অঞ্জন রায়


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে অটল বিহারী বাজপেয়ীর আবেগকে পুরোদমে কাজে লাগাতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। সামনেই তিনটি রাজ্যে ভোট। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিসগঢ়ে সুবিধাজনক অবস্থায় নেই বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ও তিনটি রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে অটল শরণে মোদী-শাহ। শুক্রবার নয়াদিল্লির রাস্তায় নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে ভিড়ের মধ্যে হেঁটেছেন প্রধানমন্ত্রী। আগাগোড়া হাজির ছিলেন শেষকৃত্যে। এবার বাজপেয়ীর চিতাভস্মও ঘটা করে নদীতে ভাসানোর পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। জানা গিয়েছে, ভারতের বিভিন্ন স্থানে ভাসানো হবে চিতাভস্ম। দিল্লি থেকে চিতাভস্ম এনে এই কর্মসূচি পালন করবেন বিজেপির রাজ্য নেতারা। শুধু বাংলা নয়, অন্যান্য রাজ্যের প্রতিনিধিরাও দিল্লির অফিস থেকে চিতাভস্ম সংগ্রহ করবেন।  


শুক্রবার পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর শেষকৃত্য। ৬ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং অন্যান্য বিজেপি নেতারাও। ভিড়ের মধ্যেই দুপুরের গনগনে আঁচে হেঁটেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। অনেকেই বলছেন, সঙ্ঘের প্রচারক হলেও ধর্মনিরপেক্ষ মুখ হিসেবে তুলে ধরতে পেরেছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। তাঁর মৃত্যুর পর যে আবেগ দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে, তা বিলক্ষণ অনুভব করতে পেরেছেন বিজেপি নেতারা। সুকৌশলে বাজপেয়ীর নানা ধরনের ভিডিও ও মেমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বাজপেয়ীর কবিতা থেকে তাঁর জমানার সর্বশিক্ষা অভিযানের বিজ্ঞাপন পর্যন্ত ভাইরাল। রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, অটলের প্রতি দেশের একাংশের এই আবেগকে ব্যবহার করে ভোটে ডিভিডেন্ট তুলতে চাইছে বিজেপি।


শুক্রবার সন্ধেয় আসরে নেমে পড়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। বিবৃতিতে আদিত্যনাথ জানান, উত্তর প্রদেশ ছিল প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর কর্মভূমি। তাই রাজ্যের সমস্ত প্রধান নদীতে ভাসানো হবে অটলজির চিতাভস্ম। একই সঙ্গে অটল বিহারী বাজপেয়ীর শেষ যাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারায় তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন।


আগামী ১৯ অগস্ট অর্থাত্ রবিবার  হরিদ্বারে ভাসানো হবে অটল বিহারী বাজপেয়ীর চিতাভস্ম। যোগী জানিয়েছেন, এরপর আগরায় যমুনা ও চম্বল, ইলাবাদে গঙ্গা, যমুনা ও টোন্স, বারাণসীতে গঙ্গা, গোমতী ও বরুণা, লখনউয়ে গোমতী, গোরক্ষপুরে ঘর্ঘরা, রাপ্তি, রোহিন ও আমি, বলরামপুরে রাপ্তি, কানপুরে গঙ্গা ও যমুনা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন শহরে নদীতে ভাসানো হবে অটল বিহারী বাজপেয়ীর চিতাভস্ম। 


বাংলাও বা পিছিয়ে থাকে কেন? বাংলার নেতাদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি গিয়ে আনতে হবে বাজপেয়ীর চিতাভস্ম। তা ভাসাতে হবে গঙ্গাসাগরে। সোমবার এই কর্মসূচি পালন করবে বঙ্গ বিজেপি। আর তা যে ঘটা করে হবে, তা বলাই বাহুল্য।     


বৃহস্পতিবার দিল্লির এইমসে প্রয়াত হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অটলের প্রয়াণে দল ও দেশের ছড়িয়ে পড়ে শোকের আবহ। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয় শেষকৃত্যের তোড়জোড়। সকালে দিল্লির বাসভবনে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিজেপির নবনির্মিত সদর দফতরে। সেখানে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান হাজার হাজার মানুষ। শেষ যাত্রায় অন্যান্যদের সঙ্গে হাঁটেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বিকেলে দিল্লির রাষ্ট্রীয় স্মৃতি স্থান শ্মশানে পঞ্চভূতে বিলীন হয় অটল বিহারীর দেহ। সমাপন হয় এক যুগের। 


আরও পড়ুন- বঙ্গ বিজেপিতে ব্রাত্য হয়ে গেলেন অটল!