নিজস্ব প্রতিবেদন: ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে ফের এক শরিকের তোপের মুখে মোদী সরকার। আর এই শরিক যে সে নয়, বিহারের লোক জনশক্তি পার্টি। রাজনীতির ময়দানে 'আবহাওয়া বিশারদ' হিসেবে যাঁর খ্যাতি রয়েছে। মোদী সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন এলজেপি-র সাংসদ তথা রামবিলাসপুত্র চিরাগ পাসোয়ান। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ''তপশিলি জাতি-উপজাতি আইনের পুরনো বিধি ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য অর্ডিন্যান্স আনুক কেন্দ্রীয় সরকার। ৭ অগস্ট লোকসভার অধিবেশনে বিল পাশ করাক''। এই দাবি না মানলে ৯ অগস্ট থেকে দলিত বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চিরাগ। তাঁর ঘোষণা, ২ এপ্রিলের থেকে আগ্রাসী বিক্ষোভ দেখাবেন দলিতরা। চিরাগ পাসোয়ানের এহেন হুঁশিয়ারির পর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে, তাহলে কি আবার হাওয়া কোনদিকে বইছে তা ধরে ফেলেছেন রামবিলাস পাসোয়ান?


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কেন্দ্রীয়মন্ত্রীর পুত্র চিরাগ পাসোয়ানের কথায়, ''তপশিলি জাতি ও উপজাতির মানুষদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এনডিএ সরকার। ২০ মার্চ তপশিলি জাতি উপজাতি আইনের বিধি শিথিল করে সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ এড়াতে এখনও অর্ডিন্যান্স জারি করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। ওই নির্দেশ দিয়েছেন যে বিচারপতি, সেই এ কে গোয়েলকে জাতীয় পরিবেশ আদালতের চেয়ারম্যান করা হয়েছে''।  


মোদী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে চিরাগ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ''আমরা সকলেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছি। আগের আইন ফিরিয়ে আনতে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। ২ এপ্রিল গোটা দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। একই রকম বিক্ষোভ এবার ৯ অগস্ট দেখানো হবে। আমরা চাই সরকার অর্ডিন্যান্স করে আগের বিধি পুনরায় বলবত্ করুক সরকার। নচেত্ রাস্তায় নামবে দলিত সেনা''। এর পাশাপাশি ৯ অগস্টের মধ্যে জাতীয় পরিবেশ আদালতের চেয়ারম্যানের পদ থেকে একে গোয়েলের অপসারণের দাবিও করেছেন চিরাগ। তাঁর কথায়,''একে গোয়েলকে ওই পদে বসিয়ে পুরস্কৃত করার বার্তা দেওয়া হয়েছে''। 


চিরাগ পাসোয়ানের এহেন হুঁশিয়ারির নেপথ্যে সুদূরপ্রসারী রাজনীতির ছায়া দেখতে পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। রাজনীতিতে সঠিক সময়ে শিবির বদলে রামবিলাসের জুড়ি মেলা ভার। ১৯৯৬ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সব কটি জোটে সামিল হওয়ার রেকর্ড দখলে রেখেছেন 'হাওয়া মোরগ' রামবিলাস পাসোয়ান। কখনও ইউনাইটেড ফ্রন্ট ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) আবার কখনও ইউনাইটেড প্রোগেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) জোটের অংশ হয়েছেন রামবিলাস। ৫ জন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতেও ঠাঁই পেয়েছেন। সেই রামবিলাসের ছেলেই এখন মোদী বিরোধিতায় মাঠে নেমে পড়েছেন। তাহলে কি আবার হাওয়ার দিকনির্ণয় করে ফেলেছেন রামবিলাস? এবার কি এনডিএ ছেড়ে মহাজোটের 'অনুকূল' স্রোতে ভেসে যাবেন? জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। 
 
বিহারে ইতিমধ্যেই উল্টো সুর গাইতে শুরু করে দিয়েছেন নীতীশ কুমার। ২০১৯ সালে বিজেপির সঙ্গে জোটের ঘোষণা এখনও করেননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। পটনায় গিয়ে নীতীশের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন অমিত শাহ। তবে মেলেনি কোনও সমাধানসূত্র। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির উপরে চাপ বাড়িয়ে বেশি আসনে লড়াই করার ছক কষছে জেডিইউ। আরএলএসপি-র উপেন্দ্র কুশওয়া মহাজোটে যোগ দিতে পারেন বলে জোর খবর। এবার মোদী বিরোধিতায় নামল এলজেপি। ফলে ২০১৯ সাল যত এগিয়ে আসছে ততই বিজেপির উপরে শরিকি চাপ বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে শরিকদের সঙ্গে নিয়ে চলাই মোদী-শাহের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। 


আরও পড়ুন-