মানব পাচার-বিরোধী বিল পাশ লোকসভায়, যৌনকর্মীদের আশ্বস্ত করলেন মানেকা
মানব পাচারের মোকাবিলায় কড়া কেন্দ্রীয় সরকার।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মানব পাচারের মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার লোকসভায় পাশ হল নতুন আইন। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী আশ্বাস দেন, এই আইনে হেনস্থার শিকার হবেন না যৌনকর্মীরা। এই বিলের পোশাকি নাম Trafficking of Persons বা মানবপাচারকারী (প্রতিরোধ, নিরাপত্তা ও পুনর্বাসন) বিল ২০১৮। এর জেরে এবার থেকে মানব বিক্রি ও ক্রয় আদালতগ্রাহ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। অর্থাত্ পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারবে পুলিস। তদন্তের ক্ষেত্রে লাগবে না আদালতের অনুমতি।
মানবপাচারের মামলার শুনানির সময়ে এবার নির্যাতিত পুরুষ বা নারী, অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের পরিচয় গোপন রাখা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুনানি যাতে শেষ হয়, তার ব্যবস্থাও থাকছে। এর পাশাপাশি পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত করা হবে। তাহলে কি যৌনকর্মীরাও আসবেন এই আইনের আওতায়? তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন মানেকা গান্ধী। তিনি বলেন, ''যাঁরা স্বেছায় যৌন পেশায় রয়েছেন, তাঁদের কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু জোর করে কাউকে ফাঁসানো হলে ব্যবস্থা নেবে সরকার।'
জেলা, রাজ্য ও কেন্দ্রীয়স্তরে প্রতিষ্ঠান তৈরির সংস্থান রয়েছে নতুন আইনে। মানব পাচারে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ন্যূনতম ১ লক্ষ টাকার জরিমানা দিতে হবে।
শুধুমাত্র যৌন পেশায় নয়, জোর করে কাউকে শ্রমিকের কাজে লাগালে বা ভিক্ষাবৃত্তি করালেও এই আইনের আওতায় বিচার হবে দোষীর। জোর করে বিবাহ দিলেও তা মানব পাচার হিসেবে গণ্য হবে। মানেকা গান্ধী বলেন,''ট্রাফিক সিগন্যালে শিশুকোলে মহিলাদের দেখি আমরা। শিশুটি ঘুমাচ্ছে বা বোতলে দুধ খাচ্ছে। এই ধরনের শিশুকে দিনপিছু অথবা ঘণ্টার ভিত্তিতে ভাড়া নেওয়া হয়।''
মানেকার দাবি, বেশ কয়েকটি দেশ আমাদের জানিয়েছেন, বিলটি অত্যন্ত ভাল হয়েছে। এই বিলের ভিত্তিতেই নিজেদের দেশে আইনের খসড়া তৈরি করছে তারা।
মানব পাচারে নির্যাতিত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য ১০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। মানেকা গান্ধী আশ্বাস দিয়েছেন, দরকার পড়লে বরাদ্দ অর্থ আরও বাড়ানো হবে। সামাজিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে তাঁদের সুস্থ করার জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে। দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে থাকবে বিশেষ আদালতও।
বিলে অপরাধীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথাও উল্লেখ রয়েছে। তবে মানেকা গান্ধী জানিয়েছেন, নোটিস ছাড়া সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে না। নতুন আইনে কোনও ফাঁকফোকর থাকলে সাংসদের পরামর্শ মেনে সংশোধন করবেন বলেও জানিয়েছেন মানেকা গান্ধী। স্পষ্ট করেছেন, মানবপাচারকারীদের শাস্তির লক্ষ্যেই বিলটি আনা হয়েছে। মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিদের কোনওভাবে হেনস্থা করা হবে না।
সর্বসম্মতভাবে এদিন মানব পাচার-বিরোধী বিলটি পাশ হয়েছে লোকসভায়। তবে বিলটি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানোর দাবি করেছিল সিপিএম। মানেকা হান্ধী বলেন, এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আইন লাগু হলে অপরাধীদের গ্রেফতারির হার বাড়তে থাকবে।
আরও পড়ুন- রাহুলের সঙ্গে আলিঙ্গনাবদ্ধ হলে স্ত্রী ডিভোর্স দেবেন, খোঁচা বিজেপি সাংসদের