জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রেলের অত্যাধুনিক কবচ (Kavach) প্রযুক্তি নিয়ে। কোথায় গেল কবচ? রেলমন্ত্রী (Railway Minister) কবচের ঘোষণা করে প্রযুক্তির (Technology) ট্রেনে চেপে পরীক্ষামূলক ভ্রমণ করেছিলেন। একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছিল গত বছর চার মার্চ কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী দেখাচ্ছেন দুটি ট্রেন (Train) মুখোমুখি হলে কীভাবে দুর্ঘটনা (Accident) এড়ানো যাবে। এই প্রযুক্তির নাম দেওয়া হয় কবচ। এদিকে ওড়িশার বালেশ্বরে বাহানাগা বাজার স্টেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস-সহ তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। মৃতের সংখ্যা ২৬০ ছাড়িয়ে তিনশোর দিকে এগোচ্ছে। আহতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে। এরই মধ্যে সামনে এল রেলের বিরাট গাফিলতি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অ্য়ান্টি কলিশন ডিভাইস ছিল না। তাই এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে এমনই অভিযোগ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শনিবার সকালে ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানাগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতালও পরিদর্শন করেছেন তিনি। তারপরই রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।


একসময় রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসময় দুর্ঘটনা এড়াতে একাধিক ট্রেনে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস বসানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। যাতে একই লাইনে একাধিক ট্রেন চলে না আসে। কিন্তু এই দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনগুলিতে অ্য়ান্টি কলিশন ডিভাইস ছিল না। তাঁর কথায়, “অ্য়ান্টি কলিশন ডিভাইস ছিল না। তাই এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার পিছনে কিছু একটা কারণ রয়েছে। ভাল করে তদন্ত করে দেখা উচিত।”



আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident: LHB কামরা ছিল না বলেই কি দেশলাইয়ের বাক্সের মতো উড়ে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস?


আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident: মৃত্যুপুরী বালেশ্বর! দুর্ঘটনায় আহতদের বাঁচাতে স্থানীয়দের রক্তদান


২০২২ সালের ৪ মার্চ রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে দুর্ঘটনা প্রতিরোধী কবচ সিস্টেমের কথা ঘোষণা করেছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি নিজে একটি ইঞ্জিনে ছিলেন। একই লাইনে অপর একটি ইঞ্জিন ছিল। ওই ইঞ্জিন থেকে ঠিক ৩৮০ মিটার দূরত্বে আপনাআপনিই অপর ইঞ্জিনটি থেমে যায়। বৈষ্ণব কবচ-বন্দনায় উচ্ছ্বসিত হন।


বালেশ্বরে যে লাইনে দুর্ঘটনাটি ঘটে সেখানে কবচ সিস্টেম ছিল না বলে মেনে নিয়েছে রেল। ফলে এই ব্যবস্থা থাকলে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। রেলমন্ত্রী বৈষ্ণব ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান পাশে দাঁড়িয়ে। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী তথা দেশের প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বিষয়ে সরব হন।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন অ্যান্টি কলিসন ডিভাইস চালু করেছিলেন। এখন রেলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। রেল বাজেট আলাদা করে হয় না। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবিও জানান তিনি। এই বিষয়গুলি তিনি তুলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতে।


রেল সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় মালগাড়িটি খড়্গপুর থেকে ছাড়ে। তার ১৩ মিনিট পরে খড়্গপুর স্টেশন ছাড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। মালগাড়ি এবং করমণ্ডল এক্সপ্রেস একই লাইনে চলছিল ১৩ মিনিটের ব্যবধানে। বালেশ্বর স্টেশন ছাড়িয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার যাওয়ার পরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রাথমিক অনুমান, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চালক যে ওই ১৩ মিনিটের গতির ব্যবধান কমিয়ে ফেলেছেন, তা তিনি বুঝতে পারেননি। তার কারণ সিগন্যালের ত্রুটি হতে পারে। হতে পারে সিগন্যাল দেওয়া হলেও চালক তা খেয়াল করেননি। অথবা একই লাইনে যে মালগাড়িটি রয়েছে, তা তিনি খেয়াল করেননি।


তবে দুর্ঘটনার কোনও কারণই নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। বিভাগীয় তদন্ত শুরু হলে এর সঠিক কারণ জানা যাবে। আপাতত অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে হতাহতদের উদ্ধারে এবং ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে লাইনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উপর। কারণ, ওই দুর্ঘটনার ফলে হাওড়া থেকে দক্ষিণ ভারতগামী সমস্ত ট্রেন শুক্রবার বাতিল করতে হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে শনিবারের কিছু ট্রেনও। খড়্গপুর থেকেও ওড়িশাগামী কিছু ট্রেন বাতিল হয়েছে।


দুর্ঘটনার পরই একাধিক হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। হাওড়ার হেল্পলাইন নম্বর - ০৩৩ ২৬৩৮২২১৭, খড়গপুরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮৯৭২০৭৩৯২৫, ৯৩৩২৩৯২৩৩৯, বালেশ্বরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮২৪৯৫৯১৫৫৯, ৭৯৭৮৪১৮৩২২, শালিমারের হেল্পলাইন নম্বর - ৯৯০৩৩৭০৭৪৬, চেন্নাইয়ের হেল্পলাইন নম্বর - ০৪৪ ২৫৩৩০৯৫২/০৪৪-২৫৩৩০৯৫৩/০৪৪-২৫৩৫৪৭৭১, ভদ্রক- ৮৪৫৫৮৮৯৯০০, কেওনঝড় রোড- ৮৪৫৫৮৮৯৯০৬, কটক- ৮৪৫৫৮৮৯৯১৭, ভুবনেশ্বর- ৮৪৫৫৮৮৯৯২২, খুরদা রোড- ৬৩৭০১০৮০৪৬। 



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)