ইউপিএ জমানার চপার দুর্নীতির মামলায় মিশেলের আইনজীবী কংগ্রেসের যুব নেতা
যে ক্রিশ্চিয়ান মিশেলের সঙ্গে ইউপিএ জমানার দুর্নীতির যোগ রয়েছে, তাঁর হয়েই মামলা লড়ছেন কংগ্রেস নেতা, এনিয়ে ইতিমধ্যেই উঠেছে প্রশ্ন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: যুব কংগ্রেসের আইনি বিভাগের জাতীয় অধিকর্তাই লড়ছেন ইউপিএ জমানায় চপার দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ক্রিশ্চিয়ান মিশেলের মামলা। আর তা নিজে মুখেই স্বীকার করেলন অলজো কে জোসেফ। তবে তাঁর সাফাই, এর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই। পেশাদারি আইনজীবী হিসেবেই মামলা লড়ছেন।
এদিন সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, কংগ্রেসের মহাসচিব দীপক বাবরিয়ার সঙ্গে কথা বলছেন মিশেলের আইনজীবী অলজো কে জোসেফ। ক্যামেরা দেখে ছবি তুলতে বারণও করেন তিনি। পরে জোসেফ বলেন, ''ওকালতি আমার পেশা। পেশাদার হিসেবেই ওনার মামলা লড়ছি। আইনজীবীর দায়িত্বই পালন করছি। এর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই''।
যে ক্রিশ্চিয়ান মিশেলের সঙ্গে ইউপিএ জমানার দুর্নীতির যোগ রয়েছে, তাঁর হয়েই মামলা লড়ছেন কংগ্রেস নেতা, এনিয়ে ইতিমধ্যেই উঠেছে প্রশ্ন। জোসেফের দাবি, ''পেশার সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই। দুবাইয়ে এক বন্ধুর মাধ্যমে ইটালির এক আইনজীবী আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনিই মামলাটি লড়ার জন্য অনুরোধ করেন। তাই তাঁকে সহযোগিতা করছি''। কংগ্রেসে কী পদে রয়েছেন তিনি? অজলো কে জোসেফের জবাব,''আমি ভারতীয় যুব কংগ্রেসের আইনি বিভাগের প্রধান''।
ইউপিএ জমানায় ১২টি ভিভিআইপি চপার কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ৩৬০০ কোটি টাকায় অগাস্তা ওয়েস্টল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছিলেন ক্রিশ্চিয়ান জেমস মিশেল। মঙ্গলবার দুবাই থেকে তাঁকে প্রত্যর্পণ করেছে ভারত সরকার। এদিন মিশেলকে পেশ করা হয় বিশেষ সিবিআই আদালতে। তাঁকে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক। ক্রিশ্চিয়ান মিশেলের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।
কে এই ক্রিশ্চিয়ান মিশেল?
সিবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, আটের দশক থেকে অগাস্তা ওয়েস্টল্যান্ড কোম্পানির পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন মিশেল। এর আগে তাঁর বাবাও ভারতীয় উপমহাদেশে একই পদে কাজ করতেন। নিয়মিত ভারতে আসা-যাওয়া করতেন করতেন মিশেল। বায়ুসেনা ও প্রতিরক্ষামন্ত্রকের একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ডকে বরাত দেওয়ার জন্য একাধিক আধিকারিককে ঘুষ দিয়েছিলেন মিশেল। ২০১২ সালে তাঁর ব্যাপারে জানতে পারেন তদন্তকারীরা।
২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয় মিশেলের বিরুদ্ধে। গতবছর চার্জশিট দায়ের করে সিবিআই। সিবিআই আদালতের পরোয়ানার ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে রেড কর্ণার নোটিস জারি করে ইন্টারপোল। ২০১৭ সালে দুবাইয়ে গ্রেফতার হন ক্রিশ্চিয়ান মিশেল।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সরকারের কাছ থেকে মিশেলের প্রত্যর্পণ চায় ভারত সরকার। কিন্তু তা থেকে রেহাই পেতে দুবাই আদালতে লড়াই চালিয়ে যান মিশেলের আইনজীবীরা। কিন্তু আদালত সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি। এরপরই মঙ্গলবার ভারতে আনা হয় কিংপিন মিশলকে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাঘববোয়ালের নাম উঠে আসতে পারে বলে মনে করছে সিবিআই।
আরও পড়ুন- বিগ শপিং ডেজ-এ জলের দরে স্মার্টফোন বেচছে ফ্লিপকার্ট