নিজস্ব প্রতিবেদন: নিত্য দিন জলের সঙ্গে বাস। মাঝ সমুদ্র, উথল ঢেউ দেখে বুক ডরায় না তাঁদের। কেরল যখন বন্যায় ভাসল, প্রথম তাঁরাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। নিজেদের ‘রুগ্ন’ নৌকা ভাসিয়ে দেয় দুর্গতদের প্রাণ বাঁচাতে। সপ্তাহভর ভয়াবহ দুর্যোগ কাটিয়ে কেরল যখন নিজের ছন্দে ফিরছে, তাঁরা তখন নীরবে ফিরে গিয়েছে নিজেদের ‘অবহেলিত’ ডেরায়। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তবে, তাঁদের একটাই প্রশ্ন, প্রশাসনও মুখ ফিরিয়ে দেখুক এবার?


বিধ্বস্ত বন্যায় সেনা, বায়ু সেনা এবং উপকূল রক্ষীদের সঙ্গে সমান পাল্লা দিয়ে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন কেরলের মত্সজীবীরা। প্রায় দেড়শো জন মত্সজীবী প্রত্যন্ত এলাকায় দিনরাত এক করে দুর্গতদের  উদ্ধার করেছেন। তাদের এতটুকু অসুবিধা যাতে না হয়, তার জন্য কেউ আবার নিজের পিঠও পেতে দিয়েছেন। তাঁর পিঠে উপর পা দিয়ে নৌকায় উঠতে দেখা যায় দুর্গতদের। ৫৬ বছর বয়সী মত্সজীবী মাইকেল সলোমন বলেন, “ছোটো থেকেই সমুদ্রে কাটিয়েছি, তাই এই জলে ডরাই না।” নৌকায় ১৮০ কিলোমিটার যাত্রা করে চেঙ্গানুর পৌঁছন তাঁরা। তবে মাঝ সমুদ্রের ঢেউয়ের থেকে এখানে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। চোখের সামনে ভেসে বেড়াচ্ছে লাশ। কোনওটা মানুষের, কোনওটা আধ খাওয়া পশুর। তাদের পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গিয়েছে তাঁরা। যেখানে জীবনের সন্ধান পেয়েছেন, সেখানেই নিজেদের জীবন বাজি রেখে দুর্গতদের নৌকায় তুলে নিয়েছেন। ৬২ বছর বয়সী বৃদ্ধ রবিন্দ্রন আচারির কথায়, “ওরা দেবদূতের মতো এসে আমাদের বাঁচিয়েছে।”


আরও পড়ুন- রাহুলের আইসিস মন্তব্যে ব্যাখ্যা চাইল বিজেপি



মত্সজীবীদের এ হেন সাহসিকতায় প্রশংসা করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তাঁদের মাথা পিছু ৩০০০ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু অর্থ বিনিময়ে এই আত্মত্যাগকে ছোটো করতে চান না তাঁরা। রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে মত্সজীবীর সংগঠন। তাঁদের এখন একটাই আর্জি, এ বার মত্সজীবীদের দিকে ফিরে তাকাক সরকার। মত্সজীবীদের দুরবস্থা নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করার অনুরোধ জানান সলোমন। তাঁর অভিযোগ, “বোটগুলির অবস্থা ভীষণ শোচনীয়। এত দিন তো আমাদের দিকে ফিরে তাকায়নি কোনও সরকার। বোটগুলি মেরামতির প্রতিশ্রুতি দিলে, এটাই হবে আমাদের সেরা প্রাপ্য।”



আরও পড়ুন- জাতীয় নায়ক! অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে উদ্ধারের বিবরণ দিলেন কমান্ডার বর্মা


তবে, কেরলের মত্সজীবীদের  তাদের নিজের মতো করে সম্মান জানিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। নেটিজেনরা বলেছে, আর তাঁদের ‘ফিশারম্যান’ বলা হবে না, তাঁরাই  এ দেশের সুপারম্যান।