নিজস্ব প্রতিবেদন: রবিবার ষষ্ঠ দফায় দিল্লির ৭টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। তার আগেই ৩৫ বছরে আগে দিল্লির বুকে ঘটা শিখ বিরোধী হিংসার স্মৃতি উস্কে শুরু হল জোরদার রাজনৈতিক তরজা। কংগ্রেসের বিদেশ শাখার প্রধান স্যাম পিত্রোদার মন্তব্য ঘিরে কড়া সমালোচনায় নামলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, অরুণ জেটলি প্রমুখ শীর্ষ নেতারা। হরিয়ানার রোহতকের এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “প্রবীণ নেতার ওই তিন শব্দই (হুয়া তো হুয়া) প্রমাণ করে কংগ্রেসের অহঙ্কার। ওই নেতা আবার গান্ধীর পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।”


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


অন্য দিকে অমিত শাহের তির, দেশ কংগ্রেসকে ক্ষমা করবে না। এ ঘটনা শিখ সম্প্রদায়ের যন্ত্রণা বহন করে। স্যাম পিত্রোদার ‘হুয়া তো হুয়া’ মন্তব্যেই প্রমাণ মেলে। হত্যাকারী কংগ্রেসের এই পাপের জন্য দেশ ক্ষমা করবে না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি আবার স্যাম পিত্রোদার ইস্তফার দাবি জানান।


উল্লেখ্য, ৮৪-র শিখ বিরোধী হিংসা নিয়ে বিজেপির দাবি তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর দফতর থেকে শিখ নিধনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে  কংগ্রেসের বিদেশ শাখার প্রধান স্যাম পিত্রোদাকে প্রশ্ন করা হলে অত্যন্ত বিরক্তি সুরে তিনি বলেন, “এটা আরও একটি মিথ্যে প্রচার। ১৯৮৪ সালে কী হয়েছে সেটার চেয়ে কথা বলুন গত পাঁচ বছরের নিয়ে।” এর পর পিত্রোদার মন্তব্য, “১৯৮৪ সালে যা হয়েছে তা হয়েছে। আপনি কী করেছেন সেটা বলুন।” পিত্রোদার এই মন্তব্যে ব্যাপক সমালোচনায় নামে বিজেপি। প্রসঙ্গত, শিখ বিরোধী হিংসায় রাজীব গান্ধী প্রসঙ্গে কোনও উল্লেখ ছিল না নানাবতী কমিশনের রিপোর্টে।


আরও পড়ুন- বোরখা পরে এসে প্রাক্তন প্রেমিকের মুখে অ্যাসিড ছুঁড়লেন যুবতী


খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরেই রাজীব গান্ধীর প্রবেশ ঘটে। আজ বিজেপির অফিসিয়াল টুইটারে শিখ বিরোধী হিংসার ভিডিয়ো পোস্ট করায় বিতর্ক আরও জোরদার হয়। ওই ভিডিয়োয় রাজীব গান্ধীকে বলতে শোনা যায়, একটি বড় গাছ পড়লে, পৃথিবী তো দুলে ওঠেই। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর দিল্লিতে ব্যাপক হিংসা ছড়ায়। ওই ঘটনায় কমপক্ষে ৩০০০ শিখের মৃত্যু হয় বলে জানা যায়।


গত সপ্তাহে এক নির্বাচনী সভায় রাজীব গান্ধীকে এক নম্বরের দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি বলে উল্লেখ করেন নরেন্দ্র মোদী। বফর্স বিতর্ক তুলে রাহুল গান্ধীকে চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দেন তিনি। বলেন, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন রাজীব গান্ধীর খতিয়ান তুলে ধরে ভোটে লড়ুক কংগ্রেস। তাঁর কথায়, ভ্রষ্টাচারী নম্বর ওয়ান হিসাবেই মৃত্যু হয় রাজীবের। প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যে কংগ্রেসের পাশাপাশি সরব হন অখিলেশ যাদব, অরবিন্দ কেজরীবাল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-ও।


আরও পড়ুন- পিত্রোদার মন্তব্যে জোর বিতর্ক, শিখ বিরোধী হিংসার স্মৃতি উস্কে দিল বিজেপি


যদিও প্রধানমন্ত্রী থেমে থাকেননি। এ বার দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে ফের রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে সওয়াল করেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর অভিযোগ, ওই সময় দেশের একমাত্র রণতরী আইএনএস বিরাট-কে ব্যক্তিগত সফরে ব্যবহার করেছিলেন তিনি। এমনকি নৌসেনাকেও ব্যবহার করেন তিনি। যদিও মোদীর এই অভিযোগ খারিজ করে দেন ভাইস অ্যাডমিরাল বিনোদ পাসরিচা। ওই জাহাজের দায়িত্বে পাসরিচা জানান, আইএনএস বিরাট-কে ছুটি কাটানোর জন্য ব্যবহার করেননি রাজীব গান্ধী। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে বহাল ছিল নৌসেনা। প্রাক্তন অ্যাডমিরালের দাবি, রাজীব ত্রিবান্দ্রম থেকে কপ্টারে এসেছিলেন আইএনএস বিরাট-এ। লাক্ষাদ্বীপের ৩টি দ্বীপ ঘুরে দেখেন এবং বেশ কয়েকটি বৈঠকও করেন রাজীব।