জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ভেঙে, দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একাধিক বগি। হতাহত হয়েছেন বহু যাত্রী। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন সকাল ৮টা নাগাদ। তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সকাল ৯টায় রেলের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হল শনিবার সকাল পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ২৩৮ জন। আহতের সংখ্যা ৬৫০। রেলের তরফে প্রথম বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল মৃতের সংখ্যা ৩০। পরে শনিবার ভোর ৫টা নাগাদ জানানো হয় মৃতের সংখ্যা ৩৮। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃতের সংখ্যা ঘোষণা করা হল ২৩৮। অন্য দিকে ওড়িশা সরকারকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছিল, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনেরও বেশি। এদিকে সূত্রের খবর দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের কামরাগুলো, চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে তৈরি পুরনো কোচ। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, এক্ষেত্রে লিঙ্ক হফম্যান বুশ বা LHB কামরা থাকলে কি ক্ষয়ক্ষতি আরও কম হত? সাধারণ কামরার থেকে LHB কামরা বেশ কয়েকটি মাপকাঠিতে অনেক উন্নত। LHB কামরার প্রধান বৈশিষ্ট্য , ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়লে এটি উল্টে যায় না। দু’টি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে সাধারণ কামরা সজোরে ছিটকে পড়ে এবং উল্টে যায়। কিন্তু, জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি LHB কামরার ক্ষেত্রে এই আশঙ্কা নেই বললেই চলে। সঙ্গে থাকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি নিউম্যাটিক ব্রেক। ট্রেন তীব্র গতিতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলেও, এর মাধ্যমে আচমকা গতিবেগ কমে যাওয়াকে অনেকটাই সামাল দেওয়া যায়। 


যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য -সহ সার্বিক বিচারেও সাধারণ কামরার তুলনায় LHB কামরা অনেক এগিয়ে। এলএইচবি কামরার ভিতরের অংশ অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি বলে অপেক্ষাকৃত হালকা, বাকি অংশ স্টেনলেস স্টিলের। ঝাঁকুনি কম হওয়ায় সফরের স্বাচ্ছন্দ্য অনেক বেশি। সাধারণ কামরার মতো কানে তালা লাগানো আওয়াজ হয় না। এই কামরা থাকলে ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। যেমন গতি বাড়ে দ্রুত, তেমনই কমতেও পারে। 


আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident, Mamata Banerjee: করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় কী উদ্যোগ নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?


আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident: ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা, বিপর্যস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন বিরাট, শেহওয়াগরা



২০০০ থেকেই এই LHB কামরা ব্যবহার করছে ভারতীয় রেল। প্রথমে শতাব্দী এক্সপ্রেসের জন্য ২৪টি কামরা জার্মানি থেকে আমদানি করা হয়। পরে প্রযুক্তি আমদানি করে পাঞ্জাবের কাপুরথালার রেল কোচ কারখানায় ওই কামরা তৈরি করা হচ্ছে। শতাব্দী ও রাজধানী এক্সপ্রেস ছাড়াও একগুচ্ছ ট্রেনে এখন এলএইচবি কামরা ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এখানেই প্রশ্ন,  করমণ্ডল এক্সপ্রেসের মতো এমন প্রথমসারির দুরপাল্লার ট্রেনে কেন লিঙ্ক হফম্যান বুশ বা LHB কামরা ব্যবহার করা হল না? আএর স্বভাবতই এই দুর্ঘটনার পর রেলের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে গেল।  


শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ হাওড়ার অদূরে শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চার ঘণ্টা পরে ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি।


দুর্ঘটনা কী করে ঘটেছে, তার একাধিক বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে। কোনও কারণই নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। বিভাগীয় তদন্ত শুরু হলে এর সঠিক কারণ জানা যাবে। আপাতত অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে হতাহতদের উদ্ধারে এবং ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে লাইনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উপর। কারণ, ওই দুর্ঘটনার ফলে হাওড়া থেকে দক্ষিণ ভারতগামী সমস্ত ট্রেন শুক্রবার বাতিল করতে হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে শনিবারের কিছু ট্রেনও। খড়্গপুর থেকেও ওড়িশাগামী কিছু ট্রেন বাতিল হয়েছে।


দুর্ঘটনার পরই একাধিক হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। হাওড়ার হেল্পলাইন নম্বর - ০৩৩ ২৬৩৮২২১৭, খড়গপুরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮৯৭২০৭৩৯২৫, ৯৩৩২৩৯২৩৩৯, বালেশ্বরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮২৪৯৫৯১৫৫৯, ৭৯৭৮৪১৮৩২২, শালিমারের হেল্পলাইন নম্বর - ৯৯০৩৩৭০৭৪৬, চেন্নাইয়ের হেল্পলাইন নম্বর - ০৪৪ ২৫৩৩০৯৫২/০৪৪-২৫৩৩০৯৫৩/০৪৪-২৫৩৫৪৭৭১, ভদ্রক- ৮৪৫৫৮৮৯৯০০, কেওনঝড় রোড- ৮৪৫৫৮৮৯৯০৬, কটক- ৮৪৫৫৮৮৯৯১৭, ভুবনেশ্বর- ৮৪৫৫৮৮৯৯২২, খুরদা রোড- ৬৩৭০১০৮০৪৬। 



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)