Mahua Moitra: `বস্ত্রহরণ ওরা শুরু করেছে, এবার মহাভারতের যুদ্ধ দেখবে,` জবাব কনফিডেন্ট মহুয়ার!
৫০০ পাতার রিপোর্টে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করেছে এথিক্স কমিটি। রিপোর্ট উল্লেখ, `লগ-ইন ও পাসওয়ার্ড শেয়ার করেছিলেন মহুয়া। এরপরই দেশের বাইরে থেকে পোর্টালে লগইন করা হয়।` কমিটির মতে, `এটা স্রেফ অনৈতিক নয়, এই কাজ সংসদের অবমাননা।`
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আজই খারিজ হতে পারে তাঁর সাংসদ পদ। তবে বিতর্কের মাঝেও লোকসভায় ঢোকার সময় বেশ 'আত্মবিশ্বাসী' মহুয়া মৈত্র। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁকে বলতে শোনা গেল, "লাভলি, দেখব, কী হয়। মা দুর্গা এসে গিয়েছে। এবার দেখবেন। বস্ত্রহরণের খেলা ওরা শুরু করেছে। এবার মহাভারতের যুদ্ধ দেখবে।" পাশাপাশি, কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার লাইন ধার করেও তাঁকে বলতে শোনা যায়, "অসত্যের কাছে কভু নত নাহি কর শির। ভয়ে কাঁপে কাপুরুষ, লড়ে যায় বীর।" ঘুষের বদলে প্রশ্নকাণ্ডে আজ লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশনে মহুয়ার সদস্যপদ খারিজের দাবিতে প্রস্তাব আনবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তারপরই স্পিকার ওম বিড়লা সিদ্ধান্ত নেবেন যে কোন পথে এগোবে লোকসভা।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই জানা যায় যে, শুক্রবার প্রথমে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ করা হবে। স্পিকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে রিপোর্ট। তারপর সংসদে মহুয়া মৈত্রের সদস্যপদ খারিজের প্রস্তাব আনবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। শুধু তাই নয়, আধঘণ্টার মধ্যেই সেই প্রস্তাব করাতে চায় সরকার! সংসদের এখন শীতকালীন অধিবেশন চলছে। গতকাল তৃণমূলের লোকসভা নেতা, সাংসদ সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্যায়ও জানান, 'আমি যখন আজকে মাননীয় স্পিকারের সঙ্গে কথা বলতে গেলাম, উনি জানালেন যে মহুয়া মৈত্রের বিষয়টি কালকে আসবে। এথিক্স কমিটির রিপোর্টের সঙ্গে প্রস্তাব আসবে। আমি তখন বলি, মহুয়া মৈত্রকে বলতে দিতে হবে। আলোচনায় রাখতে হবে বিষয়টা। উনি বলেন, আমি কিছু সময় দেব। আমি বলি, কিছু সময়ে হবে না। ইন্ডিয়া জোটের প্রতিটি দলই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছে। তারা তো বলতে চাইবে। বললেন, আপনার বক্তব্য শুনে রাখলাম। আমি আধঘন্টার মধ্যে বিষয়টা নিষ্পত্তি করতে চাই।'
উল্লেখ্য, 'টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন' বিতর্কেই বিপাকে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ৫০০ পাতার রিপোর্টে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করেছে এথিক্স কমিটি। লোকসভার পোর্টালে প্রত্যেক সাংসদের আলাদা লগ-ইন ও পাসওয়ার্ড থাকে। এখন মহুয়াার বিরুদ্ধে অভিযোগ, এথিক্স কমিটি রিপোর্টেও উল্লেখ, 'সেই লগ-ইন ও পাসওয়ার্ড শেয়ার করেছিলেন মহুয়া। এরপরই দেশের বাইরে থেকে পোর্টালে লগইন করা হয়।' কমিটির মতে, 'এটা স্রেফ অনৈতিক নয়, এই কাজ সংসদের অবমাননা।' কমিটির আরও সুপারিশ, 'টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন বিতর্কে কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক তদন্ত করা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের।'
প্রসঙ্গত, ৩১ অক্টোবর মহুয়াকে প্রথমবার ডেকে পাঠিয়েছিল এথিক্স কমিটি। তখন যাননি। চিঠি লিখে তিনি জানান, সংসদীয় এলাকায় বিজয়া সম্মিলনী রয়েছে। ৪ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ব্যস্ত থাকবেন। ৫ নভেম্বরের পর যে কোনও দিন, যে কোনও সময়ে তিনি হাজিরা দিতে পারবেন। তার পর ফের তাঁকে চিঠি পাঠিয়ে ২ নভেম্বর ডেকে পাঠানো হয়। যদিও ২ নভেম্বর মাঝ-পথেই বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেন ক্ষুব্ধ কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে মেজাজ হারিয়ে মহুয়াকে বলতে শোনা যায়, 'এটা কী ধরনের বৈঠক? ওঁরা নোংরা প্রশ্ন করছেন। বাজে প্রশ্ন করছেন।'
এমনকি, এথিক্স কমিটিতে মৌখিক ভাবে ‘বস্ত্রহরণ’-এর তোপও দাগেন মহুয়া! লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠিতে লেখেন, যেভাবে প্রশ্ন করেছেন এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান, মর্যাদাহানিকর। চিঠিতে মহুয়া আরও দাবি করেন, কমিটি আরও ৫ সদস্য আপত্তি করেছিলেন। কিন্তু তাতেও কর্ণপাত করেননি এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকর। সূত্রের খবর, এথিক্স কমিটির বৈঠকে রাতে কোন হোটেলে ছিলেন? কার সঙ্গে কথা বলেছেন? এ ধরনের ‘ব্যক্তিগত’ বিষয়েও প্রশ্নও করা হয় মহুয়াকে। উল্লেখ্য, এই বিতর্কে মহুয়ার পাশেই দাঁড়িয়েছে দল তৃণমূল কংগ্রেস। বিতর্কের মধ্যেই কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে মহুয়াকে। ওদিকে মহুয়ার পাশে অন্য বিরোধী দলগুলিও। এথিক্স কমিটির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)