নিজস্ব প্রতিবেদন: সরকারি বাসে যাত্রীদের টিকিট কাটেন। তার ফাঁকেই চলছিল UPSC সিবিল সার্ভিসের প্রস্তুতি। ৫ ঘণ্টার প্রস্তুতিতেই মেইনস পরীক্ষায় পাস করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বেঙ্গালুরুর সরকারি পরিবহনের কনডাকটর মধু এনসি। এখন অপেক্ষা ২৫ মার্চের ইন্টারভিউয়ের। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

জানুয়ারি ফল বেরিয়েছে UPSC মেইনসের। রোল নম্বর মেলাতে গিয়ে চমকে উঠেছিলেন মধু এনসি। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি। ঠিক দেখছেন তো! ইউপিএসসি-র কৃতকার্যের তালিকায় নাম থাকা মানে বিরাট সাফল্য। তার উপরে পরিবারে প্রথম স্কুলে গিয়েছিলেন মধুই। তখন আনন্দের মাত্রাটা আরও বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। ছেলের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মা-ও। 


গতবছর জুনে ইউপিএসসি প্রিলিমিনারিতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন BMTC-র বাস কনডাকটর ২৯ বছরের মধু এনসি। অক্টোবরে পাস করেন। এরপর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন মেইনসের। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ভাষা, সাধারণজ্ঞান, অঙ্ক ও রচনা লেখা ইত্যাদি নিয়ে শুরু হয় তাঁর প্রস্তুতি।  রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বেছে নিয়েছিলেন মধু। প্রিলিমসে কানাড়া ভাষায় পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তবে মেইনসে ইংরেজিতেই দেন মধু এনসি। 


দিনে ৮ ঘণ্টা কাটে খাকি পোশাকে। সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা। এমন কষ্টসাধ্য কাজ করে কীভাবে UPSC-র মতো কঠিন পরীক্ষায় পাস করলেন? বাড়িতে ৫ ঘণ্টা চলত পড়াশুনো। প্রতি সপ্তাহে ২ ঘণ্টা সহযোগিতা করতেন বেঙ্গালোর মেট্রোপলিটান ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেকটর আইএএস অফিসার সি সিক্ষা। মধুর কথায়,''উনি আমায় সবসময় সাহায্য করেছেন। কীভাবে লিখতে হবে সেটাও বলে দিয়েছিলেন। এখন ইন্টারভিউয়ের জন্য উনি আমাকে তৈরি করছেন।''  


অথচ ২০১৪ সালে কর্ণাটকের প্রশাসনিক পরিষেবা (Karnataka Administrative Services) পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিলেন মধু এনসি। কিন্তু হতাশ হননি। বরং তাঁর জেদ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৮ সালে ইউপিএসসি-তেও  আসে হতাশা। অধ্যবসায় থাকলে জীবনে কঠিন পরিস্থিতিতেও যে সাফল্য আসতে বাধ্য তা দেখিয়ে দিয়েছেন মধু। তাঁর কথায়,''জীবনে বড় কিছু করতে চেয়েছিলাম। পরিবারকে চালাতে কম বয়সে কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু প্রতিদিন ৫ ঘণ্টা নিয়ম করে পড়াশুনো করেছি। ভোর ৪টেয় উঠে পড়তে বসেছি।''    


ছোট শহরের বাসিন্দা মধু মাত্র ১৯ বছর বয়স থেকে কনডাকটরের কাজ শুরু করেন। কাজ করতে করতেই দূরশিক্ষায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাস করেন। মধু এনসি বলেন,''ইউপিএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে কিছুই বোঝেন না আমার মা-বাবা। তবে তাঁরা খুশি। পরিবারের আমিই প্রথম স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছি।''           


আরও পড়ুন- শাহিনবাগ, পার্কসার্কাসে এত ঠান্ডায় কেউ মরেও না! বিতর্কিত মন্তব্য দিলীপের