্স এরোস্পেস লিমিটেডে ৪৯ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে ডসাল্টের। তাদের ৯০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর ফলে যোগ্যতম সংস্থা হয়ে উঠেছি''। চুক্তি থেকে রিলায়্যান্স ৩০ হাজার কোটি টাকা লাভ করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ঢিংরা।
রাফাল বিমানচুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে কংগ্রেস। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নিয়ম করে মোদী সরকারকে নিশানা করছেন রাহুল গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, ইউপিএ জমানার চুক্তিবদ্ধ অর্থের চেয়ে চড়া দামে রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে মোদী সরকার। একটি বিশেষ ব্যবসায়িক সংস্থাকে সুবিধা করে দিতেই দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে। গতসপ্তাহে রাফাল যুদ্ধবিমান চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যুগ্ম সংসদীয় কমিটির তদন্ত দাবি করেছে কংগ্রেস।
অম্বানির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর 'সখ্যতা' নিয়ে কংগ্রেস যে অভিযোগ তুলেছে, তা খণ্ডন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে ভারতীয় সহযোগী বেছে নেয় বিদেশি সংস্থাই। এব্যাপারে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের কোনও ভূমিকা নেই। ৫০টিরও বেশি চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়া বজায় রয়েছে।
আরও পড়ুন- দেশের প্রতি টান নেই, 'গৃহযুদ্ধ-রক্তগঙ্গা' মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মমতাকে খোঁচা মোদীর