India Vs Bharat: `ভারতের উল্লেখ সংবিধানেই`, ইন্ডিয়া নাম পরিবর্তন বিতর্কে সওয়াল জয়শংকরের!
`সংবিধানেই `ভারত` শব্দটির উল্লেখ রয়েছে। সংবিধানে লেখা, `ইন্ডিয়া যা হচ্ছে ভারত।` তাই এটা সংবিধানেই রয়েছে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, সংবিধানটা একটু পড়ে দেখার জন্য।`
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সংবিধানেই লেখা আছে ভারত। জি২০ নৈশভোজের আমন্ত্রণ পত্রে ইন্ডিয়ার বদলে ভারত লেখায় যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে, সেই প্রসঙ্গে এবার মুখ খুললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখে যে জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিকে নিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়েছে 'প্রেসিডেন্ট অফ ভারত'। সেই কার্ডের ছবি সামনে আসতেই উসকে উঠেছে বিতর্ক। বিরোধীরা দাবি করেছেন, যেহেতু তারা ইন্ডিয়া নামক ব্যানারের নীচে জোট বেঁধেছেন, তাই কেন্দ্রের মোদী সরকার এখন নতুন 'নাটক' শুরু করেছে।
যদিও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের বক্তব্য, ভারতের কথা বলা হয়েছে সংবিধানেই। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জয়শংকর বলেছেন, "সংবিধানেই 'ভারত' শব্দটির উল্লেখ রয়েছে। সংবিধানে লেখা, 'ইন্ডিয়া যা হচ্ছে ভারত।' তাই এটা সংবিধানেই রয়েছে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, সংবিধানটা একটু পড়ে দেখার জন্য।" বিরোধীরা যদিও এভাবে আমন্ত্রণপত্রে 'প্রেসিডেন্ট অফ ভারত' লেখার পিছনে জি২০ সম্মেলনকে সামনে রেখে কেন্দ্রের ভারতকে ইংরাজিতে ইন্ডিয়ার বদলে 'ভারত' হিসেবে পরিবর্তনের প্রয়াস দেখছে। যে প্রসঙ্গে জয়শংকর বলেন, 'যখন আপনি এক অর্থে ভারত বলেন, তখন তার সঙ্গে একটা মানে, একটা উপলব্ধি ও একটা সংজ্ঞা বোঝায় যা আমাদের সংবিধানেও প্রতিফলিত হয়।' তাঁর মতে, "এটা আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল। এতে মনে দারুণ তৃপ্তি এনে দেয়। 'ভারত'-ই হচ্ছে আমাদের মুখ্য পরিচয়। আমরা এরজন্য গর্বিত। রাষ্ট্রপতিও এই 'ভারত'কে গুরুত্ব দিয়েছেন। ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে এটা একটা বড় পদক্ষেপ।'
প্রসঙ্গত, সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসতে চলেছে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর। ওই বিশেষ অধিবেশনেই দেশের নাম ইংরেজিতে 'ইন্ডিয়া' থেকে বদলে হতে চলেছে 'ভারত'। এমনই প্রস্তাব আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনটাই খবর সংবাদমাধ্যম সূত্রে। বিষয়টি যে শুধুই জল্পনা নয় তা নিশ্চিত করেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। ইতিমধ্যেই দেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, শহর, রেল স্টেশনের নাম বদল করেছে কেন্দ্র ও একাধিক রাজ্য সরকার। এবার মোদী সরকারের নজর দেশের নামের দিকে। জি ২০ সম্মেলন উপলক্ষ্যে যে ডিনারের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে সেখানে 'প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া'-র পরিবর্তে 'প্রেসিডেন্ট অব ভারত'-এর তরফে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। অর্থাত্ ইংরেজিতে এখন আমাদের দেশের নাম 'ইন্ডিয়া' নয় বরং তা হল 'ভারত'। এমনটাই জয়রাম রমেশ দাবি করেছেন। কংগ্রেস নেতা আরও ট্যুইট করেছেন, এখন থেকে সংবিধানের ১ নম্বর ধারা এখন এভাবে পড়তে হবে, একসময় ছিল ইন্ডিয়া। এখন হয়েছে ভারত। এটি হবে প্রদেশগুলির ইউনিয়ন। এবার দেশের ইউনিয়ন অব স্টেটও হুমকির সম্মুখীন।
শুধু জি ২০ সম্মেলন উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির ডিনারের আমন্ত্রণ পত্র নয়, এবার আসিয়ানেও 'ভারত'! প্রধানমন্ত্রী মোদীর ইন্দোনেশিয়া সফর উপলক্ষ্যে সরকারি নোটে লেখা হয়েছে 'প্রাইম মিনিস্টার অব ভারত'। ইন্ডিয়া নয়। আসিয়ানে যোগ দিতে আজ ইন্দোনেশিয়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইন্দোনেশিয়া সফরের সেই সরকারি নোটে লেখা হয়েছে প্রাইম মিনিস্টার অব ভারত। প্রাইম মিনিস্টার অব ইন্ডিয়া নয়। অর্থাৎ দেশের নাম ইংরেজিতে ইন্ডিয়া থেকে বদলে ভারত করার দিকে যে কেন্দ্র এগোচ্ছে, তা একপ্রকার স্পষ্ট। এখন দেশের নাম পরিবর্তনের খবর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
আরও পড়ুন, 'মণিপুরে গুরুতর মানবাধিকার লংঘন-ধ্বংস হয়েছে', রিপোর্ট রাষ্ট্রসংঘের কমিটির; খারিজ ভারতের!